`ËK MÖnY (Adopting the Law)
৫৪. আত্মীয়দের মধ্য হতে দত্তক গ্রহণঃ
কোন দম্পতির যখন কোন মেয়ে সন্তান থাকে না অথবা মেয়ে সন্তান থাকলেও সেটি নক্না নির্বাচনের উপযোগি নয়, তখন সেই দম্পতি তাদের নিকটতম আত্মীয়দের নিকট হতে দত্তক গ্রহণ করতে পারে। সেক্ষেত্রে আপন বোনের কন্যা সন্তানকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। তবে এর ব্যতিক্রমও করা চলে।
৫৫. অন্য মাহারী হতে দত্তক গ্রহণঃ
দত্তক গ্রহণেচ্ছুক মা যদি আপন আত্মীয় বা নিজ মাহারীর মধ্য হতে দত্তক গ্রহণ উপযোগি কন্যা সন্তান না পান, তাহলে ইচ্ছা করলে তিনি অন্য মাহারী হতেও দত্তক গ্রহণ করতে পারেন।
৫৬. অজ্ঞাত পরিচয় পিতামাতা হতে দত্তক গ্রহণঃ
হাসপাতাল অথবা শিশু সদন হতে নবজাতক শিশু কন্যাকে দত্তক গ্রহণ করার বিধানও গারো সমাজে বিদ্যমান।
৫৭. দত্তক পুত্র-কন্যাদের সামাজিক অধিকারঃ
দত্তক পুত্র-কন্যাগণ মা-বাবার প্রকৃত সন্তানের মতই পারিবারিক এবং সামাজিক মর্যাদা ভোগ করে থাকে। সেই সঙ্গে তারা পারিবারিক সম্পত্তির উত্তরাধিকারীত্বও লাভ করে অথবা অন্যায় অপরাধের জন্য উত্তরাধিকারীত্বের অধিকার হারায়।
৫৮. ভাবী আকিং নক্মা হিসাবে নির্বাচনযোগ্য ছেলে দত্তক গ্রহণঃ
কোন অপুত্রক আকিং নক্মা এবং তার স্ত্রী যখন তাদের উত্তরাধিকারী হিসাবে কাউকে দত্তক গ্রহণ করতে চান সেক্ষেত্রে ঐ আকিং নক্মা দম্পতির প্রাথমিক দায়িত্ব হবে সঠিকভাবে যাচাই করে দেখা এবং নক্মার স্ত্রীর মাহারীর লোকজনের মতামত গ্রহণ করা যাতে ভবিষ্যতে কোনরকম প্রশ্ন না আসে এবং দত্তক গ্রহণের বৈধ্যতায় চ্যালেঞ্জ না আসে।
weevn we‡”Q`
৫৯. পারস্পরিক সম্মতিক্রমে বিবাহ বিচ্ছেদঃ
যদি দেখা যায় নানা কারণে দম্পতিযুগলের একত্রে বসবাস অসম্ভব প্রায় হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখন পারস্পরিক সম্মতিক্রমে তারা বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে পারে। কিন্তু এখানে যদি কোন পক্ষ দোষী প্রমাণিত হয় তবে সে ৩,০০০.০০ (তিন হাজার) টাকা অর্থদন্ড প্রদানে বাধ্য থাকবে।
৬০. দম্পতিযুগলের কোন পক্ষ যদি বন্ধ্যা কিংবা পুরুষত্বহীন বলে প্রমাণিত হয় তবে সেক্ষেত্রে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটানো যাবে। তবে যে পক্ষ বিবাহ বিচ্ছেদ চায় সেই পক্ষ ৩,০০০.০০(তিন হাজার) টাকা অর্থদন্ড প্রদানে বাধ্য থাকবে।
৬১. অসতী স্ত্রীঃ
অবিশ্বস্তা স্ত্রীকে প্রমাণ সাপেক্ষে ¯^vgx পরিত্যাগ করতে পারে এবং এক্ষেত্রে উক্ত অসতী স্ত্রী ¯^vgx‡K ৩,০০০.০০(তিন হাজার) টাকা অর্থদন্ড প্রদানে বাধ্য থাকবে।
৬২. দোষী পক্ষ কর্তৃক জরিমানা প্রদানঃ
পারস্পরিক সম্মতিক্রমে যদি বিবাহ বিচ্ছেদ সংঘটিত হয় তাহলে কোন পক্ষকেই জরিমানা প্রদান করতে হয়না। কিন্তু কোন পক্ষ যদি অপর পক্ষকে দোষী বলে প্রমাণিত করতে পারে তবে দোষী পক্ষ ৩,০০০.০০(তিন হাজার) টাকা অর্থদন্ড প্রদানে বাধ্য থাকবে।
৬৩. পুনর্মিলনের সুযোগ ঃ
এমন যদি দেখা যায় যে, কারণকে উপলক্ষ্য করে বিবাহ বিচ্ছেদ সংঘটিত হয়েছে, সেটি তেমন মারাত্মক কোন ব্যাপার নয় এবং দম্পতিযুগল পুনর্মিলনে আগ্রহী তবে সেক্ষেত্রে পুনর্মিলন ঘটানো সম্ভব।
৬৪. খ্রীষ্টান দম্পতি কর্তৃক বিবাহ বিচ্ছেদঃ
বিবাহ বিচ্ছেদে ইচ্ছুক দম্পতি যদি খ্রীষ্টান হন তবে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে হবে এবং এক্ষেত্রে দেশের বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত আইন প্রযোজ্য হবে। সামাজিক প্রথাগত আইনানুযায়ী এক্ষেত্রেও দোষী পক্ষকে ৩,০০০.০০(তিন হাজার) টাকা অর্থদন্ড প্রদানে বাধ্য থাকতে হবে। অবশ্য ক্যাথলিক ধর্মমতে বিশ্বাসী খ্রীষ্টানগণ এই ধারার আওতায় নহেন। মান্ডলিক আইনে ক্যাথলিক মন্ডলীতে বিবাহ বিচ্ছেদ হতে পারেনা। মান্ডলিক আইনের ১১৪১ অনুচ্ছেদ অনুসারে বৈধভাবে মন্ডলীতে বিবাহিত পুরুষ এবং মহিলা যদি একত্রে বসবাস করে এবং তাদের যদি দৈহিক মিলন হয় তবে কোন মানুষের ক্ষমতা নেই সে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে অথবা অন্য কোন কারণেও সে বিবাহ বিচ্ছেদ হতে পারেনা। শুধুমাত্র বিবাহিত দম্পতির যেকোন একজনের মৃত্যু তাদের বিবাহের বন্ধন ছিন্ন করতে পারে। (দ্রষ্টব্য: পবিত্র বাইবেলের আদিপুস্তক ২য় অধ্যায় ১৮ হতে ২৪ পদ।)
gwnjv‡`i AwaKvi
৬৫. গাম্নি নক্গিপা (মা হিসাবে সমস্ত পারিবারিক সম্পত্তির মালিক)ঃ
মায়েরাই পারিবারিক সম্পদের প্রকৃত এবং একচ্ছত্র মালিক। নক্রম,অবিবাহিত ছেলে এবং ¯^vgx তাদের ¯^vfvweK জীবনযাত্রা কালে যা কিছু আয় উপার্জন করে তৎসমুদয় পরিবারের মায়ের অধিকারে থাকবে। কোন কোন ক্ষেত্রে অভাবের সময় মা তার অবিবাহিত ছেলেকে টাকার বিনিময়ে অথবা ঋণ পরিশোধের জন্য অন্যের বাড়ীতে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দাসত্ব করতে পাঠাতে পারে।
৬৬. গাম্ রাক্খিগিপা (স্ত্রীরূপে)ঃ
স্ত্রী, যিনি পরিবারের মা, পরিবারের সমস্ত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি তার অধিকারে এবং দায়িত্বে থাকবে। পরিবারের সমস্ত সম্পত্তি এবং তার ¯^vgx পুত্র যা কিছু আয় উপার্জন করে তৎসমুদয় তারই একচ্ছত্র অধিকারে থাকবে। ¯^vgx যদিও সম্পত্তির অংশীদার হিসাবে ¯^xK…Z তথাপি সে তার স্ত্রীর মতামত ব্যতিত পরিবারের সম্পত্তি যথেচ্ছ ব্যবহার করতে পারেনা। নগদ টাকাকড়ি সমস্তই স্ত্রীর নিকট জমা থাকবে।
৬৭. গাম্ মান্রিখ্গিপা (নির্বাচিতা উত্তরাধিকারিনীরূপে)ঃ
প্রতিটি পরিবারের জন্য পরবর্তী উত্তরাধিকারিনী হিসাবে পরিবারের একট মেয়েকে নির্বাচন করা হয়। গারো ভাষায় তার পদবী নক্না। সাধারণভাবে পরিবারের কনিষ্ঠা কন্যাকেই নক্না নির্বাচন করা হয়ে থাকে এবং মা-বাবা উভয়ে পরামর্শ ও পছন্দ করেই পরিবারের জন্য নক্না নির্বাচন করে থাকে। তবে নক্না নির্বাচনে উভয়ের মধ্যে মতের অমিল দেখা দিলে মায়ের মতের উপরই বেশী গুরুত্ব প্রদান করা হয়। বিয়ের পর নক্না তার ¯^vgxmn বাপ-মায়ের বাড়ীতেই বসবাস করে এবং বাপ-মায়ের মৃত্যুর পর সম্পত্তির উত্তরাধিকারিনী হয়। নক্নাকে অবশ্য তার মাহারীর লোকজন কর্তৃক বিশেষভাবে চ্রা পান্থে কর্তৃক নির্বাচিত ছেলেকে বিয়ে করতে রাজী থাকতে হয়। ছেলেটি তার পিতার মাহারীর অন্তর্ভূক্ত হতে হবে বিশেষ করে তার পিতার ভাগ্নে হতে হবে। গারো ভাষায় উক্ত জামাইকে বলা হয় নক্রম। পরিবারের জন্য নির্বাচিত নক্না মেয়ে মাহারীর লোকজনদের নিকট হতে নিজে যেমন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকে, তেমনি মাহারীর প্রতিও তার দায়-দায়িত্ব রয়েছে। পরিবারের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি সে যেমন ভোগদখল করে তেমনি উহার সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও তার এবং পরবর্তীকালে তার উত্তরাধিকারিনীর হাতে সঠিকভাবে হস্তান্তর করে দেয়ার দায়িত্বও তার।
৬৮. দেরাগাৎগিপা (দত্তক কন্যা)ঃ
কোন দম্পত্তির কন্যা সন্তান না থাকলে স্ত্রীর মাহারীর লোকজন তাদের মাহারী হতে উক্ত দম্পতির জন্য দত্তক কন্যা প্রদান করবে এবং সেই দত্তক কন্যাই পরবর্তীতে উক্ত দম্পতির সমুদয় সম্পত্তির উত্তরাধিকারিনী হবে। মাহারীর মধ্যে যদি সেরকম কোন উপযুক্ত মেয়ে পাওয়া না যায় তবে তারা অন্য মাহারীর মেয়েকেও দত্তক হিসাবে গ্রহণ করতে পারে। এক্ষেত্রে উক্ত মেয়ের এবং তার সংশ্লিষ্ট মাহারীর পূর্ণ সম্মতি থাকতে হবে। এভাবে গৃহিত দত্তক কন্যা প্রকৃত নক্নার মতোই পরিবারের উত্তরাধিকারিনী এবং সমুদয় ক্ষমতার অধিকারী হবে।
৬৯. নক্না রাআ (স্ত্রী হিসাবে দত্তক গ্রহণ)ঃ
নক্না হিসাবে দত্তক গ্রহণ না করে জিক্গিত্তে (সহযোগি স্ত্রী) হিসেবেও গ্রহণ করা যায়। এভাবে দত্তক হিসাবে সহযোগি স্ত্রী প্রকৃত নক্নার মতোই সম্পত্তিতে পূর্ণ অধিকার জন্মাবে এবং মৃত্যুর পর বংশধরেরাও উত্তরাধিকারীত্ব লাভ করবে। এক্ষেত্রে নক্রমের জায়গায় দত্তক গ্রহণকারীই তার ¯^vgx হবে।
৭০. আগাত্তে (নক্না ব্যতিত পরিবারের অন্য মেয়েরা)ঃ
পরিবারের জন্য নির্বাচিত কন্যা সন্তান নক্না থাকলে পরিবারের অন্যান্য কন্যা সন্তানগণ পরিবারের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির কিছুই পাবেনা। নির্বাচিত নক্না যদি বিয়ের আগেই মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তবে পরিবারের জন্য অবিবাহিতা কন্যাকে নক্না নির্বাচন করা যাবে। আর পরিবারের সব ক’টি মেয়ে যদি ইতোমধ্যেই বিবাহিতা হয়ে থাকে, তবে যে মেয়েটি পিতার মাহারীভূক্ত ছেলেকে বিয়ে করেছে তাকে নক্না নির্বাচন করা যাবে এবং উক্ত মেয়ের ¯^vgx নক্রমের অধিকার পাবে। যদি এরকম নক্রমের উপযোগি কাউকে পাওয়া না যায়, তবে তাদেরই মধ্য হতে যেকোন পছন্দসই মেয়ে জামাইকে মাহারীর লোকজনের সম্মতি সাপেক্ষে নক্না নক্রম নির্বাচন করা যেতে পারে। অন্যথায় মাহারীর মধ্য হতে কোন অবিবাহিতা মেয়েকে দত্তক হিসাবে গ্রহণ করে পরিবারের নকনা নিযুক্ত করা যাবে এবং এক্ষেত্রেও মাহারীর লোকজন মূখ্য ভূমিকা পালন করবে।
৭১. অন্ সংআ (দ্বিতীয় স্ত্রী প্রদান)ঃ
প্রথম স্ত্রী মারা যাবার পর মাহারী কর্তৃক যে মেয়েটিকে বিপত্মীক ব্যক্তিটির জন্য দ্বিতীয় স্ত্রী হিসাবে প্রদান করা হবে সেও প্রথম স্ত্রীর মতোই পারিবারিক সম্পত্তির অধিকারিনী হবে। তবে প্রথম স্ত্রীর যদি কোন কন্যা সন্তান থাকে তবে তাকেই ভাবী উত্তরাধিকারিনী নিযুক্ত করতে হবে। যদি প্রথম স্ত্রীর কোন মেয়ে সন্তান না থাকে তবে দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভে উক্ত পুরুষের ঔরষজাত মেয়ে সন্তানকে ভাবী উত্তরাধিকারিনী নির্বাচন করা যাবে। কিন্তু উক্ত দ্বিতীয় স্ত্রীর যদি বর্তমান বিয়েতে কোন মেয়ে সন্তান না জন্মায় এবং সে যদি উক্ত বিয়ের পূর্বে কন্যা সন্তানসহ বিধবা হয়ে থাকে তবে মাহারীর অনুমোদনক্রমে উক্ত দ্বিতীয় স্ত্রীর পূর্ব ¯^vgxi ঔরষজাত কন্যা সন্তানকে পারিবারিক সম্পত্তির উত্তরাধিকারিনী নির্বাচন করা যাবে।
m¤úwËi AwaKvi nviv‡bv
জন্মগত অথবা দত্তক হিসাবে যারা সম্পত্তির অধিকারী নিম্নলিখিত কারণে তারা তাদের অধিকার হারাতে পারে।
৭২. মাঃ
ছেলে যখন বিয়ে করে তখন তার মা ছেলের পরবর্তী উপার্জনের উপর সমস্ত অধিকার হারাবে।
৭৩. স্ত্রীঃ
কোন স্ত্রী উপযুক্ত কারণ ছাড়াই তার বিবাহিত ¯^vgx‡K পরিত্যাগ করলে অথবা অন্য পুরুষের সঙ্গে গৃহত্যাগ করলে সে সমস্ত পারিবারিক সম্পত্তির উপর অধিকার হারাবে। এক্ষেত্রে পরিবারের নক্না অথবা পরিত্যক্ত ¯^vgxi জন্য স্ত্রীর মাহারীর লোকজন যে দ্বিতীয় স্ত্রীকে প্রদান করবে সেই উক্ত সম্পত্তির অধিকারিনী হবে। ¯^vgxi মৃত্যুর পর কেউ যদি ¯^vgxi মাহারী কর্তৃক প্রদত্ত দ্বিতীয় ¯^vgx উপযুক্ত কারণ ব্যতিত গ্রহণে অসম্মতি জ্ঞাপন করে অথবা মাহারীর বন্দোবস্তের অপেক্ষা না করে নিজের পছন্দানুযায়ী বিবাহ করে তবে সে পরিবারের সম্পত্তির অধিকার হারাবে।
৭৪. নক্না (উত্তরাধিকারিনী নির্বাচিতা কন্যা)ঃ
কোন উপযুক্ত কারণ না দর্শিয়ে কোন নক্না যদি তার জন্য স্থিরীকৃত ছেলেকে বিবাহে অসম্মতি জ্ঞাপন করে এবং অন্য কাউকে তার পছন্দানুযায়ী বিয়ে করে তবে সে উত্তরাধিকারীত্ব হারাবে। অন্যদিকে সে যদি ইচ্ছাকৃতভাবে বিয়ের পর নক্রমসহ অন্যত্র গমন করে স্থায়ীভাবে সেখানে বসবাস আরম্ভ করে তবে সে পারিবারিক সম্পত্তির উত্তরাধিকারীত্ব হারাবে। এমনকি এক্ষেত্রে তাকে শাস্তি পর্যন্তও বহন করতে হতে পারে।
৭৫. দেরাগাৎগিপা (দত্তক কন্যা)ঃ
দত্তক মা-বাবার সঙ্গে একত্রে বসবাস করা এবং তাদের একান্ত অনুগত থাকা যে কোন দত্তক কন্যার অবশ্য কর্তব্য। এক কথায় সে ঐ পরিবারেরই একান্ত আপনজন হয়ে যেতে পারে। যদি সে এর কোন ব্যতিক্রম করে তবে সে নক্নার অধিকার হারাবে এবং তাকে যেখান হতে দত্তক গ্রহণ করা হয়েছিল সেখানেই ফেরত পাঠানো হবে।
৭৬. নক্রম (উত্তরাধিকারী নির্বাচিতা কন্যার ¯^vgx)
গারোদের প্রথাগত আইনানুযায়ী কোন পুরুষ পারিবারিক সম্পত্তির অধিকারী নহে, তবে সে পরিবারের যাবতীয় সম্পদের তত্ত্বাবধায়ক হিসাবে গণ্য। কিন্তু নিম্নলিখিত কারণসমূহের জন্য সে তত্ত্বাবধায়কের অধিকারও হারাবে। যথাঃ
(ক) যদি সে গৃহত্যাগ করে।
(খ) যদি সে কোন উপযুক্ত কারণ ছাড়াই তার স্ত্রীকে পরিত্যাগ করে।
(গ) যদি সে প্রথম স্ত্রী মারা যাবার পরে স্ত্রীর মাহারী কর্তৃক পছন্দ করা দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রহণ না করে অন্য কাউকে নিজ পছন্দানুযায়ী বিয়ে করে বসে।
কোন কোন ক্ষেত্রে নক্রম তার নিজের অযোগ্যতার জন্যও পরিবারের সংসার তত্ত্বাবধানের অধিকার হারাবে। এক্ষেত্রে উভয় মাহারীর মধ্যে চুক্তির মাধ্যমে তাকে ঐ পরিবার হতে অব্যাহতি দিয়ে দেয়া হবে। অবশ্য এরকম ঘটনা খুব কমই ঘটে থাকে।
গারোদের প্রথাগত এই আইনসমূহ সমগ্র গারো সমাজে সমভাবে প্রযোজ্য ও প্রচলিত যা যুগ-যুগান্তব্যাপী আবহমানকাল হতে এ যাবত সমগ্র গারো সমাজকে তাদের সামাজিক মুল্যবোধকে অক্ষুন্ন রাখতে সহায়তা করে চলেছে। বর্ণিত প্রথাগত আইনের মূ কেন্দ্রবিন্দু যদিও ভারতের বর্তমান মেঘালয় রাজ্যে, যেখানে সিংহভাগ গারোদের বসবাস তথাপি এই আইনসমূহ বাংলাদেশে বসবাসরত গারোদের বেলাতেও সমভাবে প্রযোজ্য এবং কার্যকরভাবে প্রচলিত। ভারতে গারোদের এই প্রথাগত আইন সেখানকার সরকার কর্তৃক সমর্থিত এবং সংরক্ষিত, যা ভারত সরকারের ১৯১৪ খ্রীষ্টাব্দের ২৩শে জুন তারিখের ৯৪০নং সরকারী বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ঘোষণা করা হয়েছে। উক্ত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সমগ্র গারো সমপ্রদায়কে ১৮৬৫ খ্রীষ্টাব্দের ভারতীয় উত্তরাধিকার আইন এবং পরবর্তীকালে ১৯২৫ খ্রীষ্টাব্দের সংশোধিত উত্তরাধিকার আইন ও বিধিমালা হতে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। নিম্নে উক্ত বিজ্ঞপ্তিটি উদ্বৃত করা হলো।
দি ক্যালকাটা গেজেট
বুধবার ২২শে জুলাই ১৯১৪ খ্রীষ্টাব্দ
প্রথম খন্ড ‘‘ক’’
১৮৬৫ খ্রীষ্টাব্দের ভারতীয় আইন ও বিধিমালার আওতা হতে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সীতে বসবাসরত: আদিবাসীদের অব্যাহতি।
ভারত সরকারের ¯^ivóª বিভাগ (বিচার বিভাগ)
সিমলা, ২৩শে জুন ১৯১৪ খ্রীষ্টাব্দ
বিজ্ঞপ্তি নং-৯৪০
যেহেতু বেঙ্গল প্রেসিডেন্সীর বিভিন্ন অংশে বসবাসরত: সাঁওতাল ভূমিজ, ওঁরাও, মুন্ডা, খারিয়া, ঘাসী, মাল, গারো, গোন্দ, টোকাও এবং মাল পাহাড়িয়া প্রভৃতি আদিবাসীদের মধ্যে সম্পত্তির উত্তরাধিকার সংক্রান্ত ব্যাপারে নিজস্ব সামাজিক প্রথা ও আইন প্রচলিত রয়েছে এবং যেহেতু উক্ত সামাজিক প্রথা ও আইনের সঙ্গে ১৮৬৫ খ্রীষ্টাব্দে প্রণীত ভারতীয় উত্তরাধিকার আইনের মধ্যে সম্পূর্ণ অসঙ্গতি বিদ্যমান, সেহেতু ১৮৬৫ খ্রীষ্টাব্দের ভারতীয় উত্তরাধিকার আইনের বিধিমালা উপরোক্ত আদিবাসীদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ অযৌক্তিক। অতএব, ১৮৬৫ খ্রীষ্টাব্দের ভারতীয় উত্তরাধিকার আইনের ৩৩২নং ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে গভর্ণর জেনারেল সমগ্র বেঙ্গল প্রেসিডেন্সীতে বসবাসরত: সাঁওতাল ভূমিজ, ওঁরাও, মুন্ডা, খারিয়া, ঘাসী, মাল, গারো, গোন্দ, টোকাও এবং মাল পাহাড়িয়া প্রভৃতি আদিবাসীকে ১৮৬৫ খ্রীষ্টাব্দের ভারতীয় উত্তরাধিকার আইনের আওতা হতে বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। অবশ্য ইতোমধ্যে যদি কোন উপযুক্ত ক্ষমতাপ্রাপ্ত দেওয়ানী আদালত কর্তৃক কোন ব্যক্তির অধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে বিজ্ঞপ্তির পরিপন্থী কোন রায় প্রদত্ত হয়ে থাকে তবে তা এই বিজ্ঞপ্তির আওতায় পড়বে না।
এইচ.হুইলার
ভারত সরকারের সচিব
wbg&Av
৭৭। ঐতিহ্যহত রীতিনীতির mgš^‡q গঠিত তৃতীয় পর্যায়ের গারো আইনসমূহ এই শব্দের অন্তগর্ত। এই আইন দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় গারোদের আচার-ব্যবহার এবং আদব কায়দাকে অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এই আইন ভঙ্গকারী হয়তো আদালতের শাস্তি পায়না, এ কথা সত্য কিন্তু তাই বলে সর্বসাধারণের ঘৃণা এবং অবজ্ঞার হাত হতে সে রেহাই পাবে না। একজনের নৈতিক চরিত্রের বহি:প্রকাশ এই বিধিসমূহ পালনের মাধ্যমেই ঘটে থাকে। এজন্য এই আইনসমূহকে গারো ভাষায় নিম্আ বলা হয়, বাংলায় অনুবাদ করলে যার অর্থ দাঁড়াবে অননুমোদিত। নিম্নে এই আইনের আওতাভূক্ত কতগুলো উদাহরণ দেয়া হলঃ
৭৭.১ পথচলার সময় মেয়েরা সব সময় পুরুষের পিছনে হাঁটবে। কেবল শ্বাপদসঙ্কুল কিংবা অন্য কোন প্রকারের বিপজ্জনক পথে কোন পুরুষের আগে আগে হাঁটতে পারবে। অবশ্য অল্প বয়স্কা কন্যা সন্তান তার পিতার এবং বিবাহিতা স্ত্রী তার ¯^vgxi আগে আগে হাঁটতে পারবে। এই আইন ভঙ্গকারী মেয়ে এবং পুরুষকে ছনালীপনা করার সন্দেহে অভিযুক্ত করা যেতে পারে।
৭৭.২ গারোরা নির্জন পাহাড়ী ঝর্ণায় বিবস্ত্র অবস্থায় স্নান করে থাকে। ঐ রকম পাহাড়ী ঝর্ণা অথবা খালের ধারে যাবার সময় বেশ কিছু দূর হতে কোন রকম শব্দকরে নিজের উপস্থিতি ঘোষণা করতে হয়,যাতে স্নানরত ব্যক্তি নিজেকে উপযুক্ত বস্ত্র আচ্ছাদন করার যথেষ্ট সময় পায়।
৭৭.৩ পথচলার সময় কোন পুরুষ তার অগ্রগামিনী কোন মেয়েকে অতিক্রম করতে চাইলে কিছুদূর থেকেই সে কোনরকম আওয়াজ করে নিজের উপস্থিতি ঘোষণা করবে। অগ্রগামিনী মেয়ে তখন জঙ্গলের দিকে মুখ ফিরিয়ে পথের এক পাশে সরে দাঁড়াবে এবং পুরুষটি পাশ কাটিয়ে কিছুদূর যাবার পর সে পুনরায় পথচলা শুরু করবে।
৭৭.৪ গৃহাভ্যন্তরে কোন পুরুষ উপবিষ্ট থাকলে কোন মহিলা ঘরের দুয়ারে দাঁড়াবেনা। বিশেষ জরুরী প্রয়োজনে যদি তাকে ঘরের বাইরে অথবা ভিতরে যেতে হয় তবে সে নিজের পশ্চাদ্দেশ উত্তমরূপে ঢেকে যাতায়াত করবে।
৭৭.৫ বালিকা এবং মহিলারা তাদের কাকা অথবা ভাই সম্পর্কের কোন কাপড়-চোপড় স্পর্শ করবেনা অথবা ধুবেনা। কাকা অথবা ভাই গৃহাভ্যন্তরে উপবিষ্ট থাকলে তার সন্মুখ দিয়ে কোন মেয়ে হাঁটাহাঁটি করবেনা, এমন কি ঘরের বাইরে অন্য কোথাও দেয়ালের পাশে বসা থাকলেও তাদের সন্মুখ দিয়ে হাঁটাহাঁটি করবেনা।
৭৭.৬ কোন পুরুষ তার ভগ্নিপতি অথবা আপন শ্যালকের পরিধেয় বস্ত্র পরিধান করবেনা।
৭৭.৭ কোন মহিলা নিজের ছোটবোনের ¯^vgxi সঙ্গে হাস্য পরিহাস করবেনা, এমনকি তার ছোটবোনের উপস্থিতিতেও। শ্বশুর এবং পুত্রবধুর বেলাতেও এই নিয়ম প্রযোজ্য।
৭৭.৮ কোন মহিলা কোন পুরুষকে, সেই পুরুষ ঘরের অথবা বাইরের যেখানকারই হোকনা কেন হাঁড়ির তলদেশের পোড়াভাত পরিবেশন করবেনা। গারো ভাষায় ঐ ভাতকে আখাম্ বলা হয়।
৭৭.৯ মদপানের আসরে, সেই মদপান ঘরোয়া অথবা সাধারণ্যে যাই হোক না কেন মদের প্রথম অংশটি সেখানে উপস্থিত সবচাইতে প্রবীণ ব্যক্তিকে (তার সামাজিক অবস্থান কিংবা মর্যাদা যাই থাকুক না কেন) পরিবেশন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে শ্বেত-শ্বশ্রুবিশিষ্ট ব্যক্তিকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
৭৭.১০ কোন মহিলা নক্পান্থেয় প্রকাশ্যে প্রবেশ করবেনা। এমনকি বিশেষ বিশেষ উৎসব উপলক্ষে যখন নক্পান্থেয় প্রবেশ করা যায় তখনও কোন মহিলা নক্পান্থের প্রধান সিঁড়ি বেয়ে ঘরে প্রবেশ করবেনা।
৭৭.১১ ভাগ্নে অথবা ভাতিজা তার মামা কিংবা কাকা জ্যেঠা কর্তৃক উপবিষ্ট আসন যা কিছুক্ষণের জন্য সাময়িকভাবে খালি অবস্থায় রয়েছে, সেই সব আসনে কোন সময় উপবেশন করবেনা।
৭৭.১২ বীজবপনের সময় হতে শস্য ছেদনের সময়কাল পর্যন্ত কেউ ক্ষেতে কাজ করতে যাবার সময় অথবা ক্ষেতে কাজ করার সময় শিস্ দিবেনা।