ag©xq AvBb
গারোদের আদিধর্ম অর্থাৎ সাংসারেক ধর্ম বিশ্বাস গারো সমপ্রদায়ের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় এমন ওতপ্রোতভাবে জড়িত যে, তাদের প্রতিটি কর্মকান্ডকে ধর্মীয় কর্মকান্ড হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে। সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান ব্যতিরেকে অন্য কোনভাবে ধর্মীয় কর্মকান্ড শেখানো হয়না এবং এজন্যেই ধর্মীয় কর্মকান্ডকে সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান হতে আলাদা করে বর্ণনা করা যায় না। যেমন-
০১. মিত্তে আমুয়ানি সাল্রাংখু আরো সরকারী মানিয়ানী সাল্রাংখু সিম্সাক্না (দেবদেবী পূজার নির্দিষ্ট দিন এবং সামাজিকভাবে পালনের জন্য নির্দিষ্ট দিনসমূহকে যথাযথভাবে মেনে চলা)ঃ
মিত্তে আমুয়ার দিন অর্থাৎ দেবদেবী পূজার দিনসহ সামাজিকভাবে ¯^xK…Z ও উৎসর্গীকৃত দিন বলতে এমন দিনগুলোকে বুঝায় যে দিনগুলোতে গ্রামবাসী সকলে একত্রিত হয়ে নিজেদের এবং এলাকার মঙ্গল কামনায় দেবদেবীর পূজার্চনাসহ অন্যান্য আচার-অনুষ্ঠান সম্পন্ন করে থাকে। এরকম অনুষ্ঠানে গ্রামবাসী সকলে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করবে এবং অনুষ্ঠানের প্রয়োজনানুসারে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করবে।
০২. সাআনা খৃপানী (দু:সময়ে সহমর্মিতা প্রকাশ)ঃ
গ্রামবাসী কারো দুর্দিনে এবং বিপদাপদের দিনে তার পাশে দাঁড়ানো এবং তাকে সর্বতোভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করা, সহমর্মিতা প্রকাশ করা তার AvZ¥xq¯^Rbmn প্রতিটি গ্রামবাসীর নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। উপরোক্ত প্রথাসমূহের লংঘনকারী হয়তো প্রকাশ্যে আইন আদালতে দন্ডপ্রাপ্ত হবে না কিন্তু তাকে অবশ্যই দেবদেবীর কোপের কারণ এবং সামাজিকভাবে অন্য সবার ঘৃণার পাত্র হতে হবে।
০৩. মাংঅন্আ মানিআ (মৃত ব্যক্তির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন)ঃ
মৃত ব্যক্তির বিদেহী আত্মার পারলৌকিক কল্যাণ কামনায় ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনকে গারো ভাষায় মাংঅন্আ বলা হয়। মৃত ব্যক্তির বিদেহী আত্মার নির্বিঘ্নে পরপারে যাত্রা এবং তার নিরবচ্ছিন্ন অনন্ত শান্তির উদ্দেশ্যেই এই অনুষ্ঠানাদি পালিত হয়। এই সামাজিক এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে অনীহা প্রকাশ করা কেবল অমানবিকই নহে বরং A¯^vfvweK নিষ্ঠুরতাও বটে। অতএব, মাহারীর লোকজন একত্রিত হয়ে এ জাতীয় অপরাধে অপরাধী ব্যক্তিকে শাস্তি প্রদান করতে পারে এবং সেই সঙ্গে অর্থদন্ডে দন্ডিতও করতে পারে।
‡`Iqvbx I †dŠR`vix `Ûwewa msµvন্তAvBb
উপরোল্লেখিত আইনের আওতায় আবহমানকাল হতে গারো সমাজের প্রথাগত বিচারের পদ্ধতিসমূহ বৃটিশ শাসনামলে আমুল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। অতর্কিত আক্রমণের মাধ্যমে শত্রুুহত্যা, নিরীহ লোকের প্রাণহানি, নরমুন্ড সংগ্রহ, অবিশ্বস্তা স্ত্রীকে হত্যা, বিবাদমান দু’দলের দীর্ঘস্থায়ী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ প্রভৃতি, সেসব প্রকাশ্যে কিংবা অপ্রকাশ্যে যেভাবেই হোক না কেন এককালে প্রচলিত ছিল। বৃটিশ শাসনামলে ঐসব প্রথা বেআইনী ঘোষিত হয় এবং এর ফলে সেগুলো বর্তমানে প্রায় বিলুপ্তির পথে। টাকার ব্যবহার চালুর সঙ্গে সঙ্গে কতগুলো দৈহিক শাস্তি বিধানের পূর্ব প্রথাও বর্তমানে আর্থিক জরিমানা লেনদেনের মাধ্যমেই নিষ্পত্তি করা হয়। অন্যদিকে গুরুতর অপরাধে অপরাধী ব্যক্তিকে আদালত কর্তৃক জেলে পাঠানো হয় অথবা মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করা হয়। বর্তমানে নক্মা (ধনী/এলাকা প্রধান/সমাজ প্রধান) এবং তার মাহারীর (উপগোত্র) আদালত অনেকাংশেই আগেকার দিনের দক্ষতা এবং কর্তৃত্ব হারিয়েছে। সরকার কর্তৃক এলাকার জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত লস্কর যদিও নক্মার চাইতে অপেক্ষাকৃতভাবে বেশী ক্ষমতার অধিকারী তথাপি জেলার সমস্ত আইন-শৃঙ্খলা সংশ্লিষ্ট জেলার ডেপুটি কমিশনারই নিয়ন্ত্রণ এবং প্রয়োগ করে থাকেন। বিভিন্ন জটিল বিষয়ের বিচার কাজ সংশ্লিষ্ট ডেপুটি কমিশনারই সম্পন্ন করেন এবং সমগ্র জেলায় তাঁর রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করা চলেনা। অবশ্য ভারত সরকারের এক আদেশবলে ১৯৫৩ খ্রীষ্টাব্দে সমগ্র গারো পাহাড়ের বিভিন্ন জেলার ফৌজদারী এবং ভারতীয় দন্ডবিধির আওতাভূক্ত বিচার ব্যবস্থা যথাক্রমে সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদ ও সংশ্লিষ্ট জেলার ডেপুটি কমিশনার এই উভয় কর্তৃপক্ষের বরাবরে ন্যস্ত করা হয়েছে এবং ভারতীয় সংবিধানের ষষ্ঠ তপশীল অনুযায়ী এই উভয় কর্তৃপক্ষের বিচারিক ক্ষেত্রসমূহ নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। সেই নির্ধারিত ব্যবস্থানুযায়ী আদিবাসী-আদিবাসীতে সংঘটিত বিবাদ সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদ আদালত কর্তৃক বিচার কাজ নিষ্পন্ন হবে এবং আদিবাসী-অ-আদিবাসীদের মধ্যে সংঘটিত বিবাদের বিচারকাজ নিষ্পন্ন করবেন সংশ্লিষ্ট জেলার ডেপুটি কমিশনার ও তাঁর সহকারীগণ। এছাড়া মৃত্যুদন্ডযোগ্য অপরাধসমূহ সর্বনিম্ন পাঁচ বছরের কারাদন্ড প্রদানযোগ্য অপরাধের বিচারকাজ নিষ্পন্ন করবেন সংশ্লিষ্ট জেলার ডেপুটি কমিশনার।
০৪. চন্নিকানী (তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা)ঃ
এই ধারায় কাউকে ঘৃণা মিশ্রিত ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ এবং তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করাকে বুঝাবে। এই তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য কোন ব্যক্তির শারীরিক অক্ষমতা, বুদ্ধিবৃত্তির অপরিপক্কতা কিংবা তার আর্থিক দৈন্যতাকে কেন্দ্র করে হতে পারে। যেমন-সল্লানী(তামাশা করা)। যদি কাউকে তার দৈহিক অক্ষমতার জন্য, আর্থিক দৈন্যতার জন্য, আচার-আচরণে অসঙ্গতির জন্য তামাশা সহকারে জনসমক্ষে অপমান করে তবে সেই অপমানিত ব্যক্তি দোষী ব্যক্তির বিচার দাবী করতে পারে এবং ১,০০০.০০(এক হাজার) টাকা অর্থদন্ড দাবী করতে পারে।
০৫. জেগ্রিক্আ, সাইআ, গিসিয়া (বাক্ বিতন্ডা, গালিগালাজ এবং তর্ক-বিতর্ক করা)ঃ
নিজেরস যুক্তি প্রতিষ্ঠাহেতু বাক্বিতন্ডা অথবা তর্ক-বিতর্ক করতে আইন কাউকে বাধা দেয়না, কিন্তু বাক্ বিতন্ডাকারীকে একই সঙ্গে মনে রাখতে হবে বাক্ বিতন্ডার সময় যেন এমন কোন অশালীন এবং অভব্য উক্তি উচ্চারিত না হয় যা অন্য পক্ষের শালীনতার আঘাত হানে। যদি সেরকম কোন ঘটনা ঘটে তবে দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা যাবে এবং মানহানীর জরিমানা দাবী করা যাবে। ¯^vgx-¯¿xi ক্ষেত্রেও এ আইন সমভাবে প্রযোজ্য। এক্ষেত্রে ¯^vgx যদি বাক বিতন্ডার সময় স্ত্রীর মানহানিকর কোন কিছু উক্তি করে, তবে স্ত্রীর মাহারীর (উপগোত্র) লোকেরা উক্ত দোষী ¯^vgxi বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে পারবে এবং আর্থিক জরিমানা দাবী করতে পারবে।
০৬. মিত্তাক্ আনি (মিথ্যা অপবাদ দেয়া)ঃ
এই ধারায় সন্দেহবশত: কারো নামে মিথ্যা অপবাদ রটনাকে বুঝাবে। এক্ষেত্রে যার বিরুদ্ধে অপবাদ রটানো হয়েছে সে রটনাকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনয়ন করতে পারে এবং অপবাদ যদি মিথ্যা প্রমাণিত হয় তবে দোষী (অপবাদ রটনাকারী) ব্যক্তির নিকট হতে অর্থদন্ড দাবী করতে পারে। আগেকার দিনে এরকম মিথ্যা অপবাদ রটানোকে কেন্দ্র করে অনেক সময় রক্তক্ষয়ী সংষর্ঘ পর্যন্ত চলতো।
০৭. এত্তাল্ মিক্কানি (ব্যঙ্গ করা)ঃ
এই ধারায় কারো অনুপস্থিতিতে তাকে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করাকে বুঝাবে। এক্ষেত্রে উপযুক্ত সাক্ষী প্রমাণাদি থাকলে বিদ্রুপকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা যাবে এবং মানহানী বাবদ ১,০০০.০০ (এক হাজার) টাকা জরিমানা দাবী করা যাবে।
০৮. কাদিং ষ্টেকানী (পরিহাস করা)ঃ
এই ধারানুযায়ী সর্বসমক্ষে কাউকে পরিহাসপূর্বক অপমান করাকে বুঝাবে। এক্ষেত্রে পরিহাসের পাত্র নিজেকে যদি অপমানিত বোধ করে তবে দোষী (পরিহাসকারী) ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে পারবে এবং মানহানী বাবদ ১,০০০.০০(এক হাজার) টাকা আর্থিক জরিমানা দাবী করতে পারবে।
০৯. দক্ গ্রিক্আ (মারামারি করা)ঃ
গারোরা মারামারি করাকে গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য করে থাকে এবং মারামারির সুচনাকারী দোষী ব্যক্তির অপরাধ যদি প্রমাণিত হয় তবে তাকে কঠোর শাস্তি বহন করতে হয়। এক্ষেত্রে দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে যথাযথ অভিযোগ আনা যাবে এবং দৈহিক নির্যাতনের অনুপাতে মানহানী বাবদ তাকে অর্থদন্ডে দন্ডিত করা যাবে।
১০. গিসিয়ানা দক্আ (তর্ক করার জন্য মারপিট করা)ঃ
এই ধারানুযায়ী মূলত: পারিবারিক কলহ ঝগড়াকে বুঝাবে। এই ধারায় যুক্তিসঙ্গত কারণে পিতামাতা কর্তৃক নিজ সন্তান-সন্তুতিকে শাসন এবং প্রয়োজনে তাদেরকে মারপিট করা নিষিদ্ধ করা হয়নি, কিন্তু সেই শাসন ও মারপিট যদি মাত্রাতিরিক্ত এবং অযৌক্তিক হয়ে পড়ে তবে মাহারীর (উপগোত্র) লোকজনেরা উক্ত দোষে দোষী মা-বাবাকে সতর্ক করে দেবে এবং সেই সতর্কীকরণে যদি কোন কাজ না হয় তবে উক্ত নিষ্ঠুর মা-বাবার কবল হতে তাদের নির্যাতিত সন্তান-সন্তুতিকে নিয়ে গিয়ে প্রতিপালনের জন্য মাহারীর নিকটতম আত্মীয়ার তত্ত্বাবধানে রাখতে পারবে।
১১. জেগ্রিক্কী খাওনাংয়ে দক্আ (ঝগড়া করে মারপিট করা)ঃ
অনেক সময় দেখা যায় তুচ্ছ কারণেই ঝগড়া-বিবাদ করে ¯^vgx তার স্ত্রীকে প্রচন্ডভাবে প্রহার করে থাকে। কিন্তু যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া স্ত্রীকে সব সময় মারপিট করা অথবা জখম করা কোন ¯^vgxiB উচিত নয়। এক্ষেত্রে প্রথমে স্ত্রীর মাহারীর (উপগোত্র) লোকজনেরা উক্ত দোষী ¯^vgx‡K সতর্ক করবে। কিন্তু এতে না মানলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা যাবে এবং জরিমানা দাবী করতে পারবে। স্ত্রীর মাহারীর লোকজনের সতর্কবাণীতে †µvavwš^Z কর্ণপাত না করে যদি নিজ ক্রোধ প্রশমনের উদ্দেশ্যে গৃহের জিনিসপত্রাদি ভাঙ্গে তাহলে উহা অমার্জনীয় অপরাধ বলে গণ্য হবে এবং স্ত্রীকে হত্যার সামিল বলে মনে করতে হবে। এক্ষেত্রে স্ত্রীর মাহারীর লোকজনেরা উক্ত দোষী ¯^vgx‡K কোনক্রমেই ক্ষমা করবে না এবং এজাতীয় অপরাধের জরিমানা পূর্বাপেক্ষা অধিক হবে। প্রয়োজন মনে করলে স্ত্রীর মাহারীর লোকজনেরা বিবাহ বিচ্ছেদের ব্যবস্থা করবে। অন্যদিকে স্ত্রী কর্তৃক ¯^vgx যদি প্রহৃত হয় এবং ¯^vgx পক্ষের মাহারীর (উপগোত্র) কোন সতর্কবাণী না শুনে উহার পুনরাবৃত্তি ঘটায় তবে ¯^vgxi ¯^vgxi AvZ¥xq¯^Rb‡`i কেউ বাইরে গিয়ে একটি শূকর কিংবা গরু মারবে এবং উহা দ্বারা ¯^vgxc‡¶i ভোজের আয়োজন করবে। সেই ভোজের সম্পূর্ণ খরচ স্ত্রীর AvZ¥xq¯^Rbiv বহন করবে।
১২. কাদ্নআ/খুচিংআ (হত্যার সংকল্প প্রকাশ করা)ঃ
প্রহৃত হবার পরে কেউ যদি অনুপস্থিত প্রহারকারীর উদ্দেশ্যে গালিগালাজ করে এবং প্রতিশোধ গ্রহণের সংকল্প প্রকাশ পূর্বক হাতে দা কিংবা কুড়াল নিয়ে উক্ত অনুপস্থিত প্রহারকারীর নাম উচ্চারণপূর্বক কলাগাছ অথবা ঐ জাতীয় কোন একটি গাছ এক কোপে ছেদন করে তবে তার বিরুদ্ধে হত্যার সংকল্প প্রকাশের অভিযোগ আনা যাবে এবং তদানুযায়ী বিচার কাজ নিষ্পন্ন করা যাবে।
১৩. নক্কু নাপদ্রাপ্পী দক্আ (ঘরে হামলা করে প্রহার করা)ঃ
কারো গৃহে বলপূর্বক প্রবেশ করে তাকে প্রহার করা গুরুতর অপরাধ, যেহেতু এতে প্রতীয়মান হয় যে উহা পূর্বপরিকল্পিত। আগেকার দিনে আক্রান্ত ব্যক্তি আত্মরক্ষার জন্য উক্ত আক্রমণকারীকে আঘাত এমন কি হত্যা পর্যন্ত করতে পারতো, সেই সঙ্গে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সাহায্য করার জন্য উক্ত গৃহের অন্যান্যরাও একযোগে অনুপ্রবেশকারীকে আঘাত হানতে পারতো।
১৪. দেন্আ (হত্যা করা)ঃ
আগেকার দিনে মারপিট করার চাইতে হত্যা করার প্রবণতাই ছিল বেশী। সেই হত্যাকান্ড কোন কোন সময় আইন সঙ্গত কারণে আবার কোন কোন সময় বেআইনীভাবে হতো। বর্তমানে কেউ নরহত্যা করলে তার বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে উপযুক্ত আদালতে অভিযোগ আনা হয় এবং আগেকার দিনের প্রথানুযায়ী বিচার না হয়ে দেশের প্রচলিত আইনানুযায়ীই বিচার কাজ নিষ্পন্ন হয়ে থাকে।
১৫. নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহ প্রথাগত আইনানুযায়ী নরহত্যার পর্যায়ে পড়বে নাঃ
১৫.১ বোবিল্কু চাদ্রাপে নক্কু ওয়ারাচাক্কানি (অসদুদ্দেশ্যে গৃহে অনুপ্রবেশকারীকে বাধাদান)ঃ
এই ধারায় কারো গৃহে অসদুদ্দেশ্যে বলপূর্বক অনুপ্রবেশকে বুঝাবে। এখানে অসদুদ্দেশ্যে বলতে উক্ত গৃহের বাসিন্দাদের কাউকে হত্যা করার সংকল্প অথবা মারপিট করার সংকল্প কিংবা উক্ত গৃহের কোন মেয়ের শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্যকে বুঝাবে। এক্ষেত্রে গৃহকর্তা অথবা গৃহের বাসিন্দারা একযোগে উক্ত অনুপ্রবেশকারীকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে, প্রয়োজনবোধে অনুপ্রবেশকারীকে হত্যা পর্যন্তও করতে পারে।
১৫.২ চাউনা রেবাগিপা মান্দে, উইগিজা বা আগানগিজাগিপাকো (চুরি করার উদ্দেশ্যে অথবা অজ্ঞাত কিংবা আত্মপরিচয় প্রদানে অনিচ্ছুক অনুপ্রবেশকারীকে প্রতিরোধ)ঃ
চুরি করার উদ্দেশ্য নিয়ে কোন অনুপ্রবেশকারীকে গৃহে প্রবেশকালেই হোক অথবা বহির্গমনকালেই হোক এবং অপহৃত জিনিসপত্রাদিসহ হোক বা না হোক, যদি সে গৃহকর্তার চ্যালেঞ্জে প্রকৃত আত্মপরিচয় ও আগমনের প্রকৃত উদ্দেশ্য প্রকাশ না করে পলায়নের চেষ্টা করে তবে তাকে অকুস্থলে হত্যা করা যাবে। এক্ষেত্রে অবশ্য অনুপ্রবেশকারীর প্রকৃত উদ্দেশ্য জানা যায় না।
১৫.৩ বোবিল্কু ওয়ারাচাক্কানি (আততায়ীকে প্রতিরোধ করা) ঃ
কেউ নিজ গৃহের বাইরে অবস্থানরত অবস্থায় আততায়ী কর্তৃক আক্রান্ত হলে সর্বশক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে আততায়ীকে প্রতিরোধ করতে পারে এমনকি নিজ প্রাণ রক্ষার্থে আক্রমণকারী আততায়ীকে হত্যা পর্যন্ত করতে পারে। অবশ্য এক্ষেত্রে যথেষ্ট প্রমাণ থাকতে হবে যে আক্রমণকারী আততায়ী তাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই আক্রমণ চালিয়েছিল।
১৫.৪ বোবিল্ দেন্আ (শত্রুহত্যা)ঃ
এই ধারায় শত্রু বলতে স্ত্রীর অবৈধ প্রেমিককে বুঝাবে। এক্ষেত্রে ¯^vgx অবৈধ প্রেমিকের সঙ্গে তার স্ত্রীর দৈহিক মিলনাবস্থায় ধরতে পারলে উক্ত গোপন প্রেমিককে হত্যা করতে পারে। অথবা অবৈধ যৌনমিলনের উপযুক্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ থাকলে উক্ত গোপন প্রেমিককে অনুসরণ করে হত্যা করতে পারে।
১৫.৫ মেমাং খাম্না সৎআ (আন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার প্রয়োজনে হত্যা)ঃ
এই ধারায় কোন অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার প্রয়োজনে কাউকে অতর্কিতে আক্রমণ করে তার মৃতদেহ অথবা কেবলমাত্র মুন্ড নেয়াকে বুঝাবে। এক্ষেত্রে আততায়ী যদিও কোন আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত হয় না তথাপি যেকোন সুযোগে নিহত ব্যক্তির AvZ¥xq¯^Rbiv তাকে অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে হত্যা করতে পারে। এমনকি এ নিয়ে দু’দলের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ পর্যন্ত দেখা দিতে পারে।
১৫.৬ নাংরিমগ্রিক্কী দেনগ্রিক্আ (দ্বন্দ্ব যুদ্ধের মাধ্যমে হত্যা)ঃ
এই ধারায় দু’ব্যক্তিতে প্রকাশ্য ¯^v¶xi সামনে একে অপরকে দ্বন্দ্ব যুদ্ধের মাধ্যমে হত্যার সংকল্পকে বুঝাবে। সংকল্প গ্রহণের পর একে অপরকে হত্যা করার সুযোগের অপেক্ষায় সদাসর্বত্র ওঁত পেতে থাকবে এবং সুযোগ পাওয়ামাত্র হত্যা করবে। কিন্তু এক্ষেত্রে নিহত ব্যক্তির AvZ¥xq¯^Rbiv উক্ত হত্যাকারীকে সহজে রেহাই দেবেনা বরং সুযোগ পাওয়ামাত্র তাকে হত্যার মাধ্যমে চরম প্রতিশোধ নেবে।
১৬. চাওয়ানি (চুরি সংক্রান্ত)ঃ
আগেকার দিনে চোর ধরা পড়লে সমস্ত অপহৃত দ্রব্যাদি ফেরত দিতে হতো অথবা সমমূল্যের জরিমানা প্রদান করতে হতো। তখনকার দিনে জেল খাটার নিয়ম ছিলনা কিন্তু অপহৃত সম্পদের দায়ে তাকে অভিযোগকারীর বাড়ীতে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গোলামী খাটতে হতো অথবা এলাকার নক্মা যদি অপহৃত দ্রব্যাদির ক্ষতিপূরণ অভিযোগকারীকে পরিশোধ করে দিতেন তবে সেক্ষেত্রে চোরকে উক্ত নক্মার গৃহে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গোলামী খাটতে হতো।
১৭. নক্ ওয়াল খামাত্আনি (গৃহে অগ্নি সংযোগ)ঃ
আগেকার দিনে প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য গৃহে অগ্নিসংযোগ করার প্রবণতা বহুল প্রচলিত ছিল এবং এর প্রতিরোধকল্পে কতগুলো বিধিও প্রচলিত ছিল। অগ্নিসংযোগে দোষী ব্যক্তিকে তার AvZ¥xq¯^R‡bi সহায়তায় ভস্মিকৃত গৃহ পুনঃনির্মাণ করে দিতে হতো এবং ক্ষতিগ্রস্থ সম্পত্তির জন্য সমমূল্যের জরিমানা প্রদান করতে হতো। অগ্নিসংযোগের ফলে কোন মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা পড়লে অগ্নিসংযোগকারীর বিরুদ্ধে চরম প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতো। পরিবারেরই কেউ যদি এই দোষে দোষী সাব্যস্থ হতো তাকেও রেহাই দেয়া হতো না।
১৮. গ্রো-চত্না মান্গিজানী (ঋণ পরিশোধের ব্যর্থতা)ঃ
সাধারণ রীতি অনুসারে ঋণের উপর সুদের পরিমাণ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য শতকরা পঞ্চাশ টাকা হারে নির্ধারণ করা হবে। ঋণের পরিমাণ যাই থাকুক না কেন তিন বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। উক্ত সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে উক্ত ঋণীর বিরুদ্ধে ক্রোকজারীর মাধ্যমে তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে বিক্রয়লব্ধ অর্থ ঋণদাতা গ্রহণ করবে। অবশ্য আগেকার দিনে এ জাতীয় ঘটনা খুব কমই ঘটতো, কারণ কারো বিপদের দিনে মাহারীর লোকেরা সব সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতো। অতএব, কারোর পক্ষে সময়মতো ঋণ পরিশোধ করা খুব বেশী সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতো না।
১৯. সরকারী খাম্রাং (জনসাধারণের কাজ)ঃ
যেসব কাজ জনসাধারণের ¯^v_©RwoZ যেমন-গ্রামের রাস্তাঘাট নির্মাণ ও মেরামত, পানীয় জলের কূপ খনন করা প্রভৃতি কাজ গ্রামের সকলে মিলে সমভাবে করবে। যদি গ্রাম বা সমাজের কেউ এতে অবহেলা করে তবে তার প্রয়োজনকালে কেউ তাকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসবে না। এমনকি তাকে সমাজে একঘরে করেও রাখতে পারে।
২০. থল্লে আগানানী (মিথ্যা বলা কিংবা মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করা)ঃ
গারোরা সচরাচর মিথ্যা বলায় অভ্যস্থ নহে। তবে বিচার কাজ চলাকালে অথবা আইন আদালতে সাক্ষ্য প্রদানকালে ভয়ে কিংবা প্রতিশোধ গ্রহণের ভয়ে ভীত হয়ে অনেক সময় মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ে ফেলে। এক্ষেত্রে তার মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদানের জন্য যে ক্ষতি সংঘটিত হবে উহার ক্ষতিপূরণ প্রদানে সে বাধ্য থাকবে।
২১. খুচিংআ (ভীতি প্রদর্শন)ঃ
কাউকে অহেতুক ভীতি প্রদর্শন করা হলে ভীতি প্রদর্শনকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা যাবে এবং ১,০০০.০০(এক হাজার) টাকা জরিমানা দাবী করা যাবে।
২২.স্নাক্না খুচিংআ (খারাপ নজর দেয়া অথবা তন্ত্রমন্ত্রের সাহায্যে ক্ষতি করার ভীতি প্রদর্শন)ঃ
ভীতি প্রদর্শন সমূহের মধ্যে এটিই হচ্ছে মারাত্মক রকমের অপরাধ। যাকে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে সে যদি সত্যি সত্যিই অসুস্থ হয়ে পড়ে তবে তার চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার উক্ত ভীতি প্রদর্শনকারী বহন করবে এবং সে অসুখে যদি আক্রান্ত ব্যক্তি মারা যায় তবে ভীতি প্রদর্শনকারী লোকটি মৃত ব্যক্তির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াসহ দেলাং সুআর যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করবে। তদোপরি তার উপর গ্রামবাসীর এমন ঘৃণা এবং ভীতি জন্মাবে যে, অবশেষে তাকে বাধ্য হয়ে নিজ গ্রাম পরিত্যাগ করে দূরের অজানা কোন গ্রামে বসতি স্থাপন করতে হবে।
২৩. স্খাল পত্তানি (ডাইনী অপবাদ দেয়া)ঃ
ইহা এক ধরণের মারাত্মক অপবাদ। যাকে এই অপবাদ দেয়া হয় সে এবং তার পরিবারের মধ্যে ততক্ষণে শান্তি আসবে না, যতক্ষণে না এই অপবাদের উপযুক্ত প্রতিবাদ এবং প্রমাণ দেয়া হয়। এক্ষেত্রে অপবাদকারীকে তার অপবাদের সপক্ষে সাক্ষী-প্রমাণ দিতে বলা হবে এবং অপবাদকারী যদি উপযুক্ত সাক্ষী-প্রমাণ হাজির করতে না পারে তবে তার নিকট হতে ২,০০০.০০(দুই হাজার) টাকা অর্থদন্ড আদায় করা যাবে।
weevn AvBb
গারো বিবাহ সম্পূর্ণ অসবর্ণ বিবাহ এবং আখিম্ প্রথা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। প্রথমোক্ত বিধি অনুযায়ী কেউ তাঁর নিজ মাহারীতে (উপগোত্র) বিয়ে করতে পারে না। যেমন-কোন চিসিম ছেলে কোন চিসিম মেয়েকে বিয়ে করতে পারে না। কোন মানখিন মেয়ে কোন মানখিন ছেলেকে বিয়ে করতে পারেনা। কেউ যদি এর কোন ব্যতিক্রম করে অর্থাৎ নিজ মাহারীর মধ্যে বিয়ে করে তবে উহা অবৈধ সম্পর্কের মধ্যে যৌনসংসর্গের পর্যায়ে পড়বে। কারণ গারো সংস্কার অনুযায়ী একই মাহারীর সদস্যরা আত্মীয়-অনাত্মীয় যাই হোক না কেন পরস্পর পরস্পরকে ভাইবোন হিসেবে গণ্য করে। ফলে একই মাহারীতে বিবাহ তাদের কাছে অজাচারতুল্য। দ্বিতীয়ত: খিম্ বা আখিম্ প্রথানুসারে কোন মেয়ে অথবা ছেলে একবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে কিংবা বিবাহ বন্ধনের চুক্তিতে আবদ্ধ হলে সে আর ¯^vaxbfv‡e জীবনযাপন করতে পারে না এবং নিজের ইচ্ছানুযায়ী অন্য কারোও সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে না। এই বিধি-নিষেধ বিয়ের চুক্তিবদ্ধ পাত্র-পাত্রী কিংবা বিবাহিত ¯^vgx-¯¿xi কোন পক্ষ মারা গিয়ে থাকলে অথবা বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলেও প্রযোজ্য। এক্ষেত্রে প্রথম স্ত্রী অথবা ¯^vgxi মাহারী হতে অন্য মেয়ে অথবা ছেলেকে প্রদান করা হবে এবং দ্বিতীয় পক্ষের উহা গ্রহণ করা কর্তব্য। প্রকৃতপক্ষে মাহারীই এসব আইনের নিয়ামক এবং নিয়ন্ত্রক। নক্না অর্থাৎ উত্তরাধিকারিনী নির্বাচন, দত্তক মেয়ে (দেরাগাত্তা) গ্রহণে সাহায্য, নক্রম নির্বাচন করা প্রভৃতি যাবতীয় বিবাহ সংক্রান্ত ক্ষমতা প্রকৃতপক্ষে মাহারীর উপরেই ন্যস্ত থাকে।
মাহারীর (উপগোত্র) দায়িত্বঃ
মাহারী বলতে যদিও একই উপগোত্রভূক্ত জ্ঞাতি-গোষ্ঠীকে বুঝায় তথাপি সবাইকে যে জ্ঞাতিগোষ্ঠীর তদারকি করতে হবে এমনটি নয়। বস্তুত: প্রতিটি মাহারীর মধ্যে দু’টি ছোট দল থাকে, যারা সব সময় বিপদাপদের দিনে মাহারীর যেকোন সদস্যের সমস্যাকালে সংকট মোচন, সমস্যা সমাধানে মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। এই দল দু’ট যথাক্রমে-
২৪. চ্রা-পান্থেঃ
পরিবারের মেয়ে সন্তানদের বড় ও ছোট ভাই এবং সব ক’টি মামার mgš^‡q এই চ্রা পান্থে দল গঠিত। ধর্মীয়, সামাজিক এবং প্রথাগত আইন সংক্রান্ত যেকোন সমস্যায় পরিবারের মেয়েদের c¶vej¤^b করা এবং তাদের ¯^v_©i¶v করা এই দলের দায়িত্ব।
২৫. ফা-গাচিঃ
পরিবারের ছেলে সন্তানদের বড় বোন এবং ছোট বোন ও তাদের ¯^vgxiv, মাসীমারা ও মেসোমশাইরা এই দলের অন্তর্ভূক্ত। যেকোন বিপদাপদ অথবা সমস্যাকালে পরিবারের প্রতিটি ছেলে সন্তানের পাশে এরা দাঁড়াবে এবং সমস্যা মোকাবেলা করবে।
২৬. বান্দাবোস কাআনি (বিবাহের প্রস্তুতিপর্ব)ঃ
গারো সমাজে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী মেয়েরাই প্রথমে বিবাহের প্রস্তাব জানায়। ছেলে কোন সময় নিজে প্রথমে বিয়ের প্রস্তাব জানাতে পারে না। যদি কোন ছেলে গোপনেও কোন মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব জানায় তবে সেই মেয়ে তাকে উপহাসবিদ্ধ করতে পারে এমনকি মেয়েটি সর্বসাধারণে ব্যাপারটি প্রকাশ করে ছেলেটির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে পারে এবং মানহানী বাবদ ১,০০০.০০ (এক হাজার) টাকা জরিমানা দাবী করতে পারে।
২৬.১ বিয়ে ব্যাপারে মেয়ে নিজেও সরাসরি প্রস্তাব পাঠায় না, বরং তার বাবা অথবা মামা কিংবা মাহারীর নেতৃস্থানীয় কারো মাধ্যমে প্রস্তাবটি পাঠানো হয়। বিয়ের ব্যাপারে মাহারীর লোকজনের প্রভাব এবং দায়িত্ব অপরিসীম। মাহারীর দায়িত্বশীল লোকজনের সম্মতি ছাড়া কোন বিয়ে সম্পন্ন হতে পারে না বরং এরকম কোন ঘটনা ঘটলে AvZ¥xq¯^Rb এবং মাহারীর লোকেরা উক্ত বিয়ের চুক্তি ভেঙ্গে দিতে পারে। এ নিয়ম সরকার কর্তৃক ¯^xK…Z এবং AvZ¥xq¯^Rb অথবা মাহারীর দায়িত্বশীল লোকজনের অসম্মতিতে অসামাজিক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে আইন-আদালতেও উক্ত বিবাহ অগ্রাহ্য হবে।
২৬.২ বিয়ের ব্যাপারে ছেলেমেয়ে যদিও ¯^vaxb মতামত ব্যক্ত করতে পারে বিশেষ করে আগাত্তে মেয়েরা যদিও নিজ নিজ পছন্দানুযায়ী বর নির্বাচন করতে পারে তথাপি তাদের চ্রাদের কেউ যদি সেটি অপছন্দ করে তবে তারা সেই বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করতে পারে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মেয়ের বড় মামার নেতৃত্বে সমস্ত চ্রা পান্থে একত্রে আলোচনায় বসবে এবং তারাই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। তাদের গৃহিত সিদ্ধান্তকেই উক্ত মেয়ের মেনে নিতে হবে।
২৬.৩ বিয়ের প্রস্তাব চূড়ান্ত হবার পর বিয়েতে দেরী করা রীতি বিরুদ্ধ। ইতোমধ্যে বাক্দত্তা ছেলেমেয়ের মধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ এবং মেলামেশাও নিষিদ্ধ। বাগ্দানের পরে এক সপ্তাহ হতে এক মাস পর্যন্ত বিবাহ wejw¤^Zকরা যেতে পারে, যাতে ছেলেমেয়ে উভয় পক্ষের AvZ¥xq¯^Rb ও বন্ধু-বান্ধবকে নিমন্ত্রণ দেয়া যায় এবং বাজারে বিয়ের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রাদি কেনা যায়।
২৬.৪ যদি কোন অনিবার্য কারণে উভয় পক্ষের পারস্পরিক সম্মতিক্রমে বাগদান চুক্তি বাতিল হয় তবে কোন পক্ষকেই জরিমানা দিতে হবে না। অবশ্য যদি এক পক্ষের ¯^v_©RwbZ কারণে বাগদান বাতিল হয়ে যায় এবং বাতিলের কারণ অস্পষ্ট অথবা অপর্যাপ্ত হয় তবে যে পক্ষ বিবাহ বাতিলে আগ্রহী সেই পক্ষ অন্য পক্ষকে মানহানি বাবদ জরিমানা প্রদানে বাধ্য থাকবে। কিন্তু যেহেতু তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়নি সেহেতু আখিম্ আইনের জরিমানা প্রদান করতে হবে না।
২৬.৫ বাগ্দত্তা ছেলেমেয়ের মধ্যে বিয়ের আগেই যদি যৌন মিলন ঘটে থাকে এবং পরবর্তীতে ছেলে যদি মেয়েটিকে বিবাহে অসম্মতি জ্ঞাপন করে তবে মেয়েটি ছেলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ আনতে পারে এবং মানহানি ও যৌনসংসর্গ বাবদ ২,০০০.০০(দুই হাজার) টাকা জরিমানা দাবী করতে পারে, এমনকি উভয়ের সম্মতিক্রমেই যদিওবা যৌন মিলন ঘটে থাকে। তৃতীয় কোন ব্যক্তি যদি কোন বাগদত্তা মেয়ের সঙ্গে অবৈধ যৌনসংসর্গে লিপ্ত হয় তবে সেই দোষী ব্যক্তি বাগদত্তা ছেলে এবং বাগদত্তা মেয়ে উভয়ের প্রতিজনকে ১,৫০০.০০(এক হাজার পাঁচশত) টাকা করে মোট ৩,০০০.০০ (তিন হাজার) টাকা জরিমানা প্রদানে বাধ্য থাকবে। এক্ষেত্রে বাগদত্তা ছেলে পক্ষ যদি ইচ্ছে করে তবে বাগদান বাতিল করে দিতে পারে। অন্যদিকে বাগদত্তা ছেলে যদি বাগদান পরবর্তী সময়ে অন্য কোন মেয়ের সঙ্গে অবৈধ যৌনসংসর্গে লিপ্ত হয় তবে সে ব্যভিচারের দায়ে তার বাগদত্তা বধূকে ১,৫০০.০০(এক হাজার পাঁচশত) টাকা জরিমানা প্রদানে বাধ্য থাকবে। উপরন্তু বাগদত্তা মেয়েটি ইচ্ছা করলে সেই বিবাহ চুক্তি বাতিল করে দিতে পারে।
weev‡ni cÖPwjZ cÖ_vmg~n
গারো সমাজে বিয়ের বয়স নিয়ন্ত্রণহেতু কোন বাধাধরা আইন নেই। যদিও কোন কোন সময় দশ-এগারো বছর বয়েসী মেয়েদেরকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে দেখা যায় তথাপি গারো সমাজে শিশু বিবাহ দেখা যায় না। বিয়ের আইনগত প্রচলিত প্রথা ছাড়াও গারো সমাজে এমন কতগুলো বিয়ের প্রথা প্রচলিত রয়েছে যেগুলো আদৌ আইনসিদ্ধ অথবা সরকার কর্তৃক অনুমোদিত নহে। তবে সেগুলো পরবর্তীকালে আইনসিদ্ধ করে নেয়া যায় এবং সাধারণভাবে সামাজিক ¯^xK…wZ লাভ করে।
২৭. দোসিআ/দোদক্কা/দোবুক নিআ (মোরগ হত্যা)ঃ
গারো সমাজে বিবাহের এই প্রথাই আইনসিদ্ধ এবং me©Rb¯^xK…Z বিবাহপ্রথা। বিবাহের এই পদ্ধতি অনুযায়ী বিবাহের অনুষ্ঠান চলাকালে ছেলেমেয়ে উভয়ের মতামত জানতে চাওয়া হয়। ঐ সময় ছেলে যদি কোন মতামত প্রকাশ না করে চুপচাপ অনুষ্ঠানে যোগদান করে এবং ভোজেও অংশগ্রহণ করে তবে ধরে নিতে হবে যে এ বিয়েতে তার সম্মতি রয়েছে। সুতরাং সে তখন হতেই আখিম্ প্রথায় দায়বদ্ধ হয়ে যাবে এবং বিবাহ বন্ধনে বাধ্য থাকবে। অপরদিকে ছেলেটি মুখে ¯^xKvi করেও যদি বিবাহ অনুষ্ঠানে এবং ভোজ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ না করে পলায়ন করে তবে তার বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ আনা যাবে এবং সংশ্লিষ্ট দোষী ছেলেটি অথবা তা অবর্তমানে তার পক্ষের দায়িত্বশীল ব্যক্তি সমাজের মানহানি বাবদ ২,০০০.০০(দুই হাজার) টাকা অর্থদন্ড প্রদানে বাধ্য থাকবে।
২৮. থুনাপ্ আ (গৃহে প্রবেশ করে ¯^vgx-¯¿xi মতো শয়ন)ঃ
বিয়ের এই পদ্ধতিতে ছেলে রাত্রিতে মেয়ের ঘরে গোপনে প্রবেশ করে মেয়ের সঙ্গে একত্রে শয়ন করে। সাধারণত: মেয়ের মা-বাবার নীরব সম্মতিক্রমে কিন্তু মাহারীর লোকজনের অজ্ঞাতসারে ব্যাপারটি ঘটে থাকে। থুনাপ্আ প্রকাশ হয়ে যাবার পর মাহারীর লোকজন যদি উক্ত থুনাপ্আ নিষিদ্ধ না করে এবং এক মাসের মধ্যে ছেলেটিকে তাড়িয়ে দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তবে উক্ত বিবাহ আর কোন আচার-অনুষ্ঠান ব্যতিরেকেই ¯^vfvweKfv‡e আইনসিদ্ধ এবং সামাজিক ¯^xK…wZ লাভ করবে।
২৯. নক্পান্থে গাআ (অবিবাহিত যুবকদের শয়নগৃহে অভিসার)ঃ
বিয়ের এই পদ্ধতি প্রায় পূর্ববর্ণিত পদ্ধতির মতই। তবে এই পদ্ধতিতে মেয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। মেয়েটি রাতের অন্ধকারে নক্পান্থিতে (যুবাগৃহে) গমন করে এবং সবার অলক্ষ্যে তার প্রেমিককে আহ্বান জানায়। ছেলেটি যদি এই আহ্বানে সাড়া দেয় এবং পরদিন মেয়ের সঙ্গে বসবাসের উদ্দেশ্যে মেয়ের বাপমায়ের বাড়ীতে চলে যায় তবে তাদের উভয়ের মিলন আইনসিদ্ধ হয়ে যাবে এবং তারা উভয়ে বিবাহিত ¯^vgx-¯¿x হিসাবে সামাজিক ¯^xK…wZ লাভ করবে। উক্ত বিয়েতে মেয়েটির বাপ-মা এবং AvZ¥xq¯^R‡bi সম্মতি না থাকলে তারা ছেলেটিকে তাড়িয়ে দিতে পারে, কিন্তু ছেলেটির নিকট হতে কোনরকম জরিমানা তারা দাবী করতে পারবেনা, এমনকি ছেলেমেয়ে উভয়ের মধ্যে যদিওবা যৌনমিলন ঘটে থাকে।
৩০. সেক্আ (বিপথ গমনে প্রলুব্ধ করা এবং হরণ করা)ঃ
এই ধারায় কোন বিবাহিতা মহিলাকে কোন পুরুষ কর্তৃক বিপথ গমনে প্রলুব্ধ করা এবং নিয়ে যাওয়াকে বুঝাবে। এক্ষেত্রে উক্ত দোষী ব্যক্তিদ্বয় গ্রামে বসবাসের সুযোগ পাবেনা, কারণ তাদেরকে আশ্রয় দিয়ে গ্রামের কেউ উক্ত মহিলার ¯^vgx এবং তার AvZ¥xq¯^R‡bi শত্রুতাচরণ করতে চাইবেনা। তবে কিছুদিনের মধ্যে উক্ত দোষী ব্যক্তিদ্বয়কে যদি পরস্পরের নিকট হতে বিচ্ছিন্ন করা না হয় (আগেকার দিনে তাদের উভয়কেই হত্যা করা হতো) তাহলে ¯^vfvweKfv‡eB তারা ¯^vgx-¯¿x হিসেবে পরিগণিত হবে এবং সামাজিক ¯^xK…wZI লাভ করবে। অবশ্য ব্যভিচার এবং আখিম্ আইন লংঘন ও অবমাননা করার অভিযোগে তারা অর্থদন্ডে দন্ডিত হবে।
৩১. সেক্কে কাথ্ আ (পরস্পর সম্মতিক্রমে পলায়ন করা)ঃ
এই ধারায় অবিবাহিত যুবক-যুবতী পারস্পরিক সম্মতিক্রমে গৃহত্যাগ করে অন্যত্র বসবাস করাকে বুঝাবে। এক্ষেত্রে অভিভাবকদের সম্মতি না থাকলে অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই উক্ত যুবক-যুবতীকে পরস্পরের নিকট হতে বিচ্ছিন্ন করা হবে এবং এক্ষেত্রে যুবকটিকে কোন অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হবেনা।
৩২. কেগিজা খিম্আ (অসবর্ণ বিবাহ)ঃ
গারো সমাজে বিবাহ সম্পূর্ণরূপে অসবর্ণ বিবাহ নিয়ম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। বিশ্বের অন্যান্য সমাজের নিকট বিবাহের এই কঠোর নিয়ম আশ্চর্য্যের মনে হতে পারে কিন্তু গারো বিবাহ সর্বতোভাবে অসবর্ণ বিবাহ প্রথা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। গারো সমাজে এই নিয়মানুযায়ী পরস্পর একই মাহারীভূক্ত (উপগোত্র) ছেলেমেয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারেনা। যেমন-কোন রিছিল ছেলে কোন রিছিল মেয়েকে বিয়ে করতে পারেনা, কোন মানখিন মেয়ে কোন মানখিন ছেলেকে বিয়ে করতে পারেনা, তাদের মধ্যে রক্ত সম্পর্কিত আত্মীয়তার বন্ধন থাকুক বা নাই থাকুক। যদি কেউ এর ব্যতিক্রম করে তবে সমাজ তাদেরকে পরিত্যাগ করবে এবং বাধ্য হয়ে তাদেরকে একঘরে অবস্থায় বসবাস করতে হবে। এভাবে তারা পারিবারিক সম্পত্তির উত্তরাধিকারীত্বও হারাবে। অবশ্য তাদের পরিবর্তে তাদের ছেলেমেয়ের উপর সম্পত্তির উত্তরাধিকারীত্ব বর্তাবে। আগেদার দিনে এরকম দোষী ব্যক্তিদ্বয়কে তাদের AvZ¥xq¯^R‡biv হত্যা করে ফেলতেও দ্বিধাবোধ করতোনা।
৩৩. নক্রম (পরিবারের উত্তরাধিকারিনীর ¯^vgx)
পরিবারের মেয়ে যদি সম্পত্তির ভাবী উত্তরাধিকারিনী অর্থাৎ নক্না হয়ে থাকে তবে তার ¯^vgx নক্রম অর্থাৎ ঘরজামাইয়ের অধিকার দাবী করতে পারবে। অন্যথায় কেবলমাত্র সাধারণ জামাই হিসেবে গণ্য হবে এবং সেমতই সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবে। বিয়ের পর হতে নক্রম যথাসময়ে শ্বশুরের অধিকার এবং মর্যাদায় সমাসীন না হওয়া পর্যন্ত শ্বশুর বাড়ীতেই স্থায়ীভাবে বসবাস করবে। নক্রম নির্বাচন আসলে অনেক আগে থেকেই হয়ে থাকে, বলতে গেলে বাল্যাবস্থাতেই। এক্ষেত্রে ছেলেমেয়ে উভয়পক্ষের অভিভাবকগণ একত্রে বসে আলোচনাক্রমে নক্না এবং নক্রম নির্বাচন করে থাকে। গারোরা ঐ আলোচনাকে সান্দিয়ানী বলে থাকে। ঐ আলোচনা বা অনুষ্ঠানের সময় নির্বাচিত নক্না এবং নক্রমকে পরস্পরের মুখদর্শন করানো হয়। একে গারো ভাষায় মেসকানী বলে। অবশ্য পরিণত বয়সে নির্বাচিত নক্না নক্রম পরস্পর সম্মতি কিংবা অসম্মতি প্রকাশ করতে পারে। তবে অসম্মতি প্রকাশ করলে পর্যাপ্ত কারণ দেখাতে হবে।
৩৪. চাওয়ারী (পরিবারের উত্তরাধিকারিনী মেয়ে ব্যতিত অন্যান্য মেয়েদের ¯^vgx)
পরিবারের জামাতা যদি চাওয়ারী অর্থাৎ সাধারণ ঘরজামাই হয়ে থাকে তবে সে বিয়ের পরে শ্বশুর বাড়ী হতে কিছুদূরে অন্যত্র বসবাস শুরু করবে। যদি কোন কারণে উক্ত দম্পত্তি অন্যান্য AvZ¥xq¯^R‡bi সঙ্গে সাময়িক বসবাস করে তবে তারা অবশ্যই পৃথাগান্নে বসবাস করবে এবং যতদূর সম্ভব তাড়াতাড়ি নিজস্ব বসতবাড়ী নির্মাণপূর্বক সেখানে বসবাস শুরু করবে। ¯^vgxi আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে বসবাস করতে গেলেও এ নিয়ম সমভাবে প্রযোজ্য।
৩৫. আখিম্ খাংআঃ
অন্য কোন ভাষায় এ আইনের নির্ভুল সংজ্ঞা অথবা ব্যাখ্যা দেয়া যায় না। এই আইনানুযায়ী কোন বিধবা অথবা বিপত্মীক তার ¯^vgx কিংবা স্ত্রীর মৃত্যুর পরে সংশ্লিষ্ট মাহারী হতেই পরবর্তী ¯^vgx অথবা স্ত্রী গ্রহণে বাধ্য থাকবে। উপরন্তু এই প্রথায় বিধবা অথবা বিপত্মীক এদের কেউ ¯^vaxbfv‡e নিজের পছন্দমতো অন্য কোন মাহারীর সদস্য অথবা সদস্যাকে বিয়ে করতে পারেনা বা একত্রে বসবাস করতে পারবেনা। কেবলমাত্র কোন বিশেষ ক্ষেত্রে মাহারী যখন পুনবিবাহের জন্য কাউকে প্রদান করতে পারেনা তখনই মাহারী বিধবা অথবা বিপত্মীক ব্যক্তিটিকে আখিম্ আইনের দায়মুক্ত করে দেবে। এক্ষেত্রে আখিম্ দায় হতে মুক্ত ব্যক্তিটি সামাজিক প্রথানুযায়ী দেব্রানী বাবদ ৫০০.০০(পাঁচশত) টাকা সংশ্লিষ্ট মাহারীকে প্রদান করবে।
মেজর প্লেফেয়ার, যিনি বহু বছর গারো পাহাড় জেলার ডেপুটি কমিশনার ছিলেন, তিনি তাঁর দি গারোস নামক বইয়ে এক জায়গায় লিখেছেন, ‘‘সমপ্রতি আখিম্ আইন বা প্রথা সরকারীভাবে ¯^xK…Z নয়, যদিও জনসাধারণ উক্ত প্রথাটি নিষ্ঠার সঙ্গে মেনে চলেন।” এ থেকে বুঝা যায়, আখিম্ প্রথা এককালে সরকার কর্তৃক ¯^xK…Z ছিল বা পরবর্তীতে অবহেলিত হয়ে গেছিল। কিন্তু বর্তমান নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, আখিম্ প্রথা সামাজিকভাবে ¯^xK…Z এবং জনসাধারণ সর্বতোভাবে উহা মেনে চলে, বরং বলা চলে এই প্রথা গারোদের মুল সমাজ কাঠামোকে রক্ষা করে চলেছে।
৩৬. গ্রো চত্আনি (দায় পরিশোধ)ঃ
¯^vgxi মৃত্যুর পর বিধবা স্ত্রীর বয়স এবং সামাজিক মর্যাদা যাই থাকুক না কেন, সে তার মৃত ¯^vgxi মাহারী হতে তার জন্য দ্বিতীয় ¯^vgxi সরবরাহের দাবী করতে পারে। এক্ষেত্রে মৃত ¯^vgxi মাহারী বিধবাটির জন্য দ্বিতীয় ¯^vgxi প্রদানে Z¡ivwš^Z হবে। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত বিধবাটি অথবা তার মাহারী মৃত ¯^vgxi মাকে কিংবা তার অবর্তমানে তার মাহারীর মধ্যে মাতৃস্থানীয়া অন্য কাউকে প্রথম ¯^vgxi মৃত্যু বাবদ সমস্ত দায়-দেনা পরিশোধ না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত মৃত ব্যক্তির মাহারী বিধবাটিকে দ্বিতীয় ¯^vgxi প্রদানের কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেনা। উক্ত দায়দেনা নিম্নবর্ণিত অবস্থাবর দ্রব্যাদির সমমূল্যের হবে এবং যে আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে বিধবাটি তার মৃত ¯^vgxi মাতৃপরিবারে এই আবেদন পেশ করে সেটিকে রান্ডি মিক্চী গাল্লা(বিধবার অশ্রুমোচন) বলা হয়। ঐ আনুষ্ঠানিকতায় নিম্নবর্ণিত দ্রব্যাদি কিংবা উহার সমতুল্য প্রদান করা হয়।
৩৬.১ দেব্রানিঃ
একখন্ড কাপড় কিংবা কাপড়েরর মূল্য, যে কাপড় দিয়ে গারো মহিলারা পিঠে শিশু বেঁধে রাখে।
৩৬.২ চ্রিনিঃ
ক্ষুদ্রাকৃতি একটি ধনু অথবা উহার সমতুল্য যে ধনুর সাহায্যে গারো ছেলেরা শিকারের খেলা করে থাকে।
৩৬.৩ খিম্ গিসিনীঃ
ছেলের বিয়ের সময় পিতামাতা যেসব জিনিসপত্রাদি দিয়েছিল সেগুলোর সমতুল্য। অবশ্য উহার পরিমাণ অনুর্ধ্ব ৩,০০০.০০(তিন হাজার) টাকা হবে।
৩৬.৪ আসি পিন্আনি ঃ
যে কাপড়ের সাহায্যে মৃত ব্যক্তির মা অথবা তার অবর্তমানে মাহারীর অন্য কোন মাতৃস্থানীয়া মহিলা মৃতদেহটি ঢেকে দিয়েছে, সেই কাপড়ের মূল্য।
৩৬.৫ মাৎচু দেনআনীঃ
একটি গরুর মূল্য, যে গরুটি মৃতব্যক্তির পিতামাতা তাদের ছেলের মৃত্যুদিনে এনেছে এবং শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে হত্যা করেছে। বিধবাটির চ্রা-পান্থেরা এই উপলক্ষ্যে বিধবাটিকে যথাসাধ্য সাহায্য করবে। এই সাহায্য প্রদানকে গারো ভাষায় ননা সে ব্রিআ অর্থাৎ ছোটবোনের জন্য ¯^vgx ক্রয় বলে।
৩৭. জিক্ বাংএ খিম্আনী (বহু বিবাহ)ঃ
গারো সমাজে পুরুষের একাধিক বিবাহের প্রচলন রয়েছে তবে উহা কদাচিৎ হয়ে থাকে। একটি পুরুষ একাদিক্রমে দু'বোনকে বিয়ে করতে পারে, কিন্তু তাকে অবশ্যই প্রথমে বড়বোনকে বিয়ে করতে হবে। পরবর্তীতে মাহারী যদি কোন কারণবশত: তার স্ত্রীর ছোটবোনকে চিক্গিত্তে (সহযোগি স্ত্রী) হিসাবে প্রদান করে তবে সে উহা গ্রহণ করতে পারে। অপরদিকে কোন কারণে কোন মধ্য বয়েসী বিধবা মহিলার জন্য কোন তরুণ বা যুবা বয়েসী ব্যক্তিকে যখন ¯^vgx হিসাবে প্রদান করা হয় তখন সংশ্লিষ্ট মাহারী বিশেষ বিবেচনায় যুবকটির সহযোগি স্ত্রী হিসাবে ঐ বিধবার পূর্ব ¯^vgx ঔরষজাত কোন কন্যা সন্তানকে কিংবা উহার অভাবে আত্মীয়দের মধ্য হতে অন্য কোন মেয়েকে প্রদান করতে পারে। অবশ্য খ্রীষ্টধর্মে বিশ্বাসী গারোদের মধ্যে বহু বিবাহের প্রচলন বর্তমানে নেই।
৩৮. জিক্ সে গাল্আনী (বিবাহ বিচ্ছেদ)ঃ
গারো সমাজে বিবাহ বিচ্ছেদের প্রচলন রয়েছে। সাধারণত: ¯^vgx-¯¿x উভয় পক্ষের লোকজন পারস্পরিক সম্মতিক্রমেই বিবাহ বিচ্ছেদের ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে বিবাহিত ¯^vgx-¯¿x একজন বিশেষ করে ¯^vgxB স্ত্রীকে পরিত্যাগ করে পলায়ন করে এবং দূরের কোন গ্রামে গিয়ে অন্য স্ত্রী গ্রহণ করে ঘর-সংসার করে থাকে। এক্ষেত্রে পলাতক ¯^vgx সব সময় আখিম্ আইনের আওতায় থাকবে এবং আখিম্ আইন ভঙ্গজনিত কারণে তার পরিত্যক্ত স্ত্রী এবং তার মাহারীকে ৫,০০০.০০(পাঁচ হাজার) টাকা অর্থদন্ড প্রদানে বাধ্য থাকবে। মাতৃপ্রধান সমাজ হিসাবে পরিবারের স্ত্রীর কর্তৃত্ব এবং কারণে অকারণে স্ত্রীর মাহারী কর্তৃক পারিবারিক বিষয়সমূহে হস্তক্ষেপ জনিত কারণে বস্তুত: ¯^vgx পরিবারে কোণঠাঁসা হয়ে থাকে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে ¯^vgx স্ত্রীকে ভুল বুঝাবুঝির কারণ ঘটায়, যার পরিণতিতে ¯^vgx স্ত্রীকে বিচ্ছেদের সৃষ্টি হতে পারে।
DËivwaKvi AvBb
গারো সমাজ মাতৃপ্রধান। বংশধারা পিতার দিক হতে গণনা করা হয়না, বরং মায়ের দিক হতে গণনা করা হয় এবং মেয়েরাই পারিবারিক সম্পত্তির উত্তরাধিকারিনী। ছেলেরা কোনসময় পারিবারিক সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হতে পারে না, এমনকি বিয়ের আগ মূহুর্ত পর্যন্ত মাতৃগৃহে অবস্থানকালে তারা তাদের নিজ কায়িক পরিশ্রমের মাধ্যমে যা কিছু উপার্জন করে তাও তারা নিজের বলে দাবী করতে পারেনা। ছেলে বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ী চলে যায় সেখানে নতুন সংসার গড়তে। এ সময়ে স্ত্রীর মাহারীর লোকজনেরা তাদেরকে যথাসাধ্য সাহায্য-সহযোগিতা করে থাকে।
একথা সত্য যে, বিয়ের পর ছেলে শ্বশুরবাড়ী এবং স্ত্রীর একান্ত আপনজন হয়ে যায়। এক কথায় সেই পরিবারেরই একজন সদস্য হিসাবে গণ্য হয়ে যায়। তখন হতেই সে উক্ত পরিবারের উন্নতি সাধন, স্ত্রীর ভরণপোষণ ও ছেলেমেয়েদের প্রতিপালনে সচেষ্ট হয়ে ওঠে। কিন্তু তাই বলে সে তার নিজস্ব সত্ত্বা হারিয়ে ফেলেনা। সে তার মাহারী নামেই পরিচিত থাকবে এবং সবসময়েই তার মাহারীর লোকজন তার নিরাপত্তা ও ¯^v_©i¶vq সজাগ থাকবে। যেকোন বিপদ অথবা প্রয়োজনের সময় তারা তার পাশে এসে দাঁড়াবে।
বিবাহ বন্ধনের মাধ্যমে এভাবেই দুই মাহারীর সংযোগ স্থাপিত হয়। বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের ফলে উভয় মাহারীর মধ্যে যে দুটি প্রধান দায়-দায়িত্ব জন্মায় সেগুলো নিম্নরূপঃ
(ক) স্ত্রী পক্ষের মাহারীর লক্ষ্য থাকবে পরিবারের স্থাবর-অস্থাবর সমুদয় সম্পত্তি যাতে স্ত্রীর কর্তৃত্বাধীনেই থাকে এবং এর কোনরকম অপব্যয় না ঘটে।
(খ) অপরদিকে ¯^vgxi মাহারী খেয়াল রাখবে বংশানুক্রমে তাদের মাহারী হতেই যেন জামাতা এবং ভাবী উত্তরাধিকারী নির্বাচন করা হয়।
f~m¤úwË msµvš— DËivwaKvi AvBb
পূর্ব পুরুষদের দ্বারা অধিকৃত এবং মালিকানানুযায়ী গারোদের জমিজমা বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত এবং বিভিন্ন নামে পরিচিত হয়ে থাকে।
৩৯. আকিংঃ
আকিং বা এলাকা বলতে আবহমানকাল হতে পারিবারিকভাবে অধিকৃত ভূসম্পত্তিকে বুঝাবে। বংশানুক্রমে এই সম্পত্তির উত্তরাধিকারীত্ব মা হতে মেয়েতে বর্তাবে।
৪০. আমাতে (হস্তান্তরিত ভূসম্পত্তি)ঃ
এই ধারায় আকিং নক্মা কর্তৃক কারো উপর সন্তুষ্ট হয়ে তাকে কিছু এলাকা দান করে হস্তান্তর করাকে বুঝাবে। এক্ষেত্রে আকিং নক্মা উক্ত দানকৃত এলাকার উপর তার সমস্ত কর্তৃত্ব এবং অধিকার প্রত্যাহার করে নিবে, যার ফলে নতুন মালিকের উপর ঐসব অধিকার ও কর্তৃত্ব পূর্ণমাত্রায় বর্তাবে। ঐক্ষেত্রে বর্তমান মালিক আমাকে নক্মা পরিচিত লাভ করবে। অবশ্য বর্তমানে এই নামাকরণে কোন পার্থক্য নাই। বর্তমানে সকল প্রকৃত নক্মাই আকিং নক্মা হিসাবে পরিচিত।
৪১. আমিল্লাম্ (তরবারি দ্বারা অর্জিত ভূসম্পত্তি)ঃ
আমিল্লাম্ মানে যুদ্ধ জয়ের দ্বারা অধিকৃত জমিকে বুঝাবে। কোন নক্মা কর্তৃক যুদ্ধে অন্য নক্মাকে পরাজিত করে তার ভূসম্পত্তি দখল করে নিলে আমিল্লাম্ হিসাবে গণ্য হবে। অন্যদিকে সরকারী খাস জমিকেও আমিল্লাম্ বুঝায়। এ জাতীয় জমি যে কেউ তার নিজের জন্য এবং তার পরিবারের লোকজনের জন্য অধিকার করে নিতে পারে এবং জঙ্গল পরিষ্কার করে চাষাবাদ করতে পারে। এরকম জমি যদি আয়তনে বড় হয়ে থাকে তবে আকিং নামে অভিহিত হতে পারে এবং এর মালিককে নক্মা অভিহিত করা যাবে। বর্তমানে এরকম জমির মালিককে নক্মা বলে অভিহিত করা হয়না বটে কিন্তু প্রকৃত নক্মার সকল ক্ষমতা এবং সুবিধাদি তারা ভোগ করে থাকে।
৪২. নক্নি আবা (গৃহকর প্রদানযোগ্য জমি)ঃ
গারোরা ঝুম পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে থাকে। ঝুম চাষের জন্য প্রতিটি পরিবারকে একেকটি খন্ড জমি প্রদান করা হয়। ঐরকম অনেকগুলো জমির mgš^‡q আকিং গঠিত হয়। সাধারণত: ঝুম পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে প্রতিবছর নূতন নূতন জমি পরিবর্তন করতে হয়, তা না হলে জমিতে রীতিমতো ফসল উৎপন্ন হয়না। কিন্তু কোন কোন জমির অত্যধিক উর্বরতার কারণে ফসল ভাল জন্মালে এবং জমিটি বসবাসের উপযোগি হলে সেখানে অনেকেই স্থায়ীভাবে বসবাস করতে আরম্ভ করে এবং ¯^vfvweKfv‡eB জমিটি তাদের দখলে চলে যায় ও বংশানুক্রমে ভোগদখলের অধিকার ¯^xK…Z হয়। অবশ্যই ঐ জাতীয় জমি কোনরকম হস্তান্তরযোগ্য নহে। জমির ভোগ-দখল বাবদ কোন খাজনা তাদেরকে দিতে হয়না কিন্তু গৃহকর বাবদ তারা প্রতিবছর সরকারকে কিছু টাকা প্রদান করে থাকে। ঐ জাতীয় জমির উপর মাহারীর কোন অধিকার অথবা নিয়ন্ত্রণ থাকে না। ঐ শ্রেণীর জমিকে নক্নি আবা বলা হয়।
৪৩. সরকারী আবা (খাজনা প্রদানযোগ্য ভূসম্পত্তি)ঃ
আকিং এলাকার জমি ব্যতিত জেলার অন্যান্য জমি সরকারের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণাধীনে থাকে। এর কিছু অংশ সংরক্ষিত বনভূমি, কিছু অংশ স্থানীয় অধিবাসীদের দখলে এবং কিছু অংশ ব্যক্তি বিশেষকে বন্দোবস্ত দেয়া হয়ে থাকে। এ ধরণের বন্দোবস্তকৃত জমিকেই স্থায়ীভাবে ধানচাষোপযোগি জমি বলা হয় এবং ঐসব জমির মালিকরা নিজের ইচ্ছানুযায়ী যে কোনরকম হস্তান্তর অথবা বিক্রি করতে পারে। পূর্বোক্ত ধারায় বর্ণিত গৃহকর প্রদানযোগ্য জমিকেও সরকার ইচ্ছা করলে আকিং নক্মার নিকট হতে নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে এবং জনসাধারণের নিকট বন্দোবস্ত প্রদান করতে হবে। এক্ষেত্রে সরকার আকিং নক্মাকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করবে এবং উক্ত জমির বন্দোবস্ত গ্রহণকারীকে কবুলিয়ত পাট্টা দলিল প্রদান করবে।
৪৪. গাম্ (অস্থাবর সম্পত্তি)ঃ
গাম্ বলতেসকল প্রকারের অস্থাবর সম্পত্তিকে বুঝাবে। ঐসব সম্পত্তি অথবা দ্রব্যাদি বংশ পরম্পরায় উত্তরাধিকারী সূত্রে প্রাপ্য। রাং, গান্সারীপক, রিকনাকগ্, দানিল, মিল্লাম, ক্রাম প্রভৃতি এবং গৃহের আসবাবপত্র ও চাষাবাদের সরঞ্জামাদি ঐসব সম্পত্তির অন্তর্ভূক্ত। ঐসব সম্পত্তির উপর মাহারীর কোন নিয়ন্ত্রণ থাকেনা, কিন্তু উল্লেখিত জিনিসগুলো কেউ যদি বিক্রি করে অথবা কোনভাবে হস্তান্তর করে তাহলে তার সুনামের উপর প্রভাব পড়বে এবং AvZ¥xq¯^Rb তাকে দায়িত্বজ্ঞানহীন, কর্তব্যপরাম্মুখ এবং পূর্বপুরুষের স্মৃতিসমূহকে অবজ্ঞাকারী মনে করবে।
৪৫. সম্পত্তির শ্রেণী ভাগঃ
আগেকার দিনে গারো সমাজে উত্তরাধিকারীসূত্রে প্রাপ্ত এবং অধিকৃত সম্পত্তির মধ্যে কোন পার্থক্য ছিলনা, তবে বর্তমানে আইন আদালতে আশ্রয় গ্রহণের সুবিধাহেতু উক্ত সম্পত্তিসমূহ আলাদা আলাদা করে দেখানো হয়। উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তিকে গারোরা বিশেষ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে এবং ঐ জাতীয় সম্পত্তি বিক্রয়যোগ্য বলে বিবেচিত হয়না।
অন্যদিকে নিজের কষ্টার্জিত ভূসম্পত্তি বিক্রয় অথবা অন্য কোন রকম হস্তান্তরের ক্ষেত্রেও গৃহকর্তাকে গৃহের নক্মা এবং নক্রমের সম্মতি নিতে হবে এবং সে সময় তারা যদি অসম্মতি প্রকাশ করে তবে উক্ত ভূসম্পত্তি বিক্রয় অথবা হস্তান্তর করা যাবে না। এক্ষেত্রে মাহারীর স্মরণাপন্ন হতে হবে এবং তারাই আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
cyi“‡li AwaKvi
(ক) কোনরকম সম্পত্তি সরাসরিভাবে পুরুষের অধিকারে থাকবেনা, যদিও পুরুষ পরিবারের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক হিসাবে পরিগণিত।
(খ) কোন পুরুষ উত্তরাধিকারীসূত্রে কোন সম্পত্তির অধিকারী হবেনা এবং দানসূত্রে অথবা অন্য কোন উপায়ে যদি কোন সম্পত্তি তার অধিকারে আসে, তবে সে উহা তার নামে রাখতে পারবেনা, কিন্তু সে উহা তার মা অথবা স্ত্রীর কাছে জমা দিবে।
(গ) কোন পুরুষ কাউকে দান অথবা অন্য কোন উপায়ে কোন সম্পত্তি দিতে পারেনা, যেহেতু সত্যিকার অর্থে সে কোন সম্পত্তির অধিকারী নহে।
(ঘ) কোন পুরুষ নিজের কাছে কোন টাকাকড়ি রাখতে পারেনা। তবে কোথাও যাবার জন্য যাত্রা খরচ বাবদ এবং ব্যবসা-বাণিজ্য উপলক্ষে প্রয়োজনীয় টাকাকড়ি সে নিজের কাছে রাখতে পারে।
৪৬. পান্থে গিতা (অবিবাহিত যুবক হিসাবে)ঃ
অবিবাহিত অবস্থায় মাতৃগৃহে থাকাকালে ছেলে যা কিছু উপার্জন করে তা মায়ের অধিকারেই থাকবে। এক্ষেত্রে ছেলে মাতৃগৃহে থাকুক অথবা নাই থাকুক তার উপার্জনের সমুদয় টাকাকড়ি মায়ের সম্পত্তি বলে গণ্য হবে। ছেলে যখন কর্মক্ষম হয়ে উঠে তখন তাকে কিছু পরিমাণ জমি আলাদাভাবে চাষাবাদ করার জন্য দেয়ার প্রথা গারো সমাজে বিদ্যমান। গারোরা সেটিকে আতত্ বলে। পরিবারের অন্যান্য কাজকর্ম নিয়মিত করার ফাঁকে ফাঁকে গারো ছেলেরা সেই জমিতে নিজের পছন্দানুযায়ী চাষাবাদ করে ফসল উৎপন্ন করে এবং উৎপন্ন ফসলের বিক্রয়লব্ধ অর্থে তার ব্যক্তিগত প্রয়োজনীয় ছোটখাটো জিনিসপত্র যেমন-তেল, সাবান, বই, পুস্তক প্রভৃতি নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্রাদি ক্রয় করে। এতে স্পষ্টত:ই বুঝা যায় যে, ঐ রকম ব্যক্তিগত ছোটখাটো জিনিসপত্র কেনার ব্যাপারে ¯^vej¤^x করার উদ্দেশ্যেই গারো পিতামাতা বয়ো:প্রাপ্ত ছেলেদের আতত্ দিয়ে থাকে। কোন কোন সময় গারো ছেলেরা অন্যের বাড়ীতে এমনকি অন্য গ্রামেও চুক্তিতে কাজ করে থাকে। ঐ কাজ দু’রকমের হতে পারে। যথাঃ (ক) চাকর হিসাবে, গারো ভাষায় যাকে চাক্কল বলা হয় এবং (খ) গোলাম হিসাবে, গারো ভাষায় যাকে নক্কল বলা হয়। প্রথমোক্ত ক্ষেত্রে ছেলে তার কাজ বাবদ নির্দিষ্ট বেতন পাবে। সে থেকে নিজের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রাদি কেনার জন্য কিছু পরিমাণ টাকা নিজের কাছে রেখে বাকী সবটুকু টাকা তার মাকে দিয়ে দেবে।
দ্বিতীয় ক্ষেত্রে অর্থাৎ নক্কলের ক্ষেত্রে ছেলে তার বেতনের সমুদয় টাকা তার মাকে দিয়ে দেবে অর্থাৎ কোন দেনা পরিশোধের জন্যই সে নির্দিষ্ট সময় অন্যের বাড়ীতে গোলামী খাট্বে। সাবালক ছেলে সম্ভব হলে তার কায়িক পরিশ্রমের টাকায় গরু বাছুরও কিনতে পারে। কিন্তু ¯^vfvweKfv‡eB সেগুলো পরিবারের সম্পত্তি হিসাবে গণ্য হয়ে যাবে। ছেলে যদি নিজের বাড়ীতে বসবাস না করে কোন নিকটাত্মীয় যেমন-বোন, মাসী প্রভৃতির বাড়ীতে বসবাস করে তবে তারা উক্ত ছেলের উপার্জিত অর্থসম্পদ ভোগ করতে পারবে। কিন্তু অন্য মাহারীর বাড়ীতে বসবাস করলে সেই মাহারীর লোকজন কোনক্রমেই তা ভোগ করতে পারবে না। ছেলে অবিবাহিত অবস্থায় মারা গেলে অথবা অন্যত্র পলায়ন করলে তার সম্পত্তি তার মায়ের অধিকারে চলে যাবে। অবশ্য ছেলের অসুখ বিসুখের সময় তার চিকিৎসা, ঔষধপত্র এবং পূজা-পার্বনের সমস্ত ব্যয়ভার মা বহন করবেন। ছেলের অবিবাহিত অবস্থায় মা মারা গেলেও প্রধানত: সৎ মা এবং মাহারীর তত্ত্বাবধানেই ছেলেরা থাকে। বর্তমানে অবশ্য এর কিছু কিছু পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। বিশেষ করে মায়ের মৃত্যুর পর ছেলে যদি অন্য কারোর বাড়ীতে গিয়ে বসবাস করতে আরম্ভ করে, তবে তার উপর সৎ মায়ের অধিকার অনেকটাই কমে যায়। অতএব, দেখা যায় সামাজিক এইসব নিয়ম-কানুনের ফলেই ছেলেরা কোন সময় মায়ের অবাধ্য হতে পারেনা। কারণ সবসময়ই AvZ¥xq¯^Rb অর্থাৎ মাহারীর লোকজন মায়ের ¯^c‡¶ থাকবে এবং মাহারীর সিদ্ধান্ত বর্তমানকালেও সর্বজনগ্রাহ্য।
৪৭. চাওয়ারী গিতা (জামাতা হিসাবে)ঃ
বিয়ের দিন ছেলে তার আতত্ হতে উপার্জিত যৎসামান্য নিজস্ব টাকাকড়ি এবং কাপড়-চোপড় নিয়ে শ্বশুরবাড়ীতে চলে যাবে। এর অতিরিক্ত সে কিছুই দাবী করতে পারেনা অথবা নিয়ে যেতে পারেনা, এমনকি পিতৃ-মাতৃ গৃহে অবস্থানকালে সে যদিও বিস্তর পরিমাণে রোজগার করেও থাকে। বিয়ের সময় মা-বাবা ইচ্ছে করলে ¯^vfvweK স্নেহবশত: ছেলেকে Dc‡XŠKb¯^iƒc সামান্য কিছু দিয়ে থাকে। বিয়ের দিন ছেলেটি যা কিছু তার সঙ্গে নিয়ে যায় সেসব নতুন সংসারের সম্পদ হয়ে যায় এবং স্ত্রীর অধিকারে চলে যায়। কোন কোন সময় নতুন সংসারে অভাব এবং অসুবিধা দূর করার অভিপ্রায়ে ছেলের মা-বাবা তাদের জমিজমার কিছু অংশ ছেলে এবং বৌকে ধার হিসাবে দিতে পারে। কিন্তু মা-বাবার সম্মতি ব্যতিত ছেলে কোনক্রমেই কোন কিছু গ্রহণ করতে পারেনা। এই ধার নেয়ার ব্যাপারে ছেলে পরবর্তীকালে তার মাকে অথবা তার অবর্তমানে নক্নাকে অর্থাৎ পরিবারের উত্তরাধিকারিনী হিসাবে নির্বাচিতা বোনকে পরিশোধ করে দিতে বাধ্য থাকবে। আর ছেলের অবর্তমানে অথবা তার মৃত্যুরপরে তার স্ত্রী অথবা বংশানুক্রমে তার মাহারীর লোকেরা উক্ত ঋণের দায়ে থাকবে।
৪৮. মিয়াপা গিতা (¯^vgx অথবা পিতা হিসাবে)ঃ
সারাজীবন ¯^vgx যা কিছু উপার্জন করে তার সবকিছুই স্ত্রীর অধিকারে থাকবে। কাজেই পুরুষ মূখ্যত: পরিবারের ZË¡veavqK¯^iƒ‡cB পরিগণিত থাকে। পারিবারিক প্রয়োজনে উত্তরাধিকারীসূত্রে প্রাপ্ত কোন মূলধন ব্যবহার করতে হলে ¯^vgxতার স্ত্রী, পরিবারের নক্না, নক্রম এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে মাহারীর সম্মতি নিবে। অবশ্য বর্তমানে পারিবারিক উন্নতিকল্পে কোন সৎকাজে ¯^vgx তার সংসারের মূলধন নিজের ইচ্ছানুসারে ব্যবহার করতে পারেন। এক কথায় নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারলে ¯^vgx সংসার পরিচালনায় তার ইচ্ছানুযায়ী সম্পদের ব্যবহার করতে পারবে। কিন্তু যখনই সংসার পরিচালনায় তার অযোগ্যতা প্রকাশ পাবে তখনই মাহারীর লোকেরা তার কাজে হস্তক্ষেপ করবে।
৪৯. নক্রম গিতা (পরিবারের উত্তরাধিকারিনী মেয়ের ¯^vgx হিসাবে)ঃ
বিয়ের দিন নক্রম তার সঙ্গে যে সব জিনিসপত্রাদি তার মায়ের বাড়ী হতে আনয়ন করে তৎসমুদয় সে তার শ্বাশুড়ীর নিকট হস্তান্তর করবে এবং শ্বাশুড়ীই আজীবন পরিবারের কর্ত্রী হিসাবে সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করবে। তার মৃত্যুর পর সেগুলোসহ সংসারের যাবতীয় পারিবারিক স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ নক্নার উপর অর্থাৎ নক্রমের স্ত্রীর উপর বর্তাবে। এভাবে শ্বশুরও আজীবন পরিবারের তত্ত্বাবধায়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করবে।
৫০. ওয়াংগিপা পিতা (সৎ পিতা হিসাবে)ঃ
কোন পুরুষ যখন কোন বিধবাকে বিয়ে করে তখন সে ¯^vfvweKfv‡eB উক্ত পরিবারের তত্ত্বাবধায়ক হিসাবে গণ্য হয়ে যায়। অবশ্য সে উহার বেশী কিছু দাবী করতে পারেনা এবং পরিবারের উন্নয়নমূলক কোন কাজে পরিবারের সম্পদ ব্যবহারের ক্ষেত্রে মাহারীর অনুমোদন গ্রহণ করা তার অবশ্য কর্তব্য।
৫১. জিক্ সিআংগিমিন (বিপত্মীক হিসাবে)ঃ
বিপত্মীক ব্যক্তিকে পূনরায় স্ত্রী প্রদান না করা পর্যন্ত সে ঐ বাড়ীতেই থাকবে এবং মাহারীর নিয়ন্ত্রণাধীনে থেকে পরিবারের তত্ত্বাবধায়ক হিসাবে সংসার পরিচালনা করবে। যদি কোন কারণবশত: সে দ্বিতীয়বার দারপরিগ্রহ না করে তবে পারিবারিক সম্পত্তি তত্ত্বাবধানের অধিকার পরিবারের নক্রমের হাতে ন্যস্ত হয়ে যাবে। অন্যদিকে উক্ত বিপত্মীক তার মৃতা স্ত্রীর মাহারীর বাইরে অন্য কাউকে যদি বিয়ে করে, তবে সে ঐ পরিবারের কোন কিছু না নিয়ে ঐ গৃহ পরিত্যাগে বাধ্য হবে এবং আখিম্ আইন ভঙ্গের অভিযোগে তার প্রথম স্ত্রীর মাহারীকে ৩,০০০.০০(তিন হাজার) টাকা অর্থদন্ড প্রদানে বাধ্য থাকবে।
৫২. জিক্ সে-ওয়াত্ গ্রিক্গিপা (বিবাহ বিচ্ছেদ প্রাপ্ত পুরুষ)ঃ
পারস্পরিক সম্মতিক্রমে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে থাকলে পুরুষ ঐ পরিবারের কোন কিছু গ্রহণ না করে গৃহত্যাগ করবে। স্ত্রীর দোষে যদি বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে থাকে এবং সে যদি উত্তরাধিকারিনীর অধিকারচ্যূতা হয় তবে যেসব ছেলেমেয়ে তার সঙ্গে যেতে চাইবে সেইসব ছেলেমেয়েসহ স্ত্রী গৃহত্যাগ করবে। বাকী ছেলেমেয়েরা বাড়ীতে তাদের পিতার সঙ্গে থেকে যাবে এবং পরিবারের সম্পত্তি সাময়িকভাবে পুরুষের অধিকারেই থাকবে। এক্ষেত্রে গৃহত্যাগিনী স্ত্রীর মাহারীর লোকজন যতদূর সম্ভব তাড়াতাড়ি মাহারী হতে তার জন্য দ্বিতীয় স্ত্রী প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। দোষী স্ত্রীলোকটিকে মাহারীর লোকজন যদি তাড়িয়ে না দেয় এবং পুরুষটি যদি সংশ্লিষ্ট মাহারী হতে অন্য কাউকে পুনর্বিবাহ করতে রাজী না হলে তবে সে ঐ পরিবার এবং গৃহ পরিত্যাগ করে অন্যত্র চলে যেতে পারে। এক্ষেত্রে সে আখিম্ আইন ভঙ্গের দায়ে পড়বে না এবং অর্থদন্ড প্রদানও করতে হবে না। উপরন্তু উক্ত গৃহ পরিত্যাগ করে চলে যাবার পর সে তার পছন্দানুযায়ী অন্য যে কাউকে বিয়ে করতে পারবে।
৫৩. কাথাংগিপা-গিতা (পলাতক হিসাবে)ঃ
কেউ যদি স্ত্রীকে পরিত্যাগপূর্বক পলায়ন করে তবে সে উক্ত স্ত্রীর সংসার হতে কিছুই নিয়ে যেতে পারবে না। যদি কোন কিছু নিয়েও যায় তবে সে উহা ফেরতদানে বাধ্য থাকবে। আর ফেরতদানের আগেই সে যদি মারা গিয়ে থাকে তবে তার মাহারীর AvZ¥xq¯^Rbiv উহা ফেরতদানে বাধ্য থাকবে। পুরুষের পলায়নের সঙ্গে সঙ্গে বিবাহ বন্ধন ছিন্ন হয়ে যায় না। অতএব অন্যত্র গিয়ে যা কিছু সে উপার্জন করে উহা তার পরিত্যক্ত স্ত্রী এবং ছেলেমেয়েকে পাঠাতে বাধ্য থাকবে। আর সে যদি ওখানে অন্য মেয়েকে বিয়ে করে তবে আখিম্ আইন ভঙ্গের অভিযোগে তার পরিত্যক্ত স্ত্রীকে ৩,০০০.০০(তিন হাজার) টাকা জরিমানা প্রদানে বাধ্য থাকবে, সেই সঙ্গে দ্বিতীয় বিবাহের পূর্বদিন পর্যন্ত তার উপার্জিত সমস্ত টাকাকড়ি তার প্রথম স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদেরকে প্রদানে বাধ্য থাকবে।
`ËK MÖnY
৫৪. আত্মীয়দের মধ্য হতে দত্তক গ্রহণঃ
কোন দম্পতির যখন কোন মেয়ে সন্তান থাকে না অথবা মেয়ে সন্তান থাকলেও সেটি নক্না নির্বাচনের উপযোগি নয়, তখন সেই দম্পতি তাদের নিকটতম আত্মীয়দের নিকট হতে দত্তক গ্রহণ করতে পারে। সেক্ষেত্রে আপন বোনের কন্যা সন্তানকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। তবে এর ব্যতিক্রমও করা চলে।
৫৫. অন্য মাহারী হতে দত্তক গ্রহণঃ
দত্তক গ্রহণেচ্ছুক মা যদি আপন আত্মীয় বা নিজ মাহারীর মধ্য হতে দত্তক গ্রহণ উপযোগি কন্যা সন্তান না পান, তাহলে ইচ্ছা করলে তিনি অন্য মাহারী হতেও দত্তক গ্রহণ করতে পারেন।
৫৬. অজ্ঞাত পরিচয় পিতামাতা হতে দত্তক গ্রহণঃ
হাসপাতাল অথবা শিশু সদন হতে নবজাতক শিশু কন্যাকে দত্তক গ্রহণ করার বিধানও গারো সমাজে বিদ্যমান।
৫৭. দত্তক পুত্র-কন্যাদের সামাজিক অধিকারঃ
দত্তক পুত্র-কন্যাগণ মা-বাবার প্রকৃত সন্তানের মতই পারিবারিক এবং সামাজিক মর্যাদা ভোগ করে থাকে। সেই সঙ্গে তারা পারিবারিক সম্পত্তির উত্তরাধিকারীত্বও লাভ করে অথবা অন্যায় অপরাধের জন্য উত্তরাধিকারীত্বের অধিকার হারায়।
৫৮. ভাবী আকিং নক্মা হিসাবে নির্বাচনযোগ্য ছেলে দত্তক গ্রহণঃ
কোন অপুত্রক আকিং নক্মা এবং তার স্ত্রী যখন তাদের উত্তরাধিকারী হিসাবে কাউকে দত্তক গ্রহণ করতে চান সেক্ষেত্রে ঐ আকিং নক্মা দম্পতির প্রাথমিক দায়িত্ব হবে সঠিকভাবে যাচাই করে দেখা এবং নক্মার স্ত্রীর মাহারীর লোকজনের মতামত গ্রহণ করা যাতে ভবিষ্যতে কোনরকম প্রশ্ন না আসে এবং দত্তক গ্রহণের বৈধ্যতায় চ্যালেঞ্জ না আসে।
weevn we‡”Q`
৫৯. পারস্পরিক সম্মতিক্রমে বিবাহ বিচ্ছেদঃ
যদি দেখা যায় নানা কারণে দম্পতিযুগলের একত্রে বসবাস অসম্ভব প্রায় হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখন পারস্পরিক সম্মতিক্রমে তারা বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে পারে। কিন্তু এখানে যদি কোন পক্ষ দোষী প্রমাণিত হয় তবে সে ৩,০০০.০০ (তিন হাজার) টাকা অর্থদন্ড প্রদানে বাধ্য থাকবে।
৬০. দম্পতিযুগলের কোন পক্ষ যদি বন্ধ্যা কিংবা পুরুষত্বহীন বলে প্রমাণিত হয় তবে সেক্ষেত্রে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটানো যাবে। তবে যে পক্ষ বিবাহ বিচ্ছেদ চায় সেই পক্ষ ৩,০০০.০০(তিন হাজার) টাকা অর্থদন্ড প্রদানে বাধ্য থাকবে।
৬১. অসতী স্ত্রীঃ
অবিশ্বস্তা স্ত্রীকে প্রমাণ সাপেক্ষে ¯^vgx পরিত্যাগ করতে পারে এবং এক্ষেত্রে উক্ত অসতী স্ত্রী ¯^vgx‡K ৩,০০০.০০(তিন হাজার) টাকা অর্থদন্ড প্রদানে বাধ্য থাকবে।
৬২. দোষী পক্ষ কর্তৃক জরিমানা প্রদানঃ
পারস্পরিক সম্মতিক্রমে যদি বিবাহ বিচ্ছেদ সংঘটিত হয় তাহলে কোন পক্ষকেই জরিমানা প্রদান করতে হয়না। কিন্তু কোন পক্ষ যদি অপর পক্ষকে দোষী বলে প্রমাণিত করতে পারে তবে দোষী পক্ষ ৩,০০০.০০(তিন হাজার) টাকা অর্থদন্ড প্রদানে বাধ্য থাকবে।
৬৩. পুনর্মিলনের সুযোগ ঃ
এমন যদি দেখা যায় যে, কারণকে উপলক্ষ্য করে বিবাহ বিচ্ছেদ সংঘটিত হয়েছে, সেটি তেমন মারাত্মক কোন ব্যাপার নয় এবং দম্পতিযুগল পুনর্মিলনে আগ্রহী তবে সেক্ষেত্রে পুনর্মিলন ঘটানো সম্ভব।
৬৪. খ্রীষ্টান দম্পতি কর্তৃক বিবাহ বিচ্ছেদঃ
বিবাহ বিচ্ছেদে ইচ্ছুক দম্পতি যদি খ্রীষ্টান হন তবে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে হবে এবং এক্ষেত্রে দেশের বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত আইন প্রযোজ্য হবে। সামাজিক প্রথাগত আইনানুযায়ী এক্ষেত্রেও দোষী পক্ষকে ৩,০০০.০০(তিন হাজার) টাকা অর্থদন্ড প্রদানে বাধ্য থাকতে হবে। অবশ্য ক্যাথলিক ধর্মমতে বিশ্বাসী খ্রীষ্টানগণ এই ধারার আওতায় নহেন। মান্ডলিক আইনে ক্যাথলিক মন্ডলীতে বিবাহ বিচ্ছেদ হতে পারেনা। মান্ডলিক আইনের ১১৪১ অনুচ্ছেদ অনুসারে বৈধভাবে মন্ডলীতে বিবাহিত পুরুষ এবং মহিলা যদি একত্রে বসবাস করে এবং তাদের যদি দৈহিক মিলন হয় তবে কোন মানুষের ক্ষমতা নেই সে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে অথবা অন্য কোন কারণেও সে বিবাহ বিচ্ছেদ হতে পারেনা। শুধুমাত্র বিবাহিত দম্পতির যেকোন একজনের মৃত্যু তাদের বিবাহের বন্ধন ছিন্ন করতে পারে। (দ্রষ্টব্য: পবিত্র বাইবেলের আদিপুস্তক ২য় অধ্যায় ১৮ হতে ২৪ পদ।)
gwnjv‡`i AwaKvi
৬৫. গাম্নি নক্গিপা (মা হিসাবে সমস্ত পারিবারিক সম্পত্তির মালিক)ঃ
মায়েরাই পারিবারিক সম্পদের প্রকৃত এবং একচ্ছত্র মালিক। নক্রম,অবিবাহিত ছেলে এবং ¯^vgx তাদের ¯^vfvweK জীবনযাত্রা কালে যা কিছু আয় উপার্জন করে তৎসমুদয় পরিবারের মায়ের অধিকারে থাকবে। কোন কোন ক্ষেত্রে অভাবের সময় মা তার অবিবাহিত ছেলেকে টাকার বিনিময়ে অথবা ঋণ পরিশোধের জন্য অন্যের বাড়ীতে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দাসত্ব করতে পাঠাতে পারে।
৬৬. গাম্ রাক্খিগিপা (স্ত্রীরূপে)ঃ
স্ত্রী, যিনি পরিবারের মা, পরিবারের সমস্ত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি তার অধিকারে এবং দায়িত্বে থাকবে। পরিবারের সমস্ত সম্পত্তি এবং তার ¯^vgx পুত্র যা কিছু আয় উপার্জন করে তৎসমুদয় তারই একচ্ছত্র অধিকারে থাকবে। ¯^vgx যদিও সম্পত্তির অংশীদার হিসাবে ¯^xK…Z তথাপি সে তার স্ত্রীর মতামত ব্যতিত পরিবারের সম্পত্তি যথেচ্ছ ব্যবহার করতে পারেনা। নগদ টাকাকড়ি সমস্তই স্ত্রীর নিকট জমা থাকবে।
৬৭. গাম্ মান্রিখ্গিপা (নির্বাচিতা উত্তরাধিকারিনীরূপে)ঃ
প্রতিটি পরিবারের জন্য পরবর্তী উত্তরাধিকারিনী হিসাবে পরিবারের একট মেয়েকে নির্বাচন করা হয়। গারো ভাষায় তার পদবী নক্না। সাধারণভাবে পরিবারের কনিষ্ঠা কন্যাকেই নক্না নির্বাচন করা হয়ে থাকে এবং মা-বাবা উভয়ে পরামর্শ ও পছন্দ করেই পরিবারের জন্য নক্না নির্বাচন করে থাকে। তবে নক্না নির্বাচনে উভয়ের মধ্যে মতের অমিল দেখা দিলে মায়ের মতের উপরই বেশী গুরুত্ব প্রদান করা হয়। বিয়ের পর নক্না তার ¯^vgxmn বাপ-মায়ের বাড়ীতেই বসবাস করে এবং বাপ-মায়ের মৃত্যুর পর সম্পত্তির উত্তরাধিকারিনী হয়। নক্নাকে অবশ্য তার মাহারীর লোকজন কর্তৃক বিশেষভাবে চ্রা পান্থে কর্তৃক নির্বাচিত ছেলেকে বিয়ে করতে রাজী থাকতে হয়। ছেলেটি তার পিতার মাহারীর অন্তর্ভূক্ত হতে হবে বিশেষ করে তার পিতার ভাগ্নে হতে হবে। গারো ভাষায় উক্ত জামাইকে বলা হয় নক্রম। পরিবারের জন্য নির্বাচিত নক্না মেয়ে মাহারীর লোকজনদের নিকট হতে নিজে যেমন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকে, তেমনি মাহারীর প্রতিও তার দায়-দায়িত্ব রয়েছে। পরিবারের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি সে যেমন ভোগদখল করে তেমনি উহার সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও তার এবং পরবর্তীকালে তার উত্তরাধিকারিনীর হাতে সঠিকভাবে হস্তান্তর করে দেয়ার দায়িত্বও তার।
৬৮. দেরাগাৎগিপা (দত্তক কন্যা)ঃ
কোন দম্পত্তির কন্যা সন্তান না থাকলে স্ত্রীর মাহারীর লোকজন তাদের মাহারী হতে উক্ত দম্পতির জন্য দত্তক কন্যা প্রদান করবে এবং সেই দত্তক কন্যাই পরবর্তীতে উক্ত দম্পতির সমুদয় সম্পত্তির উত্তরাধিকারিনী হবে। মাহারীর মধ্যে যদি সেরকম কোন উপযুক্ত মেয়ে পাওয়া না যায় তবে তারা অন্য মাহারীর মেয়েকেও দত্তক হিসাবে গ্রহণ করতে পারে। এক্ষেত্রে উক্ত মেয়ের এবং তার সংশ্লিষ্ট মাহারীর পূর্ণ সম্মতি থাকতে হবে। এভাবে গৃহিত দত্তক কন্যা প্রকৃত নক্নার মতোই পরিবারের উত্তরাধিকারিনী এবং সমুদয় ক্ষমতার অধিকারী হবে।
৬৯. নক্না রাআ (স্ত্রী হিসাবে দত্তক গ্রহণ)ঃ
নক্না হিসাবে দত্তক গ্রহণ না করে জিক্গিত্তে (সহযোগি স্ত্রী) হিসেবেও গ্রহণ করা যায়। এভাবে দত্তক হিসাবে সহযোগি স্ত্রী প্রকৃত নক্নার মতোই সম্পত্তিতে পূর্ণ অধিকার জন্মাবে এবং মৃত্যুর পর বংশধরেরাও উত্তরাধিকারীত্ব লাভ করবে। এক্ষেত্রে নক্রমের জায়গায় দত্তক গ্রহণকারীই তার ¯^vgx হবে।
৭০. আগাত্তে (নক্না ব্যতিত পরিবারের অন্য মেয়েরা)ঃ
পরিবারের জন্য নির্বাচিত কন্যা সন্তান নক্না থাকলে পরিবারের অন্যান্য কন্যা সন্তানগণ পরিবারের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির কিছুই পাবেনা। নির্বাচিত নক্না যদি বিয়ের আগেই মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তবে পরিবারের জন্য অবিবাহিতা কন্যাকে নক্না নির্বাচন করা যাবে। আর পরিবারের সব ক’টি মেয়ে যদি ইতোমধ্যেই বিবাহিতা হয়ে থাকে, তবে যে মেয়েটি পিতার মাহারীভূক্ত ছেলেকে বিয়ে করেছে তাকে নক্না নির্বাচন করা যাবে এবং উক্ত মেয়ের ¯^vgx নক্রমের অধিকার পাবে। যদি এরকম নক্রমের উপযোগি কাউকে পাওয়া না যায়, তবে তাদেরই মধ্য হতে যেকোন পছন্দসই মেয়ে জামাইকে মাহারীর লোকজনের সম্মতি সাপেক্ষে নক্না নক্রম নির্বাচন করা যেতে পারে। অন্যথায় মাহারীর মধ্য হতে কোন অবিবাহিতা মেয়েকে দত্তক হিসাবে গ্রহণ করে পরিবারের নকনা নিযুক্ত করা যাবে এবং এক্ষেত্রেও মাহারীর লোকজন মূখ্য ভূমিকা পালন করবে।
৭১. অন্ সংআ (দ্বিতীয় স্ত্রী প্রদান)ঃ
প্রথম স্ত্রী মারা যাবার পর মাহারী কর্তৃক যে মেয়েটিকে বিপত্মীক ব্যক্তিটির জন্য দ্বিতীয় স্ত্রী হিসাবে প্রদান করা হবে সেও প্রথম স্ত্রীর মতোই পারিবারিক সম্পত্তির অধিকারিনী হবে। তবে প্রথম স্ত্রীর যদি কোন কন্যা সন্তান থাকে তবে তাকেই ভাবী উত্তরাধিকারিনী নিযুক্ত করতে হবে। যদি প্রথম স্ত্রীর কোন মেয়ে সন্তান না থাকে তবে দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভে উক্ত পুরুষের ঔরষজাত মেয়ে সন্তানকে ভাবী উত্তরাধিকারিনী নির্বাচন করা যাবে। কিন্তু উক্ত দ্বিতীয় স্ত্রীর যদি বর্তমান বিয়েতে কোন মেয়ে সন্তান না জন্মায় এবং সে যদি উক্ত বিয়ের পূর্বে কন্যা সন্তানসহ বিধবা হয়ে থাকে তবে মাহারীর অনুমোদনক্রমে উক্ত দ্বিতীয় স্ত্রীর পূর্ব ¯^vgxi ঔরষজাত কন্যা সন্তানকে পারিবারিক সম্পত্তির উত্তরাধিকারিনী নির্বাচন করা যাবে।
m¤úwËi AwaKvi nviv‡bv
জন্মগত অথবা দত্তক হিসাবে যারা সম্পত্তির অধিকারী নিম্নলিখিত কারণে তারা তাদের অধিকার হারাতে পারে।
৭২. মাঃ
ছেলে যখন বিয়ে করে তখন তার মা ছেলের পরবর্তী উপার্জনের উপর সমস্ত অধিকার হারাবে।
৭৩. স্ত্রীঃ
কোন স্ত্রী উপযুক্ত কারণ ছাড়াই তার বিবাহিত ¯^vgx‡K পরিত্যাগ করলে অথবা অন্য পুরুষের সঙ্গে গৃহত্যাগ করলে সে সমস্ত পারিবারিক সম্পত্তির উপর অধিকার হারাবে। এক্ষেত্রে পরিবারের নক্না অথবা পরিত্যক্ত ¯^vgxi জন্য স্ত্রীর মাহারীর লোকজন যে দ্বিতীয় স্ত্রীকে প্রদান করবে সেই উক্ত সম্পত্তির অধিকারিনী হবে। ¯^vgxi মৃত্যুর পর কেউ যদি ¯^vgxi মাহারী কর্তৃক প্রদত্ত দ্বিতীয় ¯^vgx উপযুক্ত কারণ ব্যতিত গ্রহণে অসম্মতি জ্ঞাপন করে অথবা মাহারীর বন্দোবস্তের অপেক্ষা না করে নিজের পছন্দানুযায়ী বিবাহ করে তবে সে পরিবারের সম্পত্তির অধিকার হারাবে।
৭৪. নক্না (উত্তরাধিকারিনী নির্বাচিতা কন্যা)ঃ
কোন উপযুক্ত কারণ না দর্শিয়ে কোন নক্না যদি তার জন্য স্থিরীকৃত ছেলেকে বিবাহে অসম্মতি জ্ঞাপন করে এবং অন্য কাউকে তার পছন্দানুযায়ী বিয়ে করে তবে সে উত্তরাধিকারীত্ব হারাবে। অন্যদিকে সে যদি ইচ্ছাকৃতভাবে বিয়ের পর নক্রমসহ অন্যত্র গমন করে স্থায়ীভাবে সেখানে বসবাস আরম্ভ করে তবে সে পারিবারিক সম্পত্তির উত্তরাধিকারীত্ব হারাবে। এমনকি এক্ষেত্রে তাকে শাস্তি পর্যন্তও বহন করতে হতে পারে।
৭৫. দেরাগাৎগিপা (দত্তক কন্যা)ঃ
দত্তক মা-বাবার সঙ্গে একত্রে বসবাস করা এবং তাদের একান্ত অনুগত থাকা যে কোন দত্তক কন্যার অবশ্য কর্তব্য। এক কথায় সে ঐ পরিবারেরই একান্ত আপনজন হয়ে যেতে পারে। যদি সে এর কোন ব্যতিক্রম করে তবে সে নক্নার অধিকার হারাবে এবং তাকে যেখান হতে দত্তক গ্রহণ করা হয়েছিল সেখানেই ফেরত পাঠানো হবে।
৭৬. নক্রম (উত্তরাধিকারী নির্বাচিতা কন্যার ¯^vgx)
গারোদের প্রথাগত আইনানুযায়ী কোন পুরুষ পারিবারিক সম্পত্তির অধিকারী নহে, তবে সে পরিবারের যাবতীয় সম্পদের তত্ত্বাবধায়ক হিসাবে গণ্য। কিন্তু নিম্নলিখিত কারণসমূহের জন্য সে তত্ত্বাবধায়কের অধিকারও হারাবে। যথাঃ
(ক) যদি সে গৃহত্যাগ করে।
(খ) যদি সে কোন উপযুক্ত কারণ ছাড়াই তার স্ত্রীকে পরিত্যাগ করে।
(গ) যদি সে প্রথম স্ত্রী মারা যাবার পরে স্ত্রীর মাহারী কর্তৃক পছন্দ করা দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রহণ না করে অন্য কাউকে নিজ পছন্দানুযায়ী বিয়ে করে বসে।
কোন কোন ক্ষেত্রে নক্রম তার নিজের অযোগ্যতার জন্যও পরিবারের সংসার তত্ত্বাবধানের অধিকার হারাবে। এক্ষেত্রে উভয় মাহারীর মধ্যে চুক্তির মাধ্যমে তাকে ঐ পরিবার হতে অব্যাহতি দিয়ে দেয়া হবে। অবশ্য এরকম ঘটনা খুব কমই ঘটে থাকে।
গারোদের প্রথাগত এই আইনসমূহ সমগ্র গারো সমাজে সমভাবে প্রযোজ্য ও প্রচলিত যা যুগ-যুগান্তব্যাপী আবহমানকাল হতে এ যাবত সমগ্র গারো সমাজকে তাদের সামাজিক মুল্যবোধকে অক্ষুন্ন রাখতে সহায়তা করে চলেছে। বর্ণিত প্রথাগত আইনের মূ কেন্দ্রবিন্দু যদিও ভারতের বর্তমান মেঘালয় রাজ্যে, যেখানে সিংহভাগ গারোদের বসবাস তথাপি এই আইনসমূহ বাংলাদেশে বসবাসরত গারোদের বেলাতেও সমভাবে প্রযোজ্য এবং কার্যকরভাবে প্রচলিত। ভারতে গারোদের এই প্রথাগত আইন সেখানকার সরকার কর্তৃক সমর্থিত এবং সংরক্ষিত, যা ভারত সরকারের ১৯১৪ খ্রীষ্টাব্দের ২৩শে জুন তারিখের ৯৪০নং সরকারী বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ঘোষণা করা হয়েছে। উক্ত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সমগ্র গারো সমপ্রদায়কে ১৮৬৫ খ্রীষ্টাব্দের ভারতীয় উত্তরাধিকার আইন এবং পরবর্তীকালে ১৯২৫ খ্রীষ্টাব্দের সংশোধিত উত্তরাধিকার আইন ও বিধিমালা হতে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। নিম্নে উক্ত বিজ্ঞপ্তিটি উদ্বৃত করা হলো।
দি ক্যালকাটা গেজেট
বুধবার ২২শে জুলাই ১৯১৪ খ্রীষ্টাব্দ
প্রথম খন্ড ‘‘ক’’
১৮৬৫ খ্রীষ্টাব্দের ভারতীয় আইন ও বিধিমালার আওতা হতে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সীতে বসবাসরত: আদিবাসীদের অব্যাহতি।
ভারত সরকারের ¯^ivóª বিভাগ (বিচার বিভাগ)
সিমলা, ২৩শে জুন ১৯১৪ খ্রীষ্টাব্দ
বিজ্ঞপ্তি নং-৯৪০
যেহেতু বেঙ্গল প্রেসিডেন্সীর বিভিন্ন অংশে বসবাসরত: সাঁওতাল ভূমিজ, ওঁরাও, মুন্ডা, খারিয়া, ঘাসী, মাল, গারো, গোন্দ, টোকাও এবং মাল পাহাড়িয়া প্রভৃতি আদিবাসীদের মধ্যে সম্পত্তির উত্তরাধিকার সংক্রান্ত ব্যাপারে নিজস্ব সামাজিক প্রথা ও আইন প্রচলিত রয়েছে এবং যেহেতু উক্ত সামাজিক প্রথা ও আইনের সঙ্গে ১৮৬৫ খ্রীষ্টাব্দে প্রণীত ভারতীয় উত্তরাধিকার আইনের মধ্যে সম্পূর্ণ অসঙ্গতি বিদ্যমান, সেহেতু ১৮৬৫ খ্রীষ্টাব্দের ভারতীয় উত্তরাধিকার আইনের বিধিমালা উপরোক্ত আদিবাসীদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ অযৌক্তিক। অতএব, ১৮৬৫ খ্রীষ্টাব্দের ভারতীয় উত্তরাধিকার আইনের ৩৩২নং ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে গভর্ণর জেনারেল সমগ্র বেঙ্গল প্রেসিডেন্সীতে বসবাসরত: সাঁওতাল ভূমিজ, ওঁরাও, মুন্ডা, খারিয়া, ঘাসী, মাল, গারো, গোন্দ, টোকাও এবং মাল পাহাড়িয়া প্রভৃতি আদিবাসীকে ১৮৬৫ খ্রীষ্টাব্দের ভারতীয় উত্তরাধিকার আইনের আওতা হতে বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। অবশ্য ইতোমধ্যে যদি কোন উপযুক্ত ক্ষমতাপ্রাপ্ত দেওয়ানী আদালত কর্তৃক কোন ব্যক্তির অধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে বিজ্ঞপ্তির পরিপন্থী কোন রায় প্রদত্ত হয়ে থাকে তবে তা এই বিজ্ঞপ্তির আওতায় পড়বে না।
এইচ.হুইলার
ভারত সরকারের সচিব
wbg&Av
৭৭। ঐতিহ্যহত রীতিনীতির mgš^‡q গঠিত তৃতীয় পর্যায়ের গারো আইনসমূহ এই শব্দের অন্তগর্ত। এই আইন দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় গারোদের আচার-ব্যবহার এবং আদব কায়দাকে অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এই আইন ভঙ্গকারী হয়তো আদালতের শাস্তি পায়না, এ কথা সত্য কিন্তু তাই বলে সর্বসাধারণের ঘৃণা এবং অবজ্ঞার হাত হতে সে রেহাই পাবে না। একজনের নৈতিক চরিত্রের বহি:প্রকাশ এই বিধিসমূহ পালনের মাধ্যমেই ঘটে থাকে। এজন্য এই আইনসমূহকে গারো ভাষায় নিম্আ বলা হয়, বাংলায় অনুবাদ করলে যার অর্থ দাঁড়াবে অননুমোদিত। নিম্নে এই আইনের আওতাভূক্ত কতগুলো উদাহরণ দেয়া হলঃ
৭৭.১ পথচলার সময় মেয়েরা সব সময় পুরুষের পিছনে হাঁটবে। কেবল শ্বাপদসঙ্কুল কিংবা অন্য কোন প্রকারের বিপজ্জনক পথে কোন পুরুষের আগে আগে হাঁটতে পারবে। অবশ্য অল্প বয়স্কা কন্যা সন্তান তার পিতার এবং বিবাহিতা স্ত্রী তার ¯^vgxi আগে আগে হাঁটতে পারবে। এই আইন ভঙ্গকারী মেয়ে এবং পুরুষকে ছনালীপনা করার সন্দেহে অভিযুক্ত করা যেতে পারে।
৭৭.২ গারোরা নির্জন পাহাড়ী ঝর্ণায় বিবস্ত্র অবস্থায় স্নান করে থাকে। ঐ রকম পাহাড়ী ঝর্ণা অথবা খালের ধারে যাবার সময় বেশ কিছু দূর হতে কোন রকম শব্দকরে নিজের উপস্থিতি ঘোষণা করতে হয়,যাতে স্নানরত ব্যক্তি নিজেকে উপযুক্ত বস্ত্র আচ্ছাদন করার যথেষ্ট সময় পায়।
৭৭.৩ পথচলার সময় কোন পুরুষ তার অগ্রগামিনী কোন মেয়েকে অতিক্রম করতে চাইলে কিছুদূর থেকেই সে কোনরকম আওয়াজ করে নিজের উপস্থিতি ঘোষণা করবে। অগ্রগামিনী মেয়ে তখন জঙ্গলের দিকে মুখ ফিরিয়ে পথের এক পাশে সরে দাঁড়াবে এবং পুরুষটি পাশ কাটিয়ে কিছুদূর যাবার পর সে পুনরায় পথচলা শুরু করবে।
৭৭.৪ গৃহাভ্যন্তরে কোন পুরুষ উপবিষ্ট থাকলে কোন মহিলা ঘরের দুয়ারে দাঁড়াবেনা। বিশেষ জরুরী প্রয়োজনে যদি তাকে ঘরের বাইরে অথবা ভিতরে যেতে হয় তবে সে নিজের পশ্চাদ্দেশ উত্তমরূপে ঢেকে যাতায়াত করবে।
৭৭.৫ বালিকা এবং মহিলারা তাদের কাকা অথবা ভাই সম্পর্কের কোন কাপড়-চোপড় স্পর্শ করবেনা অথবা ধুবেনা। কাকা অথবা ভাই গৃহাভ্যন্তরে উপবিষ্ট থাকলে তার সন্মুখ দিয়ে কোন মেয়ে হাঁটাহাঁটি করবেনা, এমন কি ঘরের বাইরে অন্য কোথাও দেয়ালের পাশে বসা থাকলেও তাদের সন্মুখ দিয়ে হাঁটাহাঁটি করবেনা।
৭৭.৬ কোন পুরুষ তার ভগ্নিপতি অথবা আপন শ্যালকের পরিধেয় বস্ত্র পরিধান করবেনা।
৭৭.৭ কোন মহিলা নিজের ছোটবোনের ¯^vgxi সঙ্গে হাস্য পরিহাস করবেনা, এমনকি তার ছোটবোনের উপস্থিতিতেও। শ্বশুর এবং পুত্রবধুর বেলাতেও এই নিয়ম প্রযোজ্য।
৭৭.৮ কোন মহিলা কোন পুরুষকে, সেই পুরুষ ঘরের অথবা বাইরের যেখানকারই হোকনা কেন হাঁড়ির তলদেশের পোড়াভাত পরিবেশন করবেনা। গারো ভাষায় ঐ ভাতকে আখাম্ বলা হয়।
৭৭.৯ মদপানের আসরে, সেই মদপান ঘরোয়া অথবা সাধারণ্যে যাই হোক না কেন মদের প্রথম অংশটি সেখানে উপস্থিত সবচাইতে প্রবীণ ব্যক্তিকে (তার সামাজিক অবস্থান কিংবা মর্যাদা যাই থাকুক না কেন) পরিবেশন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে শ্বেত-শ্বশ্রুবিশিষ্ট ব্যক্তিকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
৭৭.১০ কোন মহিলা নক্পান্থেয় প্রকাশ্যে প্রবেশ করবেনা। এমনকি বিশেষ বিশেষ উৎসব উপলক্ষে যখন নক্পান্থেয় প্রবেশ করা যায় তখনও কোন মহিলা নক্পান্থের প্রধান সিঁড়ি বেয়ে ঘরে প্রবেশ করবেনা।
৭৭.১১ ভাগ্নে অথবা ভাতিজা তার মামা কিংবা কাকা জ্যেঠা কর্তৃক উপবিষ্ট আসন যা কিছুক্ষণের জন্য সাময়িকভাবে খালি অবস্থায় রয়েছে, সেই সব আসনে কোন সময় উপবেশন করবেনা।
৭৭.১২ বীজবপনের সময় হতে শস্য ছেদনের সময়কাল পর্যন্ত কেউ ক্ষেতে কাজ করতে যাবার সময় অথবা ক্ষেতে কাজ করার সময় শিস্ দিবেনা।