‡`Iqvbx I †dŠR`vix `Ûwewa msµvন্তAvBb
উপরোল্লেখিত আইনের আওতায় আবহমানকাল হতে গারো সমাজের প্রথাগত বিচারের পদ্ধতিসমূহ বৃটিশ শাসনামলে আমুল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। অতর্কিত আক্রমণের মাধ্যমে শত্রুুহত্যা, নিরীহ লোকের প্রাণহানি, নরমুন্ড সংগ্রহ, অবিশ্বস্তা স্ত্রীকে হত্যা, বিবাদমান দু’দলের দীর্ঘস্থায়ী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ প্রভৃতি, সেসব প্রকাশ্যে কিংবা অপ্রকাশ্যে যেভাবেই হোক না কেন এককালে প্রচলিত ছিল। বৃটিশ শাসনামলে ঐসব প্রথা বেআইনী ঘোষিত হয় এবং এর ফলে সেগুলো বর্তমানে প্রায় বিলুপ্তির পথে। টাকার ব্যবহার চালুর সঙ্গে সঙ্গে কতগুলো দৈহিক শাস্তি বিধানের পূর্ব প্রথাও বর্তমানে আর্থিক জরিমানা লেনদেনের মাধ্যমেই নিষ্পত্তি করা হয়। অন্যদিকে গুরুতর অপরাধে অপরাধী ব্যক্তিকে আদালত কর্তৃক জেলে পাঠানো হয় অথবা মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করা হয়। বর্তমানে নক্মা (ধনী/এলাকা প্রধান/সমাজ প্রধান) এবং তার মাহারীর (উপগোত্র) আদালত অনেকাংশেই আগেকার দিনের দক্ষতা এবং কর্তৃত্ব হারিয়েছে। সরকার কর্তৃক এলাকার জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত লস্কর যদিও নক্মার চাইতে অপেক্ষাকৃতভাবে বেশী ক্ষমতার অধিকারী তথাপি জেলার সমস্ত আইন-শৃঙ্খলা সংশ্লিষ্ট জেলার ডেপুটি কমিশনারই নিয়ন্ত্রণ এবং প্রয়োগ করে থাকেন। বিভিন্ন জটিল বিষয়ের বিচার কাজ সংশ্লিষ্ট ডেপুটি কমিশনারই সম্পন্ন করেন এবং সমগ্র জেলায় তাঁর রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করা চলেনা। অবশ্য ভারত সরকারের এক আদেশবলে ১৯৫৩ খ্রীষ্টাব্দে সমগ্র গারো পাহাড়ের বিভিন্ন জেলার ফৌজদারী এবং ভারতীয় দন্ডবিধির আওতাভূক্ত বিচার ব্যবস্থা যথাক্রমে সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদ ও সংশ্লিষ্ট জেলার ডেপুটি কমিশনার এই উভয় কর্তৃপক্ষের বরাবরে ন্যস্ত করা হয়েছে এবং ভারতীয় সংবিধানের ষষ্ঠ তপশীল অনুযায়ী এই উভয় কর্তৃপক্ষের বিচারিক ক্ষেত্রসমূহ নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। সেই নির্ধারিত ব্যবস্থানুযায়ী আদিবাসী-আদিবাসীতে সংঘটিত বিবাদ সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদ আদালত কর্তৃক বিচার কাজ নিষ্পন্ন হবে এবং আদিবাসী-অ-আদিবাসীদের মধ্যে সংঘটিত বিবাদের বিচারকাজ নিষ্পন্ন করবেন সংশ্লিষ্ট জেলার ডেপুটি কমিশনার ও তাঁর সহকারীগণ। এছাড়া মৃত্যুদন্ডযোগ্য অপরাধসমূহ সর্বনিম্ন পাঁচ বছরের কারাদন্ড প্রদানযোগ্য অপরাধের বিচারকাজ নিষ্পন্ন করবেন সংশ্লিষ্ট জেলার ডেপুটি কমিশনার।
০৪. চন্নিকানী (তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা)ঃ
এই ধারায় কাউকে ঘৃণা মিশ্রিত ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ এবং তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করাকে বুঝাবে। এই তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য কোন ব্যক্তির শারীরিক অক্ষমতা, বুদ্ধিবৃত্তির অপরিপক্কতা কিংবা তার আর্থিক দৈন্যতাকে কেন্দ্র করে হতে পারে। যেমন-সল্লানী(তামাশা করা)। যদি কাউকে তার দৈহিক অক্ষমতার জন্য, আর্থিক দৈন্যতার জন্য, আচার-আচরণে অসঙ্গতির জন্য তামাশা সহকারে জনসমক্ষে অপমান করে তবে সেই অপমানিত ব্যক্তি দোষী ব্যক্তির বিচার দাবী করতে পারে এবং ১,০০০.০০(এক হাজার) টাকা অর্থদন্ড দাবী করতে পারে।
০৫. জেগ্রিক্আ, সাইআ, গিসিয়া (বাক্ বিতন্ডা, গালিগালাজ এবং তর্ক-বিতর্ক করা)ঃ
নিজেরস যুক্তি প্রতিষ্ঠাহেতু বাক্বিতন্ডা অথবা তর্ক-বিতর্ক করতে আইন কাউকে বাধা দেয়না, কিন্তু বাক্ বিতন্ডাকারীকে একই সঙ্গে মনে রাখতে হবে বাক্ বিতন্ডার সময় যেন এমন কোন অশালীন এবং অভব্য উক্তি উচ্চারিত না হয় যা অন্য পক্ষের শালীনতার আঘাত হানে। যদি সেরকম কোন ঘটনা ঘটে তবে দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা যাবে এবং মানহানীর জরিমানা দাবী করা যাবে। ¯^vgx-¯¿xi ক্ষেত্রেও এ আইন সমভাবে প্রযোজ্য। এক্ষেত্রে ¯^vgx যদি বাক বিতন্ডার সময় স্ত্রীর মানহানিকর কোন কিছু উক্তি করে, তবে স্ত্রীর মাহারীর (উপগোত্র) লোকেরা উক্ত দোষী ¯^vgxi বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে পারবে এবং আর্থিক জরিমানা দাবী করতে পারবে।
০৬. মিত্তাক্ আনি (মিথ্যা অপবাদ দেয়া)ঃ
এই ধারায় সন্দেহবশত: কারো নামে মিথ্যা অপবাদ রটনাকে বুঝাবে। এক্ষেত্রে যার বিরুদ্ধে অপবাদ রটানো হয়েছে সে রটনাকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনয়ন করতে পারে এবং অপবাদ যদি মিথ্যা প্রমাণিত হয় তবে দোষী (অপবাদ রটনাকারী) ব্যক্তির নিকট হতে অর্থদন্ড দাবী করতে পারে। আগেকার দিনে এরকম মিথ্যা অপবাদ রটানোকে কেন্দ্র করে অনেক সময় রক্তক্ষয়ী সংষর্ঘ পর্যন্ত চলতো।
০৭. এত্তাল্ মিক্কানি (ব্যঙ্গ করা)ঃ
এই ধারায় কারো অনুপস্থিতিতে তাকে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করাকে বুঝাবে। এক্ষেত্রে উপযুক্ত সাক্ষী প্রমাণাদি থাকলে বিদ্রুপকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা যাবে এবং মানহানী বাবদ ১,০০০.০০ (এক হাজার) টাকা জরিমানা দাবী করা যাবে।
০৮. কাদিং ষ্টেকানী (পরিহাস করা)ঃ
এই ধারানুযায়ী সর্বসমক্ষে কাউকে পরিহাসপূর্বক অপমান করাকে বুঝাবে। এক্ষেত্রে পরিহাসের পাত্র নিজেকে যদি অপমানিত বোধ করে তবে দোষী (পরিহাসকারী) ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে পারবে এবং মানহানী বাবদ ১,০০০.০০(এক হাজার) টাকা আর্থিক জরিমানা দাবী করতে পারবে।
০৯. দক্ গ্রিক্আ (মারামারি করা)ঃ
গারোরা মারামারি করাকে গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য করে থাকে এবং মারামারির সুচনাকারী দোষী ব্যক্তির অপরাধ যদি প্রমাণিত হয় তবে তাকে কঠোর শাস্তি বহন করতে হয়। এক্ষেত্রে দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে যথাযথ অভিযোগ আনা যাবে এবং দৈহিক নির্যাতনের অনুপাতে মানহানী বাবদ তাকে অর্থদন্ডে দন্ডিত করা যাবে।
১০. গিসিয়ানা দক্আ (তর্ক করার জন্য মারপিট করা)ঃ
এই ধারানুযায়ী মূলত: পারিবারিক কলহ ঝগড়াকে বুঝাবে। এই ধারায় যুক্তিসঙ্গত কারণে পিতামাতা কর্তৃক নিজ সন্তান-সন্তুতিকে শাসন এবং প্রয়োজনে তাদেরকে মারপিট করা নিষিদ্ধ করা হয়নি, কিন্তু সেই শাসন ও মারপিট যদি মাত্রাতিরিক্ত এবং অযৌক্তিক হয়ে পড়ে তবে মাহারীর (উপগোত্র) লোকজনেরা উক্ত দোষে দোষী মা-বাবাকে সতর্ক করে দেবে এবং সেই সতর্কীকরণে যদি কোন কাজ না হয় তবে উক্ত নিষ্ঠুর মা-বাবার কবল হতে তাদের নির্যাতিত সন্তান-সন্তুতিকে নিয়ে গিয়ে প্রতিপালনের জন্য মাহারীর নিকটতম আত্মীয়ার তত্ত্বাবধানে রাখতে পারবে।
১১. জেগ্রিক্কী খাওনাংয়ে দক্আ (ঝগড়া করে মারপিট করা)ঃ
অনেক সময় দেখা যায় তুচ্ছ কারণেই ঝগড়া-বিবাদ করে ¯^vgx তার স্ত্রীকে প্রচন্ডভাবে প্রহার করে থাকে। কিন্তু যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া স্ত্রীকে সব সময় মারপিট করা অথবা জখম করা কোন ¯^vgxiB উচিত নয়। এক্ষেত্রে প্রথমে স্ত্রীর মাহারীর (উপগোত্র) লোকজনেরা উক্ত দোষী ¯^vgx‡K সতর্ক করবে। কিন্তু এতে না মানলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা যাবে এবং জরিমানা দাবী করতে পারবে। স্ত্রীর মাহারীর লোকজনের সতর্কবাণীতে †µvavwš^Z কর্ণপাত না করে যদি নিজ ক্রোধ প্রশমনের উদ্দেশ্যে গৃহের জিনিসপত্রাদি ভাঙ্গে তাহলে উহা অমার্জনীয় অপরাধ বলে গণ্য হবে এবং স্ত্রীকে হত্যার সামিল বলে মনে করতে হবে। এক্ষেত্রে স্ত্রীর মাহারীর লোকজনেরা উক্ত দোষী ¯^vgx‡K কোনক্রমেই ক্ষমা করবে না এবং এজাতীয় অপরাধের জরিমানা পূর্বাপেক্ষা অধিক হবে। প্রয়োজন মনে করলে স্ত্রীর মাহারীর লোকজনেরা বিবাহ বিচ্ছেদের ব্যবস্থা করবে। অন্যদিকে স্ত্রী কর্তৃক ¯^vgx যদি প্রহৃত হয় এবং ¯^vgx পক্ষের মাহারীর (উপগোত্র) কোন সতর্কবাণী না শুনে উহার পুনরাবৃত্তি ঘটায় তবে ¯^vgxi ¯^vgxi AvZ¥xq¯^Rb‡`i কেউ বাইরে গিয়ে একটি শূকর কিংবা গরু মারবে এবং উহা দ্বারা ¯^vgxc‡¶i ভোজের আয়োজন করবে। সেই ভোজের সম্পূর্ণ খরচ স্ত্রীর AvZ¥xq¯^Rbiv বহন করবে।
১২. কাদ্নআ/খুচিংআ (হত্যার সংকল্প প্রকাশ করা)ঃ
প্রহৃত হবার পরে কেউ যদি অনুপস্থিত প্রহারকারীর উদ্দেশ্যে গালিগালাজ করে এবং প্রতিশোধ গ্রহণের সংকল্প প্রকাশ পূর্বক হাতে দা কিংবা কুড়াল নিয়ে উক্ত অনুপস্থিত প্রহারকারীর নাম উচ্চারণপূর্বক কলাগাছ অথবা ঐ জাতীয় কোন একটি গাছ এক কোপে ছেদন করে তবে তার বিরুদ্ধে হত্যার সংকল্প প্রকাশের অভিযোগ আনা যাবে এবং তদানুযায়ী বিচার কাজ নিষ্পন্ন করা যাবে।
১৩. নক্কু নাপদ্রাপ্পী দক্আ (ঘরে হামলা করে প্রহার করা)ঃ
কারো গৃহে বলপূর্বক প্রবেশ করে তাকে প্রহার করা গুরুতর অপরাধ, যেহেতু এতে প্রতীয়মান হয় যে উহা পূর্বপরিকল্পিত। আগেকার দিনে আক্রান্ত ব্যক্তি আত্মরক্ষার জন্য উক্ত আক্রমণকারীকে আঘাত এমন কি হত্যা পর্যন্ত করতে পারতো, সেই সঙ্গে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সাহায্য করার জন্য উক্ত গৃহের অন্যান্যরাও একযোগে অনুপ্রবেশকারীকে আঘাত হানতে পারতো।
১৪. দেন্আ (হত্যা করা)ঃ
আগেকার দিনে মারপিট করার চাইতে হত্যা করার প্রবণতাই ছিল বেশী। সেই হত্যাকান্ড কোন কোন সময় আইন সঙ্গত কারণে আবার কোন কোন সময় বেআইনীভাবে হতো। বর্তমানে কেউ নরহত্যা করলে তার বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে উপযুক্ত আদালতে অভিযোগ আনা হয় এবং আগেকার দিনের প্রথানুযায়ী বিচার না হয়ে দেশের প্রচলিত আইনানুযায়ীই বিচার কাজ নিষ্পন্ন হয়ে থাকে।
১৫. নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহ প্রথাগত আইনানুযায়ী নরহত্যার পর্যায়ে পড়বে নাঃ
১৫.১ বোবিল্কু চাদ্রাপে নক্কু ওয়ারাচাক্কানি (অসদুদ্দেশ্যে গৃহে অনুপ্রবেশকারীকে বাধাদান)ঃ
এই ধারায় কারো গৃহে অসদুদ্দেশ্যে বলপূর্বক অনুপ্রবেশকে বুঝাবে। এখানে অসদুদ্দেশ্যে বলতে উক্ত গৃহের বাসিন্দাদের কাউকে হত্যা করার সংকল্প অথবা মারপিট করার সংকল্প কিংবা উক্ত গৃহের কোন মেয়ের শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্যকে বুঝাবে। এক্ষেত্রে গৃহকর্তা অথবা গৃহের বাসিন্দারা একযোগে উক্ত অনুপ্রবেশকারীকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে, প্রয়োজনবোধে অনুপ্রবেশকারীকে হত্যা পর্যন্তও করতে পারে।
১৫.২ চাউনা রেবাগিপা মান্দে, উইগিজা বা আগানগিজাগিপাকো (চুরি করার উদ্দেশ্যে অথবা অজ্ঞাত কিংবা আত্মপরিচয় প্রদানে অনিচ্ছুক অনুপ্রবেশকারীকে প্রতিরোধ)ঃ
চুরি করার উদ্দেশ্য নিয়ে কোন অনুপ্রবেশকারীকে গৃহে প্রবেশকালেই হোক অথবা বহির্গমনকালেই হোক এবং অপহৃত জিনিসপত্রাদিসহ হোক বা না হোক, যদি সে গৃহকর্তার চ্যালেঞ্জে প্রকৃত আত্মপরিচয় ও আগমনের প্রকৃত উদ্দেশ্য প্রকাশ না করে পলায়নের চেষ্টা করে তবে তাকে অকুস্থলে হত্যা করা যাবে। এক্ষেত্রে অবশ্য অনুপ্রবেশকারীর প্রকৃত উদ্দেশ্য জানা যায় না।
১৫.৩ বোবিল্কু ওয়ারাচাক্কানি (আততায়ীকে প্রতিরোধ করা) ঃ
কেউ নিজ গৃহের বাইরে অবস্থানরত অবস্থায় আততায়ী কর্তৃক আক্রান্ত হলে সর্বশক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে আততায়ীকে প্রতিরোধ করতে পারে এমনকি নিজ প্রাণ রক্ষার্থে আক্রমণকারী আততায়ীকে হত্যা পর্যন্ত করতে পারে। অবশ্য এক্ষেত্রে যথেষ্ট প্রমাণ থাকতে হবে যে আক্রমণকারী আততায়ী তাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই আক্রমণ চালিয়েছিল।
১৫.৪ বোবিল্ দেন্আ (শত্রুহত্যা)ঃ
এই ধারায় শত্রু বলতে স্ত্রীর অবৈধ প্রেমিককে বুঝাবে। এক্ষেত্রে ¯^vgx অবৈধ প্রেমিকের সঙ্গে তার স্ত্রীর দৈহিক মিলনাবস্থায় ধরতে পারলে উক্ত গোপন প্রেমিককে হত্যা করতে পারে। অথবা অবৈধ যৌনমিলনের উপযুক্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ থাকলে উক্ত গোপন প্রেমিককে অনুসরণ করে হত্যা করতে পারে।
১৫.৫ মেমাং খাম্না সৎআ (আন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার প্রয়োজনে হত্যা)ঃ
এই ধারায় কোন অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার প্রয়োজনে কাউকে অতর্কিতে আক্রমণ করে তার মৃতদেহ অথবা কেবলমাত্র মুন্ড নেয়াকে বুঝাবে। এক্ষেত্রে আততায়ী যদিও কোন আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত হয় না তথাপি যেকোন সুযোগে নিহত ব্যক্তির AvZ¥xq¯^Rbiv তাকে অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে হত্যা করতে পারে। এমনকি এ নিয়ে দু’দলের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ পর্যন্ত দেখা দিতে পারে।
১৫.৬ নাংরিমগ্রিক্কী দেনগ্রিক্আ (দ্বন্দ্ব যুদ্ধের মাধ্যমে হত্যা)ঃ
এই ধারায় দু’ব্যক্তিতে প্রকাশ্য ¯^v¶xi সামনে একে অপরকে দ্বন্দ্ব যুদ্ধের মাধ্যমে হত্যার সংকল্পকে বুঝাবে। সংকল্প গ্রহণের পর একে অপরকে হত্যা করার সুযোগের অপেক্ষায় সদাসর্বত্র ওঁত পেতে থাকবে এবং সুযোগ পাওয়ামাত্র হত্যা করবে। কিন্তু এক্ষেত্রে নিহত ব্যক্তির AvZ¥xq¯^Rbiv উক্ত হত্যাকারীকে সহজে রেহাই দেবেনা বরং সুযোগ পাওয়ামাত্র তাকে হত্যার মাধ্যমে চরম প্রতিশোধ নেবে।
১৬. চাওয়ানি (চুরি সংক্রান্ত)ঃ
আগেকার দিনে চোর ধরা পড়লে সমস্ত অপহৃত দ্রব্যাদি ফেরত দিতে হতো অথবা সমমূল্যের জরিমানা প্রদান করতে হতো। তখনকার দিনে জেল খাটার নিয়ম ছিলনা কিন্তু অপহৃত সম্পদের দায়ে তাকে অভিযোগকারীর বাড়ীতে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গোলামী খাটতে হতো অথবা এলাকার নক্মা যদি অপহৃত দ্রব্যাদির ক্ষতিপূরণ অভিযোগকারীকে পরিশোধ করে দিতেন তবে সেক্ষেত্রে চোরকে উক্ত নক্মার গৃহে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গোলামী খাটতে হতো।
১৭. নক্ ওয়াল খামাত্আনি (গৃহে অগ্নি সংযোগ)ঃ
আগেকার দিনে প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য গৃহে অগ্নিসংযোগ করার প্রবণতা বহুল প্রচলিত ছিল এবং এর প্রতিরোধকল্পে কতগুলো বিধিও প্রচলিত ছিল। অগ্নিসংযোগে দোষী ব্যক্তিকে তার AvZ¥xq¯^R‡bi সহায়তায় ভস্মিকৃত গৃহ পুনঃনির্মাণ করে দিতে হতো এবং ক্ষতিগ্রস্থ সম্পত্তির জন্য সমমূল্যের জরিমানা প্রদান করতে হতো। অগ্নিসংযোগের ফলে কোন মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা পড়লে অগ্নিসংযোগকারীর বিরুদ্ধে চরম প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতো। পরিবারেরই কেউ যদি এই দোষে দোষী সাব্যস্থ হতো তাকেও রেহাই দেয়া হতো না।
১৮. গ্রো-চত্না মান্গিজানী (ঋণ পরিশোধের ব্যর্থতা)ঃ
সাধারণ রীতি অনুসারে ঋণের উপর সুদের পরিমাণ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য শতকরা পঞ্চাশ টাকা হারে নির্ধারণ করা হবে। ঋণের পরিমাণ যাই থাকুক না কেন তিন বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। উক্ত সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে উক্ত ঋণীর বিরুদ্ধে ক্রোকজারীর মাধ্যমে তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে বিক্রয়লব্ধ অর্থ ঋণদাতা গ্রহণ করবে। অবশ্য আগেকার দিনে এ জাতীয় ঘটনা খুব কমই ঘটতো, কারণ কারো বিপদের দিনে মাহারীর লোকেরা সব সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতো। অতএব, কারোর পক্ষে সময়মতো ঋণ পরিশোধ করা খুব বেশী সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতো না।
১৯. সরকারী খাম্রাং (জনসাধারণের কাজ)ঃ
যেসব কাজ জনসাধারণের ¯^v_©RwoZ যেমন-গ্রামের রাস্তাঘাট নির্মাণ ও মেরামত, পানীয় জলের কূপ খনন করা প্রভৃতি কাজ গ্রামের সকলে মিলে সমভাবে করবে। যদি গ্রাম বা সমাজের কেউ এতে অবহেলা করে তবে তার প্রয়োজনকালে কেউ তাকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসবে না। এমনকি তাকে সমাজে একঘরে করেও রাখতে পারে।
২০. থল্লে আগানানী (মিথ্যা বলা কিংবা মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করা)ঃ
গারোরা সচরাচর মিথ্যা বলায় অভ্যস্থ নহে। তবে বিচার কাজ চলাকালে অথবা আইন আদালতে সাক্ষ্য প্রদানকালে ভয়ে কিংবা প্রতিশোধ গ্রহণের ভয়ে ভীত হয়ে অনেক সময় মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ে ফেলে। এক্ষেত্রে তার মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদানের জন্য যে ক্ষতি সংঘটিত হবে উহার ক্ষতিপূরণ প্রদানে সে বাধ্য থাকবে।
২১. খুচিংআ (ভীতি প্রদর্শন)ঃ
কাউকে অহেতুক ভীতি প্রদর্শন করা হলে ভীতি প্রদর্শনকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা যাবে এবং ১,০০০.০০(এক হাজার) টাকা জরিমানা দাবী করা যাবে।
২২.স্নাক্না খুচিংআ (খারাপ নজর দেয়া অথবা তন্ত্রমন্ত্রের সাহায্যে ক্ষতি করার ভীতি প্রদর্শন)ঃ
ভীতি প্রদর্শন সমূহের মধ্যে এটিই হচ্ছে মারাত্মক রকমের অপরাধ। যাকে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে সে যদি সত্যি সত্যিই অসুস্থ হয়ে পড়ে তবে তার চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার উক্ত ভীতি প্রদর্শনকারী বহন করবে এবং সে অসুখে যদি আক্রান্ত ব্যক্তি মারা যায় তবে ভীতি প্রদর্শনকারী লোকটি মৃত ব্যক্তির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াসহ দেলাং সুআর যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করবে। তদোপরি তার উপর গ্রামবাসীর এমন ঘৃণা এবং ভীতি জন্মাবে যে, অবশেষে তাকে বাধ্য হয়ে নিজ গ্রাম পরিত্যাগ করে দূরের অজানা কোন গ্রামে বসতি স্থাপন করতে হবে।
২৩. স্খাল পত্তানি (ডাইনী অপবাদ দেয়া)ঃ
ইহা এক ধরণের মারাত্মক অপবাদ। যাকে এই অপবাদ দেয়া হয় সে এবং তার পরিবারের মধ্যে ততক্ষণে শান্তি আসবে না, যতক্ষণে না এই অপবাদের উপযুক্ত প্রতিবাদ এবং প্রমাণ দেয়া হয়। এক্ষেত্রে অপবাদকারীকে তার অপবাদের সপক্ষে সাক্ষী-প্রমাণ দিতে বলা হবে এবং অপবাদকারী যদি উপযুক্ত সাক্ষী-প্রমাণ হাজির করতে না পারে তবে তার নিকট হতে ২,০০০.০০(দুই হাজার) টাকা অর্থদন্ড আদায় করা যাবে।
No comments:
Post a Comment