Monday, February 13, 2017

Garo Low-Dokmalja




..........`vK&gvj&Rv ..........
দাক্‌মাল্‌জা মানে করা অনুচিত। সমগ্র গারো আইন যথা-নৈতিকসামাজিক এবং ফৌজদারী আইন এই শব্দের অন্তর্ভূক্ত। এইসব অপরাধে অপরাধী ব্যক্তি দেবদেবী কর্তৃক প্রদত্ত শাস্তি ছাড়াও তার অপরাধ প্রমাণিত হলে আইন-আদালতেও শাস্তি পাবে এবং অপরাধী ব্যক্তি আইন অনুযায়ী তার প্রাপ্য দন্ড মাথা পেতে নিতে বাধ্য থাকবে।

০১. নৈতিক আইনসমূহ 
যে আইনের দ্বারা নীতিবিগর্হিত কার্যকলাপ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে উহাকেই এখানে নৈতিক আইন বলা হয়েছে। এই আইনানুযায়ী একজন অন্য আরেকজনকে মিথ্যা সন্দেহ পোষণ করলেও যদি সেই সন্দেহ সর্বসম্মখে প্রকাশ পায় তবে মিথ্যা সন্দেহ পোষণকারী আইনের চোখে অভিযুক্ত হবার উপযোগি। অতএবউপযুক্ত শাস্তি তার প্রাপ্য।
০২. আমিত্‌আ (ব্যভিচারের দোষারোপ) 
      (¯^vgx যদি স্ত্রীকে ব্যভিচারিনী সন্দেহ পোষণ করে এবং স্ত্রীর গোপন প্রেমিকের নাম প্রকাশ করে দেয় তাহলে সেই তথাকথিত গোপন প্রেমিক উক্ত সন্দেহ পোষণকারী ¯^vgxi  বিরুদ্ধে অভিযোগ আনয়ন করতে পারে। সন্দেহ পোষণকারী ¯^vgx যদি যথাযথ সাক্ষ্য প্রমাণাদিসহ তথাকথিত গোপন প্রেমিকের সঙ্গে তার স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্ক প্রমাণে ব্যর্থ হয় তবে অভিযোগ আনয়নকারীকে মানহানি বাবদ ,৫০০.০০ (এক হাজার পাঁচশতটাকা জরিমানা প্রদানে বাধ্য থাকবে। একই সঙ্গে সংক্ষুব্ধ স্ত্রীও তার ¯^vgxi  নিকট জরিমানা দাবী করতে পারে।
(স্ত্রী যদি ¯^vgx‡K ব্যভিচারী সন্দেহ পোষণ করে এবং ¯^vgxi  গোপন প্রেমিকার নাম প্রকাশ করে দেয় তাহলে সেই তথাকথিত গোপন প্রেমিকা উক্ত সন্দেহ পোষণকারিনী স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনয়ন করতে পারে। সন্দেহ পোষণকারিনী স্ত্রী যদি যথাযথ সাক্ষ্য প্রমাণাদিসহ তথাকথিত গোপন প্রেমিকার সঙ্গে তার ¯^vgxi  অবৈধ সম্পর্ক প্রমাণে ব্যর্থ হয় তবে অভিযোগ আনয়নকারিনীকে মানহানি বাবদ ,৫০০.০০ (এক হাজার পাঁচশতটাকা জরিমানা প্রদানে বাধ্য থাকবে। একই সঙ্গে সংক্ষুব্ধ ¯^vgxi  তার স্ত্রীর নিকট জরিমানা দাবী করতে পারে।
(সন্দেহপোষণকারী অথবা পোষণকারিনী যদি উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমাণসহ তার স্ত্রী বা ¯^vgxi  অবিশ্বস্ততা প্রমাণ করতে না পারে তবে ব্যভিচারের দায়ে তার স্ত্রী অথবা ¯^vgx‡K অভিযুক্ত করা যাবে এবং ,০০০.০০(তিন হাজারটাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করা যাবে। একইসঙ্গে ব্যভিচারী সঙ্গী অথবা সঙ্গিনীকে উপযুক্ত অর্থদন্ডে দন্ডিত করা যাবে। এক্ষেত্রে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিটি মাহারীর অনুমোদনক্রমে বিবাহ বিচ্ছেদও নিয়ে নিতে পারে।
০৩. মংআ সাল্‌আ (বিপথ গমনে প্রলুব্ধ করা) 
       দ্বারা সেইসব কথাকাজ  ইঙ্গিত প্রভৃতিকে বুঝাবে যেগুলোর সাহায্যে একজনকে পাপকর্মে লিপ্ত হবার জন্য প্রলুব্ধ করা যায়যেমন-
.  মিখ্‌মালাতানি কথারাংখু আগানা (মন ভুলানো প্রণয়পূর্ণ কথাবার্তা বলা)
.  জাক্‌জিপ্‌আ (হাতের ইঙ্গিতে আহ্বান করা)
. কুশিমিক্‌আ (শীস্ দিয়ে আহ্বান করা)
. মিক্‌জিপ্‌আ (চোখ টিপে আহ্বান করা)
. জাক্‌গিত্তক রিম্‌আ (হাতের মণিবন্ধ চেপে ধরে অর্থপূর্ণ ইঙ্গিত করা)
. রিমরক্‌আ (হাত বুলিয়ে অর্থপূর্ণ ইঙ্গিত করা)
. দক্‌থপ্‌আ (মৃদু চাপড় মেরে ইঙ্গিত করা)
. গোমিনা দক্‌আ (ইঙ্গিতপূর্ণ বাক্যে গান অথবা কবিতা শোনানো)
. সক্‌ রিম্‌আ (বুকে হাত দেয়া)
.১০ জাসি গাদাপ্‌আ (পা দিয়ে কারো পায়ের আঙ্গুল চেপে ধরা)

এসবের কোন একটির সাহায্যে যাকে প্রলুব্ধ করা হয়েছে সে যদি এতে উত্তেজিত না হয়ে দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনয়ন করে এবং দোষী ব্যক্তির অপরাধ প্রমাণ করতে পারে তবে দোষী ব্যক্তি অভিযোগকারী কিংবা অভিযোগকারিনীকে মানহানি বাবদ ,০০০.০০(এক হাজারটাকা আর্থিক জরিমানা প্রদানে বাধ্য থাকবে।

০৪. সিক্‌দ্রা (বলপূর্বক উপগত হবার চেষ্টা করা)
এর দ্বারা কারো শায়িতাবস্থায় গোপনে প্রবেশপূর্বক বল প্রয়োগের মাধ্যমে উপগত হবার চেষ্টা বুঝাবে।
০৫. সাল্‌দ্রা (যৌন উৎপীড়নের চেষ্টা) 
      এর দ্বারা কারো অসতর্ক মূহুর্তে বল প্রয়োগের মাধ্যমে যৌন সংসর্গের চেষ্টা চালানোকে বুঝাবে। এই ধারার অন্তর্গত অপরাধসমূহ নিম্নে বর্ণিত হল 
      . চুমনা (রাত্রিতে অসৎ উদ্দেশ্যে কারো শয়ন কক্ষে প্রবেশ করা)
      . থুদ্রাপ্‌না (ঘুমন্ত কোন মহিলাকে বলপূর্বক জড়িয়ে ধরা)
. সাল্‌গাংগিলা-সাল্‌মিত্তালা (বলপূর্বক শোয়ানো অথবা চিৎ করে শোয়ানোর চেষ্টা করা)
      . রিমখেপ্‌আ (চেপে ধরা)
      . সালন্‌আ (বলপ্রয়োগের মাধ্যমে বসতে বাধ্য করা)
      . রিম্‌তাত্তা (সজোরে জড়িয়ে ধরা)
উপরে বর্ণিত সিক্‌দ্রা এবং সাল্‌দ্রা এই দুপর্যায়ের যেকোন একটির অপরাধীর বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ আনা হয় এবং অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হয় তবে অপরাধী ব্যক্তি অভিযোগকারী অথবা অভিযোগকারিনীকে মানহানি বাবদ ,০০০.০০(এক হাজারটাকা আর্থিক জরিমানা প্রদানে বাধ্য থাকবে।

০৬থেলেক্‌মান্‌চা(যৌন সংসর্গে লিপ্ত হওয়া)
      এখানে যৌন সংসর্গ বলতে বিবাহ বহির্ভূত অবৈধ যৌন সংসর্গ অর্থাৎ ব্যভিচারকে বুঝাবে এবং উহা বিভিন্ন পর্যায়ের হতে পারে।

      . অবিবাহিত যুবক-যুবতী পারস্পরিক সম্মতিক্রমে যদি যৌন সংসর্গে লিপ্ত হয় তবে তাদের কেউই আদালতে অভিযোগ আনতে পারেনা অথবা জরিমানাও দাবী করতে পারেনা। অবশ্য যৌন সংসর্গে যদি যুবক কর্তৃক বলপ্রয়োগ প্রমাণিত হয় তবে সেই ব্যভিচারী যুবক সংশ্লিষ্ট যুবতীকে ,৫০০.০০(এক হাজার পাঁচশতটাকা প্রদানে বাধ্য থাকবে। আর  যৌন সংসর্গের ঘটনায় মেয়েটি যদি গর্ভবতী হয় তবে দোষী ব্যক্তিটি অবশ্যই মেয়েটিকে বিয়ে করতে বাধ্য হবে এবং গর্ভস্থ সন্তানটি জন্মগ্রহণ করে সাবালক না হওয়া পর্যন্ত যথাযথ লালন-পালনে বাধ্য থাকবে। অন্যথায় দোষী ব্যক্তিটি যদি মেয়েটিকে বিয়ে করতে সম্মত না হয় তবে সে মেয়েটিকে ,০০০.০০(ছয় হাজারটাকা আর্থিক দন্ড প্রদানে বাধ্য থাকবে। 

      . কোন ব্যক্তি যদি অবিবাহিতা নক্‌নার (পরিবারের জন্য উত্তরাধিকারিনী নির্বাচিতা কন্যাসঙ্গে ব্যভিচার করে তবে সেই দোষী ব্যক্তিটি নক্‌নাকে ,০০০.০০ (তিন হাজারটাকা আর্থিক দন্ড প্রদান বাদেও যে ছেলের সঙ্গে নক্‌নাটির বিয়ে স্থিরিকৃত হয়ে আছে সেই ছেলের মাহারীকেও সমতুল্য প্রদানে বাধ্য থাকবে অর্থাৎ উভয় দন্ডই  দোষী ব্যক্তির পক্ষে প্রযোজ্য। এরপরেও নক্‌নার জন্য জামাই হিসেবে স্থিরিকৃত ছেলেপক্ষ যদি ইচ্ছা করে তবে সেই স্থিরিকৃত বিয়ে ভেঙ্গে দিতে পারে। অপরদিকে নক্‌না এবং সেই দোষী ব্যক্তি যদি উভয়ে পারস্পরিক সম্মতিক্রমে ব্যভিচারে লিপ্ত হয় এবং পরিণতিতে তারা যদি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় তবে নক্‌না নিজেও তার জন্য স্থিরিকৃত ¯^vgx‡K  ,০০০.০০ (তিন হাজারটাকা অর্থদন্ড প্রদান করবে।

      . অবিবাহিতা মেয়ে এবং বিবাহিত পুরুষের মধ্যে যদি ব্যভিচার সংঘটিত হয় তবে তারা উভয়েই ব্যভিচারী পুরুষের সংক্ষুদ্ধ স্ত্রীকে ,০০০.০০(তিন হাজারটাকা অর্থদন্ড প্রদানে বাধ্য থাকবে। অপরদিকে যদি প্রমাণিত হয় এই ব্যভিচারে পুরুষটিই মূখ্য ভূমিকা পালন করেছে তবে মেয়েটি অর্থদন্ড প্রদান হতে অব্যাহতি পাবে এবং সেক্ষেত্রে ব্যভিচারী পুরুষটি একাই সমুদয় অর্থদন্ড প্রদানে বাধ্য হবে। আর ব্যভিচারিনী যদি বিবাহিতা হয় এবং  ব্যভিচারে যদি তার সম্মতি প্রমাণিত হয় তবে সেই ব্যভিচারিনী তার ¯^vgx‡K  ,০০০.০০(তিন হাজারটাকা অর্থদন্ড প্রদানে বাধ্য হবে এবং এক্ষেত্রে ব্যভিচারী পুরুষ কিছুই দিবে না।
. ব্যভিচারীদ্বয় উভয়েই যদি বিবাহিত হয় তবে ব্যভিচারী পুরুষটি তার সংক্ষুদ্ধ স্ত্রীকে ,০০০.০০(তিন হাজারটাকা অর্থদন্ড প্রদানে বাধ্য থাকবে এবং ঠিক একইভাবে ব্যভিচারিনী মহিলাটিও তার সংক্ষুব্ধ ¯^vgx‡K  সমপরিমাণ অর্থদন্ড প্রদানে বাধ্য থাকবে। তবে  ব্যভিচারের জন্য পুরুষটি যদি একতরফাভাবে দোষী প্রমাণিত হয় তবে সে একাই ব্যভিচারসঙ্গিনীর ¯^vgx  এদের প্রতিজনকে ,০০০.০০(তিন হাজারকরে মোট ,০০০.০০(ছয় হাজারটাকা অর্থদন্ড প্রদানে বাধ্য থাকবে।
. ব্যভিচারীদ্বয়ের একজন যদি বিধবা অথবা বিপত্মীক হয়ে তাকে এবং সে যদি ইতোমধ্যে মাহারী আখিমের দায়মুক্ত না হয়ে থাকে তবে অর্থদন্ডের টাকাযা দোষী ব্যক্তির ¯^vg কিংবা স্ত্রীকে দিতে হতো তা সেই মৃত ¯^vg অথবা মৃতা স্ত্রীর মাহারীকে দিতে হবে। উপরন্তু দোষী ব্যক্তির মা অথবা মায়ের অবর্তমানে মাতৃস্থানীয় মাহারীর প্রবীণা যেকোন নিকটাত্মীয় মহিলাকে ,০০০.০০(তিন হাজারটাকা অর্থদন্ড প্রদানের মাধ্যমে আখিমের দায় হতে অবমুক্ত হতে হবে। গারো ভাষায় একে মেমাং গ্রো চত্তানি বলা হয়।
. ব্যভিচারীদ্বয় যদি তাদের নিজ গৃহ ব্যতিরেকে অন্য কারো গৃহে যৌনসংসর্গে লিপ্ত হয় তবে সেই গৃহের মালিক তার গৃহের পবিত্রতা নষ্টকরণজণিত কারণে ,০০০.০০(এক হাজারটাকা অর্থদন্ড আদায় করতে পারবে। গারো ভাষায় এরূপ অর্থদন্ড আদায়কে নক্‌না মারাং বলা হয়।
. আগেকার দিনে ব্যভিচারিনী স্ত্রীর ¯^vg তার স্ত্রীকে এবং স্ত্রীর প্রেমিককে যৌনসংসর্গরত অবস্থায় ধরতে পারলে উভয়কে হত্যা করতে পারতো এবং এজন্যে মাহারীদ্বয়ের নিকট তাকে কোনরকম জবাবদিহি দিতে হতোনা কিংবা কোন শাস্তির সন্মুখীন হতে হতোনা। এমনকি যৌনসংসর্গরত অবস্থায় ধরতে না পারলেও উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমাণ থাকলে এবং যৌন মিলনের অব্যবহিত পরে তাদের ধরতে পারলে ব্যভিচারিনী স্ত্রীর ¯^vg তার ব্যভিচারিনী স্ত্রী এবং তার প্রেমিককে হত্যা করতে পারতো।
. ব্যভিচারের উদ্দেশ্যে কোন গৃহে অনুপ্রবেশকারীকে সেই গৃহের মালিক হত্যা করতে পারে। গারো ভাষায় একে নক্‌চা মাল্‌আ বলা হয়।
০৭আল্‌ সাল্‌আ (বিপথ গমনে প্রলুব্ধ করা)
      এই ধারায় কোন অবিবাহিতা যুবতী মেয়ের মা-বাবা কর্তৃক কোন যুবককে তাদের মেয়ের সঙ্গে অবাধ মেলামেশা এবং দৈহিক মিলনের সুযোগ প্রদানপূর্বক বিপথ গমনে প্রলুব্ধ করাকে বুঝাবে। এক্ষেত্রে  সুযোগে উক্ত ছেলে মেয়ের মধ্যে যদি দৈহিক মিলন সংঘটিত হয় এবং পরবর্তীতে ছেলেটি মেয়েটিকে বিয়ে করতে রাজী না হয় এবং যদি প্রমাণ করতে পারে তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিপথ গমনে প্রলুব্ধ করা হয়েছে তবে তার বিরুদ্ধে মেয়েটির মা-বাবা কোন শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবেনা এবং কোনরূপ আর্থিক জরিমানাও দাবী করতে পারবেনা।   
০৮নাম্‌গিজা খুপাত্তিয়া (কুপরামর্শ প্রদান)
      এই ধারায় কোন অভিযোগকারী যদি কুপরামর্শ প্রদানকারীর দোষ প্রমাণ করতে পারেতবে অভিযুক্ত দোষী ব্যক্তি অভিযোগকারীকে ,০০০.০০(এক হাজারটাকা অর্থদন্ড প্রদানে বাধ্য থাকবে।


No comments: