weevn AvBb ( Marriage)
গারো বিবাহ সম্পূর্ণ অসবর্ণ বিবাহ এবং আখিম্ প্রথা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। প্রথমোক্ত বিধি অনুযায়ী কেউ তাঁর নিজ মাহারীতে (উপগোত্র) বিয়ে করতে পারে না। যেমন-কোন চিসিম ছেলে কোন চিসিম মেয়েকে বিয়ে করতে পারে না। কোন মানখিন মেয়ে কোন মানখিন ছেলেকে বিয়ে করতে পারেনা। কেউ যদি এর কোন ব্যতিক্রম করে অর্থাৎ নিজ মাহারীর মধ্যে বিয়ে করে তবে উহা অবৈধ সম্পর্কের মধ্যে যৌনসংসর্গের পর্যায়ে পড়বে। কারণ গারো সংস্কার অনুযায়ী একই মাহারীর সদস্যরা আত্মীয়-অনাত্মীয় যাই হোক না কেন পরস্পর পরস্পরকে ভাইবোন হিসেবে গণ্য করে। ফলে একই মাহারীতে বিবাহ তাদের কাছে অজাচারতুল্য। দ্বিতীয়ত: খিম্ বা আখিম্ প্রথানুসারে কোন মেয়ে অথবা ছেলে একবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে কিংবা বিবাহ বন্ধনের চুক্তিতে আবদ্ধ হলে সে আর ¯^vaxbfv‡e জীবনযাপন করতে পারে না এবং নিজের ইচ্ছানুযায়ী অন্য কারোও সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে না। এই বিধি-নিষেধ বিয়ের চুক্তিবদ্ধ পাত্র-পাত্রী কিংবা বিবাহিত ¯^vgx-¯¿xi কোন পক্ষ মারা গিয়ে থাকলে অথবা বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলেও প্রযোজ্য। এক্ষেত্রে প্রথম স্ত্রী অথবা ¯^vgxi মাহারী হতে অন্য মেয়ে অথবা ছেলেকে প্রদান করা হবে এবং দ্বিতীয় পক্ষের উহা গ্রহণ করা কর্তব্য। প্রকৃতপক্ষে মাহারীই এসব আইনের নিয়ামক এবং নিয়ন্ত্রক। নক্না অর্থাৎ উত্তরাধিকারিনী নির্বাচন, দত্তক মেয়ে (দেরাগাত্তা) গ্রহণে সাহায্য, নক্রম নির্বাচন করা প্রভৃতি যাবতীয় বিবাহ সংক্রান্ত ক্ষমতা প্রকৃতপক্ষে মাহারীর উপরেই ন্যস্ত থাকে।
মাহারীর (উপগোত্র) দায়িত্বঃ
মাহারী বলতে যদিও একই উপগোত্রভূক্ত জ্ঞাতি-গোষ্ঠীকে বুঝায় তথাপি সবাইকে যে জ্ঞাতিগোষ্ঠীর তদারকি করতে হবে এমনটি নয়। বস্তুত: প্রতিটি মাহারীর মধ্যে দু’টি ছোট দল থাকে, যারা সব সময় বিপদাপদের দিনে মাহারীর যেকোন সদস্যের সমস্যাকালে সংকট মোচন, সমস্যা সমাধানে মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। এই দল দু’ট যথাক্রমে-
২৪. চ্রা-পান্থেঃ
পরিবারের মেয়ে সন্তানদের বড় ও ছোট ভাই এবং সব ক’টি মামার mgš^‡q এই চ্রা পান্থে দল গঠিত। ধর্মীয়, সামাজিক এবং প্রথাগত আইন সংক্রান্ত যেকোন সমস্যায় পরিবারের মেয়েদের c¶vej¤^b করা এবং তাদের ¯^v_©i¶v করা এই দলের দায়িত্ব।
২৫. ফা-গাচিঃ
পরিবারের ছেলে সন্তানদের বড় বোন এবং ছোট বোন ও তাদের ¯^vgxiv, মাসীমারা ও মেসোমশাইরা এই দলের অন্তর্ভূক্ত। যেকোন বিপদাপদ অথবা সমস্যাকালে পরিবারের প্রতিটি ছেলে সন্তানের পাশে এরা দাঁড়াবে এবং সমস্যা মোকাবেলা করবে।
২৬. বান্দাবোস কাআনি (বিবাহের প্রস্তুতিপর্ব)ঃ
গারো সমাজে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী মেয়েরাই প্রথমে বিবাহের প্রস্তাব জানায়। ছেলে কোন সময় নিজে প্রথমে বিয়ের প্রস্তাব জানাতে পারে না। যদি কোন ছেলে গোপনেও কোন মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব জানায় তবে সেই মেয়ে তাকে উপহাসবিদ্ধ করতে পারে এমনকি মেয়েটি সর্বসাধারণে ব্যাপারটি প্রকাশ করে ছেলেটির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে পারে এবং মানহানী বাবদ ১,০০০.০০ (এক হাজার) টাকা জরিমানা দাবী করতে পারে।
২৬.১ বিয়ে ব্যাপারে মেয়ে নিজেও সরাসরি প্রস্তাব পাঠায় না, বরং তার বাবা অথবা মামা কিংবা মাহারীর নেতৃস্থানীয় কারো মাধ্যমে প্রস্তাবটি পাঠানো হয়। বিয়ের ব্যাপারে মাহারীর লোকজনের প্রভাব এবং দায়িত্ব অপরিসীম। মাহারীর দায়িত্বশীল লোকজনের সম্মতি ছাড়া কোন বিয়ে সম্পন্ন হতে পারে না বরং এরকম কোন ঘটনা ঘটলে AvZ¥xq¯^Rb এবং মাহারীর লোকেরা উক্ত বিয়ের চুক্তি ভেঙ্গে দিতে পারে। এ নিয়ম সরকার কর্তৃক ¯^xK…Z এবং AvZ¥xq¯^Rb অথবা মাহারীর দায়িত্বশীল লোকজনের অসম্মতিতে অসামাজিক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে আইন-আদালতেও উক্ত বিবাহ অগ্রাহ্য হবে।
২৬.২ বিয়ের ব্যাপারে ছেলেমেয়ে যদিও ¯^vaxb মতামত ব্যক্ত করতে পারে বিশেষ করে আগাত্তে মেয়েরা যদিও নিজ নিজ পছন্দানুযায়ী বর নির্বাচন করতে পারে তথাপি তাদের চ্রাদের কেউ যদি সেটি অপছন্দ করে তবে তারা সেই বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করতে পারে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মেয়ের বড় মামার নেতৃত্বে সমস্ত চ্রা পান্থে একত্রে আলোচনায় বসবে এবং তারাই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। তাদের গৃহিত সিদ্ধান্তকেই উক্ত মেয়ের মেনে নিতে হবে।
২৬.৩ বিয়ের প্রস্তাব চূড়ান্ত হবার পর বিয়েতে দেরী করা রীতি বিরুদ্ধ। ইতোমধ্যে বাক্দত্তা ছেলেমেয়ের মধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ এবং মেলামেশাও নিষিদ্ধ। বাগ্দানের পরে এক সপ্তাহ হতে এক মাস পর্যন্ত বিবাহ wejw¤^Z
করা যেতে পারে, যাতে ছেলেমেয়ে উভয় পক্ষের AvZ¥xq¯^Rb ও বন্ধু-বান্ধবকে নিমন্ত্রণ দেয়া যায় এবং বাজারে বিয়ের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রাদি কেনা যায়।
২৬.৪ যদি কোন অনিবার্য কারণে উভয় পক্ষের পারস্পরিক সম্মতিক্রমে বাগদান চুক্তি বাতিল হয় তবে কোন পক্ষকেই জরিমানা দিতে হবে না। অবশ্য যদি এক পক্ষের ¯^v_©RwbZ কারণে বাগদান বাতিল হয়ে যায় এবং বাতিলের কারণ অস্পষ্ট অথবা অপর্যাপ্ত হয় তবে যে পক্ষ বিবাহ বাতিলে আগ্রহী সেই পক্ষ অন্য পক্ষকে মানহানি বাবদ জরিমানা প্রদানে বাধ্য থাকবে। কিন্তু যেহেতু তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়নি সেহেতু আখিম্ আইনের জরিমানা প্রদান করতে হবে না।
২৬.৫ বাগ্দত্তা ছেলেমেয়ের মধ্যে বিয়ের আগেই যদি যৌন মিলন ঘটে থাকে এবং পরবর্তীতে ছেলে যদি মেয়েটিকে বিবাহে অসম্মতি জ্ঞাপন করে তবে মেয়েটি ছেলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ আনতে পারে এবং মানহানি ও যৌনসংসর্গ বাবদ ২,০০০.০০(দুই হাজার) টাকা জরিমানা দাবী করতে পারে, এমনকি উভয়ের সম্মতিক্রমেই যদিওবা যৌন মিলন ঘটে থাকে। তৃতীয় কোন ব্যক্তি যদি কোন বাগদত্তা মেয়ের সঙ্গে অবৈধ যৌনসংসর্গে লিপ্ত হয় তবে সেই দোষী ব্যক্তি বাগদত্তা ছেলে এবং বাগদত্তা মেয়ে উভয়ের প্রতিজনকে ১,৫০০.০০(এক হাজার পাঁচশত) টাকা করে মোট ৩,০০০.০০ (তিন হাজার) টাকা জরিমানা প্রদানে বাধ্য থাকবে। এক্ষেত্রে বাগদত্তা ছেলে পক্ষ যদি ইচ্ছে করে তবে বাগদান বাতিল করে দিতে পারে। অন্যদিকে বাগদত্তা ছেলে যদি বাগদান পরবর্তী সময়ে অন্য কোন মেয়ের সঙ্গে অবৈধ যৌনসংসর্গে লিপ্ত হয় তবে সে ব্যভিচারের দায়ে তার বাগদত্তা বধূকে ১,৫০০.০০(এক হাজার পাঁচশত) টাকা জরিমানা প্রদানে বাধ্য থাকবে। উপরন্তু বাগদত্তা মেয়েটি ইচ্ছা করলে সেই বিবাহ চুক্তি বাতিল করে দিতে পারে।
weev‡ni cÖPwjZ cÖ_vmg~n
গারো সমাজে বিয়ের বয়স নিয়ন্ত্রণহেতু কোন বাধাধরা আইন নেই। যদিও কোন কোন সময় দশ-এগারো বছর বয়েসী মেয়েদেরকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে দেখা যায় তথাপি গারো সমাজে শিশু বিবাহ দেখা যায় না। বিয়ের আইনগত প্রচলিত প্রথা ছাড়াও গারো সমাজে এমন কতগুলো বিয়ের প্রথা প্রচলিত রয়েছে যেগুলো আদৌ আইনসিদ্ধ অথবা সরকার কর্তৃক অনুমোদিত নহে। তবে সেগুলো পরবর্তীকালে আইনসিদ্ধ করে নেয়া যায় এবং সাধারণভাবে সামাজিক ¯^xK…wZ লাভ করে।
২৭. দোসিআ/দোদক্কা/দোবুক নিআ (মোরগ হত্যা)ঃ
গারো সমাজে বিবাহের এই প্রথাই আইনসিদ্ধ এবং me©Rb¯^xK…Z বিবাহপ্রথা। বিবাহের এই পদ্ধতি অনুযায়ী বিবাহের অনুষ্ঠান চলাকালে ছেলেমেয়ে উভয়ের মতামত জানতে চাওয়া হয়। ঐ সময় ছেলে যদি কোন মতামত প্রকাশ না করে চুপচাপ অনুষ্ঠানে যোগদান করে এবং ভোজেও অংশগ্রহণ করে তবে ধরে নিতে হবে যে এ বিয়েতে তার সম্মতি রয়েছে। সুতরাং সে তখন হতেই আখিম্ প্রথায় দায়বদ্ধ হয়ে যাবে এবং বিবাহ বন্ধনে বাধ্য থাকবে। অপরদিকে ছেলেটি মুখে ¯^xKvi করেও যদি বিবাহ অনুষ্ঠানে এবং ভোজ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ না করে পলায়ন করে তবে তার বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ আনা যাবে এবং সংশ্লিষ্ট দোষী ছেলেটি অথবা তা অবর্তমানে তার পক্ষের দায়িত্বশীল ব্যক্তি সমাজের মানহানি বাবদ ২,০০০.০০(দুই হাজার) টাকা অর্থদন্ড প্রদানে বাধ্য থাকবে।
২৮. থুনাপ্ আ (গৃহে প্রবেশ করে ¯^vgx-¯¿xi মতো শয়ন)ঃ
বিয়ের এই পদ্ধতিতে ছেলে রাত্রিতে মেয়ের ঘরে গোপনে প্রবেশ করে মেয়ের সঙ্গে একত্রে শয়ন করে। সাধারণত: মেয়ের মা-বাবার নীরব সম্মতিক্রমে কিন্তু মাহারীর লোকজনের অজ্ঞাতসারে ব্যাপারটি ঘটে থাকে। থুনাপ্আ প্রকাশ হয়ে যাবার পর মাহারীর লোকজন যদি উক্ত থুনাপ্আ নিষিদ্ধ না করে এবং এক মাসের মধ্যে ছেলেটিকে তাড়িয়ে দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তবে উক্ত বিবাহ আর কোন আচার-অনুষ্ঠান ব্যতিরেকেই ¯^vfvweKfv‡e আইনসিদ্ধ এবং সামাজিক ¯^xK…wZ লাভ করবে।
২৯. নক্পান্থে গাআ (অবিবাহিত যুবকদের শয়নগৃহে অভিসার)ঃ
বিয়ের এই পদ্ধতি প্রায় পূর্ববর্ণিত পদ্ধতির মতই। তবে এই পদ্ধতিতে মেয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। মেয়েটি রাতের অন্ধকারে নক্পান্থিতে (যুবাগৃহে) গমন করে এবং সবার অলক্ষ্যে তার প্রেমিককে আহ্বান জানায়। ছেলেটি যদি এই আহ্বানে সাড়া দেয় এবং পরদিন মেয়ের সঙ্গে বসবাসের উদ্দেশ্যে মেয়ের বাপমায়ের বাড়ীতে চলে যায় তবে তাদের উভয়ের মিলন আইনসিদ্ধ হয়ে যাবে এবং তারা উভয়ে বিবাহিত ¯^vgx-¯¿x হিসাবে সামাজিক ¯^xK…wZ লাভ করবে। উক্ত বিয়েতে মেয়েটির বাপ-মা এবং AvZ¥xq¯^R‡bi সম্মতি না থাকলে তারা ছেলেটিকে তাড়িয়ে দিতে পারে, কিন্তু ছেলেটির নিকট হতে কোনরকম জরিমানা তারা দাবী করতে পারবেনা, এমনকি ছেলেমেয়ে উভয়ের মধ্যে যদিওবা যৌনমিলন ঘটে থাকে।
৩০. সেক্আ (বিপথ গমনে প্রলুব্ধ করা এবং হরণ করা)ঃ
এই ধারায় কোন বিবাহিতা মহিলাকে কোন পুরুষ কর্তৃক বিপথ গমনে প্রলুব্ধ করা এবং নিয়ে যাওয়াকে বুঝাবে। এক্ষেত্রে উক্ত দোষী ব্যক্তিদ্বয় গ্রামে বসবাসের সুযোগ পাবেনা, কারণ তাদেরকে আশ্রয় দিয়ে গ্রামের কেউ উক্ত মহিলার ¯^vgx এবং তার AvZ¥xq¯^R‡bi শত্রুতাচরণ করতে চাইবেনা। তবে কিছুদিনের মধ্যে উক্ত দোষী ব্যক্তিদ্বয়কে যদি পরস্পরের নিকট হতে বিচ্ছিন্ন করা না হয় (আগেকার দিনে তাদের উভয়কেই হত্যা করা হতো) তাহলে ¯^vfvweKfv‡eB তারা ¯^vgx-¯¿x হিসেবে পরিগণিত হবে এবং সামাজিক ¯^xK…wZI লাভ করবে। অবশ্য ব্যভিচার এবং আখিম্ আইন লংঘন ও অবমাননা করার অভিযোগে তারা অর্থদন্ডে দন্ডিত হবে।
৩১. সেক্কে কাথ্ আ (পরস্পর সম্মতিক্রমে পলায়ন করা)ঃ
এই ধারায় অবিবাহিত যুবক-যুবতী পারস্পরিক সম্মতিক্রমে গৃহত্যাগ করে অন্যত্র বসবাস করাকে বুঝাবে। এক্ষেত্রে অভিভাবকদের সম্মতি না থাকলে অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই উক্ত যুবক-যুবতীকে পরস্পরের নিকট হতে বিচ্ছিন্ন করা হবে এবং এক্ষেত্রে যুবকটিকে কোন অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হবেনা।
৩২. কেগিজা খিম্আ (অসবর্ণ বিবাহ)ঃ
গারো সমাজে বিবাহ সম্পূর্ণরূপে অসবর্ণ বিবাহ নিয়ম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। বিশ্বের অন্যান্য সমাজের নিকট বিবাহের এই কঠোর নিয়ম আশ্চর্য্যের মনে হতে পারে কিন্তু গারো বিবাহ সর্বতোভাবে অসবর্ণ বিবাহ প্রথা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। গারো সমাজে এই নিয়মানুযায়ী পরস্পর একই মাহারীভূক্ত (উপগোত্র) ছেলেমেয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারেনা। যেমন-কোন রিছিল ছেলে কোন রিছিল মেয়েকে বিয়ে করতে পারেনা, কোন মানখিন মেয়ে কোন মানখিন ছেলেকে বিয়ে করতে পারেনা, তাদের মধ্যে রক্ত সম্পর্কিত আত্মীয়তার বন্ধন থাকুক বা নাই থাকুক। যদি কেউ এর ব্যতিক্রম করে তবে সমাজ তাদেরকে পরিত্যাগ করবে এবং বাধ্য হয়ে তাদেরকে একঘরে অবস্থায় বসবাস করতে হবে। এভাবে তারা পারিবারিক সম্পত্তির উত্তরাধিকারীত্বও হারাবে। অবশ্য তাদের পরিবর্তে তাদের ছেলেমেয়ের উপর সম্পত্তির উত্তরাধিকারীত্ব বর্তাবে। আগেদার দিনে এরকম দোষী ব্যক্তিদ্বয়কে তাদের AvZ¥xq¯^R‡biv হত্যা করে ফেলতেও দ্বিধাবোধ করতোনা।
৩৩. নক্রম (পরিবারের উত্তরাধিকারিনীর ¯^vgx)
পরিবারের মেয়ে যদি সম্পত্তির ভাবী উত্তরাধিকারিনী অর্থাৎ নক্না হয়ে থাকে তবে তার ¯^vgx নক্রম অর্থাৎ ঘরজামাইয়ের অধিকার দাবী করতে পারবে। অন্যথায় কেবলমাত্র সাধারণ জামাই হিসেবে গণ্য হবে এবং সেমতই সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবে। বিয়ের পর হতে নক্রম যথাসময়ে শ্বশুরের অধিকার এবং মর্যাদায় সমাসীন না হওয়া পর্যন্ত শ্বশুর বাড়ীতেই স্থায়ীভাবে বসবাস করবে। নক্রম নির্বাচন আসলে অনেক আগে থেকেই হয়ে থাকে, বলতে গেলে বাল্যাবস্থাতেই। এক্ষেত্রে ছেলেমেয়ে উভয়পক্ষের অভিভাবকগণ একত্রে বসে আলোচনাক্রমে নক্না এবং নক্রম নির্বাচন করে থাকে। গারোরা ঐ আলোচনাকে সান্দিয়ানী বলে থাকে। ঐ আলোচনা বা অনুষ্ঠানের সময় নির্বাচিত নক্না এবং নক্রমকে পরস্পরের মুখদর্শন করানো হয়। একে গারো ভাষায় মেসকানী বলে। অবশ্য পরিণত বয়সে নির্বাচিত নক্না নক্রম পরস্পর সম্মতি কিংবা অসম্মতি প্রকাশ করতে পারে। তবে অসম্মতি প্রকাশ করলে পর্যাপ্ত কারণ দেখাতে হবে।
৩৪. চাওয়ারী (পরিবারের উত্তরাধিকারিনী মেয়ে ব্যতিত অন্যান্য মেয়েদের ¯^vgx)
পরিবারের জামাতা যদি চাওয়ারী অর্থাৎ সাধারণ ঘরজামাই হয়ে থাকে তবে সে বিয়ের পরে শ্বশুর বাড়ী হতে কিছুদূরে অন্যত্র বসবাস শুরু করবে। যদি কোন কারণে উক্ত দম্পত্তি অন্যান্য AvZ¥xq¯^R‡bi সঙ্গে সাময়িক বসবাস করে তবে তারা অবশ্যই পৃথাগান্নে বসবাস করবে এবং যতদূর সম্ভব তাড়াতাড়ি নিজস্ব বসতবাড়ী নির্মাণপূর্বক সেখানে বসবাস শুরু করবে। ¯^vgxi আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে বসবাস করতে গেলেও এ নিয়ম সমভাবে প্রযোজ্য।
৩৫. আখিম্ খাংআঃ
অন্য কোন ভাষায় এ আইনের নির্ভুল সংজ্ঞা অথবা ব্যাখ্যা দেয়া যায় না। এই আইনানুযায়ী কোন বিধবা অথবা বিপত্মীক তার ¯^vgx কিংবা স্ত্রীর মৃত্যুর পরে সংশ্লিষ্ট মাহারী হতেই পরবর্তী ¯^vgx অথবা স্ত্রী গ্রহণে বাধ্য থাকবে। উপরন্তু এই প্রথায় বিধবা অথবা বিপত্মীক এদের কেউ ¯^vaxbfv‡e নিজের পছন্দমতো অন্য কোন মাহারীর সদস্য অথবা সদস্যাকে বিয়ে করতে পারেনা বা একত্রে বসবাস করতে পারবেনা। কেবলমাত্র কোন বিশেষ ক্ষেত্রে মাহারী যখন পুনবিবাহের জন্য কাউকে প্রদান করতে পারেনা তখনই মাহারী বিধবা অথবা বিপত্মীক ব্যক্তিটিকে আখিম্ আইনের দায়মুক্ত করে দেবে। এক্ষেত্রে আখিম্ দায় হতে মুক্ত ব্যক্তিটি সামাজিক প্রথানুযায়ী দেব্রানী বাবদ ৫০০.০০(পাঁচশত) টাকা সংশ্লিষ্ট মাহারীকে প্রদান করবে।
মেজর প্লেফেয়ার, যিনি বহু বছর গারো পাহাড় জেলার ডেপুটি কমিশনার ছিলেন, তিনি তাঁর দি গারোস নামক বইয়ে এক জায়গায় লিখেছেন, ‘‘সমপ্রতি আখিম্ আইন বা প্রথা সরকারীভাবে ¯^xK…Z নয়, যদিও জনসাধারণ উক্ত প্রথাটি নিষ্ঠার সঙ্গে মেনে চলেন।” এ থেকে বুঝা যায়, আখিম্ প্রথা এককালে সরকার কর্তৃক ¯^xK…Z ছিল বা পরবর্তীতে অবহেলিত হয়ে গেছিল। কিন্তু বর্তমান নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, আখিম্ প্রথা সামাজিকভাবে ¯^xK…Z এবং জনসাধারণ সর্বতোভাবে উহা মেনে চলে, বরং বলা চলে এই প্রথা গারোদের মুল সমাজ কাঠামোকে রক্ষা করে চলেছে।
৩৬. গ্রো চত্আনি (দায় পরিশোধ)ঃ
¯^vgxi মৃত্যুর পর বিধবা স্ত্রীর বয়স এবং সামাজিক মর্যাদা যাই থাকুক না কেন, সে তার মৃত ¯^vgxi মাহারী হতে তার জন্য দ্বিতীয় ¯^vgxi সরবরাহের দাবী করতে পারে। এক্ষেত্রে মৃত ¯^vgxi মাহারী বিধবাটির জন্য দ্বিতীয় ¯^vgxi প্রদানে Z¡ivwš^Z হবে। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত বিধবাটি অথবা তার মাহারী মৃত ¯^vgxi মাকে কিংবা তার অবর্তমানে তার মাহারীর মধ্যে মাতৃস্থানীয়া অন্য কাউকে প্রথম ¯^vgxi মৃত্যু বাবদ সমস্ত দায়-দেনা পরিশোধ না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত মৃত ব্যক্তির মাহারী বিধবাটিকে দ্বিতীয় ¯^vgxi প্রদানের কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেনা। উক্ত দায়দেনা নিম্নবর্ণিত অবস্থাবর দ্রব্যাদির সমমূল্যের হবে এবং যে আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে বিধবাটি তার মৃত ¯^vgxi মাতৃপরিবারে এই আবেদন পেশ করে সেটিকে রান্ডি মিক্চী গাল্লা(বিধবার অশ্রুমোচন) বলা হয়। ঐ আনুষ্ঠানিকতায় নিম্নবর্ণিত দ্রব্যাদি কিংবা উহার সমতুল্য প্রদান করা হয়।
৩৬.১ দেব্রানিঃ
একখন্ড কাপড় কিংবা কাপড়েরর মূল্য, যে কাপড় দিয়ে গারো মহিলারা পিঠে শিশু বেঁধে রাখে।
৩৬.২ চ্রিনিঃ
ক্ষুদ্রাকৃতি একটি ধনু অথবা উহার সমতুল্য যে ধনুর সাহায্যে গারো ছেলেরা শিকারের খেলা করে থাকে।
৩৬.৩ খিম্ গিসিনীঃ
ছেলের বিয়ের সময় পিতামাতা যেসব জিনিসপত্রাদি দিয়েছিল সেগুলোর সমতুল্য। অবশ্য উহার পরিমাণ অনুর্ধ্ব ৩,০০০.০০(তিন হাজার) টাকা হবে।
৩৬.৪ আসি পিন্আনি ঃ
যে কাপড়ের সাহায্যে মৃত ব্যক্তির মা অথবা তার অবর্তমানে মাহারীর অন্য কোন মাতৃস্থানীয়া মহিলা মৃতদেহটি ঢেকে দিয়েছে, সেই কাপড়ের মূল্য।
৩৬.৫ মাৎচু দেনআনীঃ
একটি গরুর মূল্য, যে গরুটি মৃতব্যক্তির পিতামাতা তাদের ছেলের মৃত্যুদিনে এনেছে এবং শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে হত্যা করেছে। বিধবাটির চ্রা-পান্থেরা এই উপলক্ষ্যে বিধবাটিকে যথাসাধ্য সাহায্য করবে। এই সাহায্য প্রদানকে গারো ভাষায় ননা সে ব্রিআ অর্থাৎ ছোটবোনের জন্য ¯^vgx ক্রয় বলে।
৩৭. জিক্ বাংএ খিম্আনী (বহু বিবাহ)ঃ
গারো সমাজে পুরুষের একাধিক বিবাহের প্রচলন রয়েছে তবে উহা কদাচিৎ হয়ে থাকে। একটি পুরুষ একাদিক্রমে দু'বোনকে বিয়ে করতে পারে, কিন্তু তাকে অবশ্যই প্রথমে বড়বোনকে বিয়ে করতে হবে। পরবর্তীতে মাহারী যদি কোন কারণবশত: তার স্ত্রীর ছোটবোনকে চিক্গিত্তে (সহযোগি স্ত্রী) হিসাবে প্রদান করে তবে সে উহা গ্রহণ করতে পারে। অপরদিকে কোন কারণে কোন মধ্য বয়েসী বিধবা মহিলার জন্য কোন তরুণ বা যুবা বয়েসী ব্যক্তিকে যখন ¯^vgx হিসাবে প্রদান করা হয় তখন সংশ্লিষ্ট মাহারী বিশেষ বিবেচনায় যুবকটির সহযোগি স্ত্রী হিসাবে ঐ বিধবার পূর্ব ¯^vgx ঔরষজাত কোন কন্যা সন্তানকে কিংবা উহার অভাবে আত্মীয়দের মধ্য হতে অন্য কোন মেয়েকে প্রদান করতে পারে। অবশ্য খ্রীষ্টধর্মে বিশ্বাসী গারোদের মধ্যে বহু বিবাহের প্রচলন বর্তমানে নেই।
৩৮. জিক্ সে গাল্আনী (বিবাহ বিচ্ছেদ)ঃ
গারো সমাজে বিবাহ বিচ্ছেদের প্রচলন রয়েছে। সাধারণত: ¯^vgx-¯¿x উভয় পক্ষের লোকজন পারস্পরিক সম্মতিক্রমেই বিবাহ বিচ্ছেদের ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে বিবাহিত ¯^vgx-¯¿x একজন বিশেষ করে ¯^vgxB স্ত্রীকে পরিত্যাগ করে পলায়ন করে এবং দূরের কোন গ্রামে গিয়ে অন্য স্ত্রী গ্রহণ করে ঘর-সংসার করে থাকে। এক্ষেত্রে পলাতক ¯^vgx সব সময় আখিম্ আইনের আওতায় থাকবে এবং আখিম্ আইন ভঙ্গজনিত কারণে তার পরিত্যক্ত স্ত্রী এবং তার মাহারীকে ৫,০০০.০০(পাঁচ হাজার) টাকা অর্থদন্ড প্রদানে বাধ্য থাকবে। মাতৃপ্রধান সমাজ হিসাবে পরিবারের স্ত্রীর কর্তৃত্ব এবং কারণে অকারণে স্ত্রীর মাহারী কর্তৃক পারিবারিক বিষয়সমূহে হস্তক্ষেপ জনিত কারণে বস্তুত: ¯^vgx পরিবারে কোণঠাঁসা হয়ে থাকে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে ¯^vgx স্ত্রীকে ভুল বুঝাবুঝির কারণ ঘটায়, যার পরিণতিতে ¯^vgx স্ত্রীকে বিচ্ছেদের সৃষ্টি হতে পারে।
No comments:
Post a Comment